Puja Special 2025

স্বপ্নাদেশে পুজোর সূত্রপাত, প্রতিমা ও চালচিত্রে চমক, মল্লিক বাড়ির দুর্গাপুজোর আখ্যান আকর্ষণীয়

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০:৫৯
The traditional Mullick bari Durga Puja of Kolkata is known for its many special aspects

মালাপাড়া মল্লিক বাড়ির প্রতিমা। ছবি: সংগৃহীত।

উত্তর কলকাতায় দর্পণারায়ণ ঠাকুর স্ট্রিটে বর্ধিষ্ণু পরিবারের বসবাস। সময়টা ১৭৮৬ সাল। মল্লিকবাড়িতে বৈষ্ণবদাস মল্লিক দেবী দুর্গার স্বপ্নাদেশ পেলেন। সেইমতো সিদ্ধান্ত নিলেন, সপরিবার তিনি মায়ের পুজো শুরু করবেন। কয়েক বছরের মধ্যেই পার্শ্ববর্তী এলাকায় এই পুজো মালাপাড়ার মল্লিকবাড়ির পুজো হিসাবে জনপ্রিয়তা লাভ করে। বর্তমানে পরিবারের পাঁচটি শরিকি বাড়ির সদস্যেরা একযোগে পুজোয় অংশ নেন।

Advertisement

দুশো বছর অতিক্রান্ত পারিবারিক এই পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য দেবীমূর্তি। শুরু করা যাক সাবেকি চালচিত্র দিয়ে। চালচিত্রের মাঝে আঁকা থাকে মহিষাসুরমর্দিনী। দু’পাশে চামর হাতে দুই সেবক। দুই প্রান্তের ছোট ছোট খোপের এক দিকে থাকেন দশমহাবিদ্যা ও অষ্টশক্তি আর অপর দিকে দশ অবতার এবং নবগ্রহ। আর মাঝেমাঝে থাকে বিষ্ণুপুরাণ ও রামায়ণ-এর উল্লেখযোগ্য অংশ।

The traditional Mullick bari Durga Puja of Kolkata is known for its many special aspects

মালাপাড়া মল্লিকবাড়িতে অষ্টমীর দিন ধুনোপোড়া অনুষ্ঠান। ছবি: সংগৃহীত।

মল্লিকবাড়ির মা দুর্গার সঙ্গে আসেন মহাদেব। শিবের কোলেই মায়ের অবস্থান। দেবী ত্রিনয়নী নন। শিবের তুলনায় দুর্গামূর্তির উচ্চতা কিছুটা ছোট। মূল প্রতিমার দু’পাশে দুর্গার দুই সখী জয়া ও বিজয়ার অবস্থান। একচালার ঠাকুরে মহিষাসুর অনুপস্থিত। মায়ের পায়ের কাছে ছোট আকারের সিংহ থাকে। শিব-দুর্গার দু’পাশে থাকেন লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ এবং কার্তিক। নেপথ্য কারণ প্রসঙ্গে পরিবারের সদস্য স্নেহাশিস মল্লিক বললেন, ‘‘শুরু থেকেই আমাদের পরিবারে মাকে সপরিবার পুজো করার রীতি চলে আসছে। বাড়ির মেয়ে সঙ্গে সকলকে নিয়ে বাপের বাড়িতে আসছেন, এই ভাবনা থেকেই এই মূর্তি।’’

মল্লিকবাড়িতে পুজো শুরু হয় প্রতিপদে এবং মহালয়ার আগের নবমীর দিন (কৃষ্ণনবমী) থেকেই ঘট স্থাপন করা হয়। বৈষ্ণব মতে পুজো হওয়ার কারণে দেবীকে অন্নভোগ নিবেদন করা হয় না। চাল, চিনি, লুচি, তরকারি, পাঁচ রকম ভাজা, মিষ্টি ইত্যাদি ভোগ হিসাবে নিবেদন করা হয়।

অষ্টমীর দিন দেবীমূর্তির সামনে বাড়ির ভিতকে সাক্ষী রেখে ধুনোপোড়ায় অংশ নেন পরিবারের মহিলারা। দশমীর দিন এখনও বেহারাদের কাঁধে চাপিয়ে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়।

Advertisement
আরও পড়ুন