Added tax to condom

চিনে এক লাফে বাড়ল কন্ডোমের দাম! তিন দশক পর বসল ১৩ শতাংশ কর, জন্মহারের ভারসাম্য না অর্থনীতির নয়া কৌশল?

চিনের নাগরিকদের আরও সন্তানধারণে উৎসাহিত করছে শি জিনপিং সরকার। দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি করতে নতুন কৌশল নিচ্ছে বেজিং।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৭:৫৩
০১ ১৯
Added tax to condom

এক দিকে জনবিস্ফোরণের ধাক্কায় বেসামাল ভারত। অন্য দিকে জন্মহার কমে যাওয়া চিন্তা বাড়ছে বেজিঙের। গত কয়েক দশক ধরে চিন বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশের খেতাব ধরে রেখেছিল। ২০২৪ সালে ভারত জনসংখ্যার নিরিখে চিনকে ছাড়িয়ে বিশ্বের জনবহুল দেশের তকমা পায়।

০২ ১৯
Added tax to condom

বেশ কয়েক বছর ধরেই আর্থিক এবং সামাজিক দু’দিক থেকেই দ্রুত পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে চিন। দীর্ঘ দিন ধরেই জনসংখ্যা হ্রাসের সমস্যায় ভুগছে চিন। সূত্রের খবর, চিনে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা অনেক কমে এসেছে। করোনা অতিমারি বিশ্বের অন্যতম জনবহুল এই দেশটিকে বিবিধ সমস্যার সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল জন্মহারে তীব্র হ্রাস।

০৩ ১৯
Added tax to condom

ভারত যখন হন্যে হয়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের উপায় খুঁজছে তখন ঠিক তার বিপরীত চিত্র ফুটে উঠেছে চিনের বিভিন্ন শহরে। চিনের নাগরিকদের আরও সন্তান ধারণে উৎসাহিত করছে শি জিনপিং সরকার। দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি করতে নতুন কৌশল নিচ্ছে বেজিং।

Advertisement
০৪ ১৯
Added tax to condom

জনসংখ্যাই চিনের অন্যতম বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারকে হিমশিম খেতে হচ্ছিল। আজ সেই চিনে জনসংখ্যার ভারসাম্য বজায় রাখতে সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য ভর্তুকি ঘোষণা করতে হয়েছে। যে সমস্ত পরিবারে সন্তানের জন্ম হবে, তাদের হাতে হাতে নগদ টাকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে গণপ্রজাতন্ত্রী চিন সরকার (পিপল্‌স রিপাবলিক অফ চায়না)।

০৫ ১৯
Added tax to condom

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিকে রক্ষা করতে ভর্তুকি ছাড়াও নতুন একটি নিয়ম চালু করতে চায় চিন সরকার। দম্পতিদের আরও বেশি সংখ্যক সন্তানগ্রহণের প্রবণতা বৃদ্ধি করার জন্য একটি কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে জিনপিং সরকার। জন্মনিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সম্পর্কিত পণ্যের উপর অতিরিক্ত কর বসাতে চলেছে চিন!

Advertisement
০৬ ১৯
Added tax to condom

কন্ডোম, গর্ভনিরোধক বড়ি ও অন্যান্য জন্মনিয়ন্ত্রক পণ্যের উপর ভ্যাট চাপাতে চলেছে বেজিং। তিন দশক পর নীতি পরিবর্তনের পথে হাঁটবে পড়শি দেশ। ৩০ বছরের মধ্যে প্রথম বার জন্মনিয়ন্ত্রক পণ্যের উপর মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স আদায় করবে বলে স্থির করেছে সে দেশের সরকার। ৩০ বছর ধরে এই ধরনের পণ্যগুলি করমুক্ত রাখা হয়েছিল ড্রাগনের দেশে।

০৭ ১৯
Added tax to condom

২০২৪ সালের ডিসেম্বরেই মূল্য সংযোজন কর আইনটি সংশোধিত করেছে তারা। নতুন বছরের জানুয়ারি থেকেই চিনা নাগরিকদের উপর অতিরিক্ত এই করের বোঝা চাপতে চলেছে। কন্ডোম-সহ সমস্ত ধরনের গর্ভনিরোধক পণ্যের উপর ১৩ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে।

Advertisement
০৮ ১৯
Added tax to condom

সংবাদ প্রতিবেদন অনুসারে, নতুন সংশোধনী কর আইনে চিন করমুক্ত পণ্যের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। সেই তালিকায় কৃষিপণ্য, চিকিৎসা এবং বিবাহ ও সম্পর্কিত পরিষেবার উল্লেখ করা থাকলেও তাতে জন্মনিয়ন্ত্রক পণ্যগুলি বাদ দেওয়া হয়েছে। এই পণ্যগুলি ১৯৯৩ সাল থেকে করমুক্ত ছিল।

০৯ ১৯
Added tax to condom

একসময় জনসংখ্যাই চিনের অন্যতম বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারকে হিমশিম খেতে হচ্ছিল। ১৯৭৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত চিনে চালু ছিল এক সন্তান নীতি। অর্থাৎ, একটির বেশি সন্তান গ্রহণ করতে পারতেন না দম্পতিরা। তবে ২০১৬ সালে সেই নিয়ম তুলে নেয় বেজিং।

১০ ১৯
Added tax to condom

সেই সময়সীমার মধ্যে কন্ডোমের উপর থেকে কর তুলে নিয়েছিল চিনা প্রশাসন। এক সন্তান নীতিকে ফলপ্রসূ করতে চিনা নাগরিকদের গর্ভপাত ও গর্ভ নিয়ন্ত্রণে প্রবল উৎসাহ দিয়েছিল পিপল্‌স রিপাবলিক অফ চায়না। চালু করা হয় বন্ধ্যত্বকরণ এবং জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য রাষ্ট্র পরিচালিত নানা প্রকল্পও।

১১ ১৯
Added tax to condom

পরিসংখ্যান বলছে, এক সন্তান নীতি বিলোপের পর ২০১৬ সালে চিনে ১ কোটি ৮৮ লক্ষ মানুষের জন্ম হয়েছিল। ২০২৪ সালে ৯৫ লক্ষে নেমে এসে প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে জন্মহার। টানা তিন বছর ধরে জনসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে চিনে। ২০২২ সালে প্রতি ১০০০ জনে জন্মহার ছিল মাত্র ৬.৭৭ জন। ১৯৪৯ সালে চিনে কমিউনিস্ট পার্টির সূচনালগ্ন থেকে এমন পরিসংখ্যান কখনও দেখা যায়নি।

১২ ১৯
Added tax to condom

চিনের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিয়ের প্রতি সামগ্রিক অনীহা তৈরি হয়েছে। কেউ আর সে ভাবে ঘটা করে বিয়ে করতে চাইছেন না। সন্তানপালনেও আগ্রহ হারিয়েছেন চিনা যুগলেরা। ২০২১ সালের পরিসংখ্যান বলছে, সে বছর চিনে ৭৬ লক্ষ ৩০ হাজার যুগল বিয়ের জন্য সরকারি খাতায় নাম নথিভুক্ত করিয়েছিলেন। ২০২২ সালে এক বছরের মধ্যে সেই সংখ্যা তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কমেছে।

১৩ ১৯
Added tax to condom

শিক্ষাক্ষেত্রে খরচের পাশাপাশি সন্তানপালনের সামগ্রিক খরচ অনেকটা বেড়ে যাওয়ায় চিনে গত এক দশকে ধীরে ধীরে জন্মহার কমছিল। সেই প্রবণতায় ইন্ধন জুগিয়েছে কোভিড লকডাউন। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, চিনের কড়া জ়িরো-কোভিড নীতিও দম্পতিদের মধ্যে সন্তান জন্ম দেওয়ার ইচ্ছে কমিয়ে দিয়েছে।

১৪ ১৯
Added tax to condom

চিনে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা অনেক কমে এসেছে। দম্পতিরা সন্তানপালনে আগ্রহ হারিয়েছেন। মনোযোগী হয়েছেন সঞ্চয়ে। দেশের বিবাহিত দম্পতিরা তিনটি করে সন্তান জন্ম দিতে পারবেন এই আইন চালু হওয়ার পরও সন্তান জন্ম দেওয়ার ব্যাপারে খুব একটা উৎসাহ বোধ করছেন না চিনা দম্পতিরা।

১৫ ১৯
Added tax to condom

বেশির ভাগ দম্পতিরই বক্তব্য, তাঁরা চাইলেও তিনটে সন্তান বড় করার সামর্থ্য তাঁদের নেই। অতিমারি পর্বের পর চিনে জীবনযাত্রার খরচ অনেক বেড়ে গিয়েছে। পাশাপাশি, তরুণ প্রজন্ম উপলব্ধি করেছে কর্মজগতে উন্নতির সুযোগ, নির্ঝঞ্ঝাট জীবনের হাতছানি অন্য দেশে অনেক বেশি।

১৬ ১৯
Added tax to condom

চিনে সন্তানের জন্ম দিতে সে ভাবে কোনও খরচ নেই। তবে তাকে বড় করে তোলা এবং শিক্ষাদান বেশ ব্যয়বহুল। সে দেশে কোনও ব্যক্তির আয়ের সঙ্গে মিলিয়ে যদি আমরা এই হিসাব কষি, তবে দেখা যাবে আয়ের নিরিখে সন্তান প্রতিপালনে সবচেয়ে ব্যয়বহুল দেশ চিন। চিনে সন্তান প্রতিপালনের প্রধান খরচ শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যয়।

১৭ ১৯
Added tax to condom

একটি সমীক্ষার রিপোর্টে বলা হয়েছে, এক শিশুকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত লালন-পালন করতে আনুমানিক ৫ লক্ষ ৩৮ হাজার ইউয়ানেরও (৭৬,০০০ হাজার ডলার) বেশি খরচ হয়। চিনে অধিকাংশ প্রাক্-প্রাথমিক স্কুলগুলি বেসরকারি হওয়ার ফলে সেখানে শিশুদের পড়ানোর খরচ যথেষ্ট।

১৮ ১৯
Added tax to condom

২০২৩ সালে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশের তকমা হারায় চিন। তাদের টপকে জনবহুলের তালিকায় শীর্ষে পৌঁছে যায় ভারত। রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, এ ভাবে চলতে থাকলে ২০৫০ সালের মধ্যে চিনের জনসংখ্যা নেমে আসবে মাত্র ১৩০ কোটিতে। ২১০০ সালের মধ্যে তা কমে হতে পারে ৮০ কোটি।

১৯ ১৯
Added tax to condom

দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে কঠোর জন্ম নিয়ন্ত্রণ নীতি চালু থাকার ফলে দেশের জনসংখ্যার একটা বড় অংশ এখন বার্ধক্যের দিকে পা বাড়িয়েছেন। অনেকটা জাপান বা দক্ষিণ কোরিয়ার মতোই। জন্মহার কমে আসায় চিনের অর্থনীতি ধুঁকছে। যে বয়সে মানুষ সবচেয়ে বেশি কর্মক্ষম থাকে, সেই বয়সের মানুষের সংখ্যা কমে এসেছে। বেড়েছে বৃদ্ধের সংখ্যা। এতে অর্থনীতিতে লাভ হচ্ছে না। মিলছে না শ্রমিক, বাড়ছে না উৎপাদন।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি