দোকান থেকে কেনা মরিচ আসল না কি নকল? ছবি: সংগৃহীত।
সর্ষের তেল থেকে দুধ, পনির থেকে আপেল— সাম্প্রতিক কালে এমনই নানা ধরনের আনাজ ও খাবার ভেজালের ব্যবসার কবলে পড়ছে। সেই তালিকায় নয়া সংযোজন গোলমরিচও। সস্তা উপাদান দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে প্রয়োজনীয় এই মশলা। তাতে স্বাস্থ্যহানির ঝুঁকির পাশাপাশি স্বাদ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। তাই দোকান থেকে মশলা কেনার সময়েই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
গোলমরিচ দামি মশলা। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এতে শুকনো পেঁপের বীজ, খোসা বা অন্য কালচে দানা মিশিয়ে দেন। অনেক সময় চকচকে দেখাতে মিনারেল অয়েলও লাগানো হয়। দেখতে সুন্দর হলেও, এই প্রলেপ শরীরের জন্য ক্ষতিকারক।
কী ভাবে বুঝবেন, খাঁটি গোলমরিচ কিনেছেন কি না?
পাঁচটি উপায়ে গোলমরিচে ভেজাল শনাক্ত করতে পারেন বাড়িতেই। জল, গন্ধ, টেক্সচার বা গঠন, রং— এমনই কিছু পদ্ধতির ব্যবহার করে চেনা যায় খাঁটি মরিচ।
খাঁটি গোলমরিচ চিনবেন কী ভাবে? ছবি: সংগৃহীত।
জলের পরীক্ষা: এক গ্লাস জলে এক চামচ গোলমরিচ ফেলে দিয়ে অপেক্ষা করুন। যদি দেখেন, জলের উপরের দিকে উঠে ভাসতে শুরু করেছে, তা হলে বুঝবেন, সেটি ভেজাল। পেঁপের বীজের মতো হালকা উপাদান দিয়ে তৈরি করা বলেই এত হালকা। আসল মরিচ জলের তলায় থিতিয়ে পড়বে। তবে অনেক সময়ে খাঁটি মরিচও জলের উপরে ভাসতে পারে হাওয়ার কারণে। এই পরীক্ষা আপনার প্রথম পদক্ষেপ হবে, কিন্তু পরবর্তী পরীক্ষাগুলি চূড়ান্ত রায় তৈরির জন্য দরকারি।
গন্ধ পরীক্ষা: কয়েকটি মরিচ ভেঙে নিন হাতে। শুঁকে দেখুন ঝাঁজ পাচ্ছেন কি না। যদি দেখেন, তেমন কোনও গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে না, বা ঝাঁজহীন কৃত্রিম গন্ধ রয়েছে, তা হলে বুঝবেন, সেগুলি খাঁটি নয়। আসল মরিচে ঝাঁজ, তীব্র গন্ধ পাওয়া যাবে।
টেক্সচার পরীক্ষা: আসল গোলমরিচ শক্ত ও ভারী হয়, গুঁড়ো করতে বেগ পেতে হবে। কিন্তু গুঁড়ো করার পর মিহি পাউডারের রূপ পাবে। অন্য দিকে নকল দানা নরম হবে এবং সহজেই ভেঙে যাবে। গুঁড়ো করলে দানা ভাব থাকবে, মিহি নয়।
রং পরীক্ষা: দু’টি দানা দু’হাতের তালুতে রেখে ঘষে নিন। যদি রং বেরিয়ে এসে হাতে লাগে, তবে নিশ্চয়ই তাতে তেল পালিশ করা হয়েছে। খাঁটি হলে এই ঘটনা ঘটবে না, উপরন্তু মরিচ অত রংচঙেও দেখতে হবে না।
পুড়িয়ে পরীক্ষা: উপরের সমস্ত পরীক্ষার পরেও যদি সন্দেহ থেকে যায়, তা হলে পোড়ানোর পদ্ধতি প্রয়োগ করে দেখতে পারেন। একটি ধাতব চামচের উপর মরিচের কয়েকটি দানা রেখে তা আগুনের অল্প আঁচের উপর ধরে থাকুন। আসল মরিচ থেকে সুন্দর ঝাঁঝালো গন্ধ বেরোবে। আর নকল মরিচ থেকে কৃত্রিম গন্ধ পাওয়া যাবে। তবে এই পদ্ধতিটি বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করে প্রয়োগ করতে হবে।