নীনা গুপ্ত। ছবি : সংগৃহীত।
অন্তরঙ্গতা বা শারীরিক ঘনিষ্ঠতা নিয়ে সমাজে কিছু কিছু পূর্বনির্দিষ্ট ধারণা রয়েছে। তার মধ্যে একটি এ-ও যে, যৌনতা প্রধানত কমবয়সিদেরই আগ্রহের বিষয়। বয়স বাড়লে স্বাভাবিক নিয়মেই কামনা কমতে থাকে! আর যাঁরা সেই চেনা সংজ্ঞার বাইরে পা ফেলেন এবং তা নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলেন, তাঁদের সমাজের অনেকেই বাঁকা চোখে দেখেন। অভিনেত্রী নীনা গুপ্ত সম্প্রতি সমাজের সেই ভাবনা নিয়েই সরাসরি কথা বলেছেন। তাঁর মতে, সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির কারণে বয়স্ক বা বয়স্কারা হয়তো তাঁদের শারীরিক অন্তরঙ্গতার ইচ্ছে বা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলেন না। কিন্তু তার মানে এই নয়, যে তাঁরা এ নিয়ে ভাবেন না। নীনা বলছেন, বিগতযৌবনারাও সঙ্গীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ হতে চান। আর এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
কঙ্কনা সেনশর্মা পরিচালিত ‘মেট্রো...ইন দিনো’ ছবিতে বয়স্ক দম্পতির চরিত্রে অভিনয় করেছেন নীনা এবং অনুপম খের। সেই ছবির প্রচারেই বয়স্ক ভারতীয় মহিলাদের ইচ্ছে এবং তা দমিয়ে রাখার বাধ্যবাধকতা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেছেন নীনা। তিনি বলছেন, ‘‘আসলে ভারতীয় নারীরা বয়সের সঙ্গে সঙ্গে নানা ভূমিকা এবং দায়িত্বে জড়িয়ে পড়তে থাকেন। আর সেই প্রক্রিয়ায় নিজেদের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে গলা টিপে মারতে থাকেন। আজও ভারতের মফস্সল বা গ্রামের বহু মহিলা ৪০ বছরের পরেই নিজেদের বয়স্কা বলে ভাবতে শুরু করেন এবং নিজেরাই নিজেদের কামনাকে বিসর্জন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে শুরু করেন। পুরুষেরা যা-ও বা নিজেদের বেশি বয়সের যৌনতাকে গুরুত্ব দেন, মহিলারা তা একেবারেই দেন না। এর জন্য আমাদের সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিই দায়ী।’’
নীনা সমাজের সেই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলছেন, ‘‘এমনটা ভাববেন না যে ৬০, ৭০ বা ৮০ বছরের এক নারী বা পুরুষের যৌনতার আকাঙ্ক্ষা থাকে না। ওই বয়সেও কামনা-বাসনা থাকে। আমি তো বহু মহিলাকে দেখি ৬০ বছর বয়সেও জিমে যাচ্ছেন, ফিগার ঠিক রাখছেন। তাঁদের দেখতে ভালও লাগছে। তাঁদের কি অন্তরঙ্গতার ইচ্ছে হয় না? হয়। আর সেই ইচ্ছেই তাঁদের চেহারায় ভাল থাকার ঔজ্জ্বল্য নিয়ে আসে। এই ইচ্ছেই আসলে আমাদের বাঁচিয়ে রাখে।’’