Shakereh Khaleeli Murder Case

৬০০ কোটির মালকিন, ডাকসাইটে সুন্দরী! আইএফএস স্বামীকে ছেড়ে বিয়ে স্বঘোষিত গুরুকে, ভয়ঙ্কর পরিণতি হয় শাকিরার

১৯৯৪ সালে বেঙ্গালুরু শহরে (তৎকালীন ব্যাঙ্গালোর) শাকিরার বাড়ির উঠোন খুঁড়ে উদ্ধার করা হয়েছিল তাঁরই দেহাবশেষ। একটি কাঠের বাক্সে ভরে জ্যান্ত পুঁতে ফেলা হয়েছিল তাঁকে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৫ ১০:০৪
০১ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

ডাকসাইটে সুন্দরী হিসাবে নাম ছিল। পরিচিতি ছিল কর্নাটকের অন্যতম বিত্তশালী পরিবারের কন্যা হিসাবেও। কিন্তু বিশাল সম্পত্তির মালকিন সেই শাকিরা খলিলি ১৯৯১ সালে হঠাৎ করেই নিখোঁজ হয়ে যান।

০২ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

শাকিরা এমন ভাবেই নিখোঁজ হয়েছিলেন যে অনেকেরই মনে হয়েছিল যে হাওয়ায় স্রেফ উবে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু পুলিশ তদন্ত নামার পরে প্রকাশ্যে আসে ভয়ঙ্কর সত্য। নিখোঁজ হওয়ার তিন বছর হয় পর্দা উন্মোচন হয় শাকিরা অন্তর্ধান রহস্যের।

০৩ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

১৯৯৪ সালে বেঙ্গালুরু শহরে (তৎকালীন ব্যাঙ্গালোর) শাকিরারই বিলাসবহুল বাড়ির উঠোন খুঁড়ে তাঁর দেহাবশেষ উদ্ধার হয়েছিল। ময়নাতদন্তে উঠে আসে, একটি কাঠের বাক্সে ভরে জ্যান্ত পুঁতে দেওয়া হয়েছিল শাকিরাকে। কিন্তু কেন এমন নিষ্ঠুর পরিণতি হয়েছিল শাকিরার? তাঁকে খুনের নেপথ্যে কার হাত ছিল?

Advertisement
০৪ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

মাইসুরু (তৎকালীন মহীশূর)-র দেওয়ানের নাতনি ছিলেন শাকিরা নমাজ়ি খলিলি। তাঁর বিয়ে হয়েছিল আইএফএস (ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিস) অফিসার আকবর মির্জ়া খলিলির সঙ্গে। বিয়ের পর বিপুল সম্পত্তি এবং বেঙ্গালুরুর রিচমন্ড রোডের প্রাসাদোপম বাড়ি উপহার হিসাবে শাকিরার হাতে তুলে দিয়েছিলেন তাঁর মা তাজ নমাজ়ি।

০৫ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

আইএফএস অফিসার হিসাবে কাজ করার সুবাদে বেশির ভাগ সময় বিদেশেই কাটাতে হত আকবরকে। অস্ট্রেলিয়া এবং ইরানে ভারতের হাইকমিশনার হিসাবেও কর্মরত ছিলেন তিনি। স্বামীর বদলির চাকরি হওয়ায় প্রথম প্রথম শাকিরাও বিদেশেই থাকতেন। চার কন্যারও জন্ম দেন তিনি। তাঁদের নাম সাবা, ইসমত, হরেনা এবং জিবুন্দা।

Advertisement
০৬ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

১৯৮২ সালে দিল্লিতে এক বন্ধুর বিয়েতে গিয়ে স্বামী শ্রদ্ধানন্দ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয় শাকিরা এবং আকবরের। শ্রদ্ধানন্দের আসল নাম মুরলী মনোহর মিশ্র। বাড়ি মধ্যপ্রদেশের সাগরে। স্বঘোষিত ‘গডম্যান’ ছিলেন শ্রদ্ধানন্দ। শাকিরা যে বন্ধুর বিয়েতে গিয়েছিলেন তিনি শ্রদ্ধানন্দেরও বন্ধু ছিলেন।

০৭ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

মাইসুরু রাজঘরানার দেওয়ান মির্জ়া ইসমাইলের বাড়িতে পরিচারকের কাজ করতেন শ্রদ্ধানন্দ। যে বন্ধুর বিয়েতে শাকিরার সঙ্গে আলাপ হয়, পরবর্তী কালে তাঁর যাবতীয় সম্পত্তির দেখাশোনা করতেন শ্রদ্ধানন্দ। এই সময়েই তিনি নিজেকে ‘গুরু’ বলে ঘোষণা করেছিলেন।

Advertisement
০৮ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

প্রথম আলাপেই শাকিরা এবং তাঁর পরিবারের বিশ্বাস অর্জন করে নিয়েছিলেন শ্রদ্ধানন্দ। শাকিরার পরিবার তাঁকে বেঙ্গালুরুর বাড়িতে আমন্ত্রণও জানান। ধীরে ধীরে শাকিরার পরিবারের আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন শ্রদ্ধানন্দ।

০৯ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

একটা সময় শ্রদ্ধানন্দকে সম্পত্তির হিসাব, কর সংক্রান্ত বিষয় দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ে দেন শাকিরা। আর সেখান থেকেই দু’জনের সম্পর্ক আরও গাঢ় হয়।

১০ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

এর পর চাকরিসূত্রে ইরান চলে যান আকবর। স্বামী বিদেশে গেলেও শাকিরা রয়ে গিয়েছিলেন বেঙ্গালুরুতেই। সেই সময়ে শাকিরা এবং শ্রদ্ধানন্দের ঘনিষ্ঠতা চরমে পৌঁছোয়। শ্রদ্ধানন্দের প্রেমেও পড়েন শাকিরা।

১১ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

১৯৮৫ সালে স্বামী ইরান থেকে ফেরার পরই তাঁর সঙ্গে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শাকিরা। তাঁদের বিচ্ছেদও হয় সেই বছরেই। আকবরের সঙ্গে বিচ্ছেদের ছয় মাস পর, ১৯৮৬ সালের এপ্রিলে পরিবার এবং সামাজিক রীতিনীতির তোয়াক্কা না করেই শ্রদ্ধানন্দকে বিয়ে করেন শাকিরা। শ্রদ্ধানন্দকে তাঁর অর্থ এবং সম্পত্তি দেখভালের দায়িত্বও দিয়েছিলেন শাকিরা।

১২ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

শ্রদ্ধানন্দকে বিয়ের বিষয়টি শাকিরার মেয়েরা মেনে নিতে পারেননি। তিন মেয়ে শাকিরার সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করেছিলেন। একমাত্র সাবা শাকিরার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। পরে তিনিও মডেলিংয়ের জন্য মুম্বইয়ে চলে যান।

১৩ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

শাকিরা এবং শ্রদ্ধানন্দের বিয়ের পাঁচ বছর পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল। পাঁচ বছর ধরে শাকিরার মায়ের থেকে পাওয়া ৬০০ কোটির সম্পত্তি দেখাশোনা করেছিলেন শ্রদ্ধানন্দ। স্ত্রীর টাকায় বিলাসবহুল জীবনযাপনও করতেন। কিন্তু ১৯৯১ সালে দু’জনের সম্পর্কে তিক্ততা আসে।

১৪ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

শ্রদ্ধানন্দের নজর ছিল শাকিরার বিপুল সম্পত্তির উপর। দু’জনের সম্পর্ক তিক্ত হওয়ার পর শাকিরাকে খুন করে সেই সম্পত্তি হাতানোর পরিকল্পনা করেন শ্রদ্ধানন্দ। এর মধ্যেই রিচমন্ড রোডের সেই বাড়িতে যান শ্রদ্ধানন্দ। ওই বাড়ির পরিচারকদের একটি বড় কাঠের বাক্স বানানোর নির্দেশ দেন তিনি। পরিচারকদের বলেছিলেন, সোনা-রুপোর গয়না রাখতে ওই বাক্স প্রয়োজন।

১৫ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

একই সঙ্গে কয়েক জন পরিচারককে বাড়ির পিছনে বড় গর্ত খোঁড়ার নির্দেশও দিয়েছিলেন শ্রদ্ধানন্দ। তাঁদের জানানো হয়, জলের একটা বড় ট্যাঙ্ক বানানো হবে ওই জায়গায়। সেইমতো পরিচারকেরা বড় একটি গর্তও খুঁড়েছিলেন।

১৬ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

১৯৯১ সালের গোড়ার দিকের কথা। পথের কাঁটা শাকিরাকে সরিয়ে ফেলতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন শ্রদ্ধানন্দ। চরম সিদ্ধান্ত নেন সে বছর ২৮ এপ্রিল। পরিকল্পনামতো শাকিরার চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিলেন শ্রদ্ধানন্দ। শাকিরা অচৈতন্য হয়ে পড়লে তাঁকে রিচমন্ড রোডের ওই বাড়িতে নিয়ে যান তিনি।

১৭ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

কাঠের বাক্স আগে থেকেই বানানো ছিল। সেই বাক্সেই শাকিরার দেহ ভরে বন্ধ করে দেন। এর পর বাড়ির পিছনে বানানো বড় গর্তে কাঠের বাক্স ফেলে শাকিরাকে মাটির নীচে জ্যান্ত অবস্থায় পুঁতে দেন শ্রদ্ধানন্দ। দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় শাকিরার।

১৮ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

১৯৯১ সালের মে মাসের মাঝামাঝি নাগাদ শাকিরার মেয়ে সাবা খেয়াল করেন, বেশ কিছু দিন ধরে তাঁর মায়ের কোনও সাড়াশব্দ নেই। সঙ্গে সঙ্গে শ্রদ্ধানন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। শ্রদ্ধানন্দ জানান, শাকিরা বিদেশে গিয়েছেন। কিন্তু সাবার সন্দেহ হয়।

১৯ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

১৯৯২ সালের ১০ জুন মায়ের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সাবা। পুলিশকে তিনি জানিয়েছিলেন, ১৯৯১ সালের ১৯ এপ্রিল শাকিরার সঙ্গে শেষ বার ফোনে কথা হয়েছিল। এর পরেই তদন্তে নামে পুলিশ।

২০ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

তিন বছর ধরে তদন্ত চালিয়ে শাকিরা খুনের মামলায় শ্রদ্ধানন্দকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছিলেন, শাকিরার যাবতীয় সম্পত্তির ‘পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি’ পাওয়ার পর তাঁকে খুনের ছক কষেছিলেন শ্রদ্ধানন্দ। ১৯৯৪ সালে শ্রদ্ধানন্দকে গ্রেফতার করে কর্নাটক পুলিশ। খুনে শ্রদ্ধানন্দকে সাহায্য করার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছিল এক পরিচারককেও।

২১ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

ওই পরিচারকের বয়ানের ভিত্তিতে শাকিরার দেহাবশেষ রিচমন্ড রোডের বাড়ির উঠোন খুঁড়ে বার করা হয়। ময়নাতদন্ত পাঠানো হয় সেই দেহাবশেষ। রিপোর্টে উঠে আসে, জ্যান্ত পুঁতে দেওয়ার কারণে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু ঘটে শাকিরার।

২২ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে ১৯৯৪ সালের ৩০ এপ্রিল শ্রদ্ধানন্দকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০০০ সালে কর্নাটকের নিম্ন আদালত শ্রদ্ধানন্দকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। ২০০৫ সালে কর্নাটক হাই কোর্ট সেই শাস্তি বহাল রাখে। এর পর সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন তিনি। ২০০৮ সালে মৃত্যুদণ্ডের বদলে শ্রদ্ধানন্দকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনায় শীর্ষ আদালত।

২৩ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

প্রথমে শ্রদ্ধানন্দকে বেঙ্গালুরুর সেন্ট্রাল জেলে রাখা হয়েছিল। ২০১১ সালে তাঁর অনুরোধে মধ্যপ্রদেশের সাগর সেন্ট্রাল জেলে পাঠানো হয় শ্রদ্ধানন্দকে। বর্তমানে তাঁর বয়স ৮০-র বেশি।

২৪ ২৪
All you need to know about Shakereh Khaleeli Murder Case

স্ত্রীকে খুনের মামলায় গত ৩১ বছর জেলে বন্দি রয়েছেন শ্রদ্ধানন্দ। বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালের নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্টে মুক্তির আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই আবেদন মঞ্জুর হয়নি। শাকিরা হত্যাকাণ্ড নিয়ে সম্প্রতি একটি তথ্যচিত্রও তৈরি হয়েছে।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি