দীর্ঘ দিনের প্রেমিকা আবিবা বেগের সঙ্গে বাগ্দান সেরেছেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী এবং রবার্ট বঢরার পুত্র তথা কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ভাগ্নে রেহান বঢরা। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, শীঘ্রই চার হাত এক হতে চলেছে তাঁদের।
জানা গিয়েছে, সাত বছর ধরে রেহান এবং আবিবা সম্পর্কে রয়েছেন। সম্প্রতি বাগ্দান সেরেছেন তাঁরা। বিয়ে করে অবশেষে পরিণতিও পেতে চলেছে তাঁদের প্রেম।
রেহান-আবিবার বাগ্দানের কথা প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে গিয়েছে তাঁদের নিয়ে। রাহুল গান্ধীর ভাগ্নেবৌ কে, তিনি কী করেন, তা জানতে কৌতূহলী হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষ।
আবিবা এবং তাঁর পরিবার দিল্লিতেই থাকেন। গান্ধী পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বেগ পরিবার। সেই সূত্রে আগে থেকেই একে অপরকে চেনেন রেহান এবং আবিবা। পরে প্রেমও হয়।
সুন্দরী বলতে যা বোঝায়, পেশায় চিত্রগ্রাহক বা ফোটোগ্রাফার আবিবা তা-ই। নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা রয়েছে তাঁর। লিঙ্কডইন প্রোফাইল অনুযায়ী, আবিবা পড়াশোনা করেছেন দিল্লির মডার্ন স্কুল থেকে। পরে ওপি জিন্দল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি থেকে সাংবাদিকতা এবং গণজ্ঞাপন নিয়ে স্নাতক হন।
আবিবার ক্যামেরার শখ অনেক ছোটবেলা থেকেই। ফোটোগ্রাফিই তাঁর জীবন। মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে ক্যামেরাবন্দি করতে ভালবাসেন তিনি।
ইউ ক্যানট মিস দিস উইথ মেথড গ্যালারি (২০২৩), ইন্ডিয়া আর্ট ফেয়ারের ইয়ং কালেক্টর প্রোগ্রাম (২০২৩), দ্য ইলিউসরি ওয়ার্ল্ড অ্যাট দ্য কোরাম ক্লাব (২০১৯) এবং ইন্ডিয়া ডিজ়াইন আইডি, কে২ ইন্ডিয়া (২০১৮)-য় আবিবার কাজ প্রদর্শিত হয়েছে।
‘অ্যাটেলিয়ার ১১’ নামে একটি সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা আবিবা। এটি একটি ফোটোগ্রাফিক স্টুডিয়ো এবং প্রযোজনা সংস্থা। ভারতের বিভিন্ন সংস্থা এবং ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করে ‘অ্যাটেলিয়ার ১১’। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছেন সংস্থাটির গ্রাহক।
মিডিয়া এবং গণজ্ঞাপন ক্ষেত্রেও বিভিন্ন ভূমিকায় কাজ করেছেন আবিবা। নামীদামি পত্রিকায় শিক্ষানবিশ হিসাবে কাজ করার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্স প্রযোজক এবং জুনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসাবেও কাজ করেছেন। আর্ট চেইন ইন্ডিয়ায় মার্কেটিং ইন্টার্নও ছিলেন তিনি।
অন্য দিকে, রেহানের জন্ম ২০০০ সালের ২৯ অগস্ট। দিল্লি এবং দেহরাদূনে স্কুলজীবন কাটে রেহানের। তার পর লন্ডনের এসওএএস বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।
আবিবার মতো রেহানের ভালবাসার জায়গাও ফোটোগ্রাফি। শিল্পীসত্তাকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে সর্বদা সচেষ্ট রেহান।
প্রিয়ঙ্কা-তনয় রেহানের বন্যপ্রাণের প্রতি টান রয়েছে ছোটবেলা থেকেই। সূত্রের খবর, তাঁর যখন ১০ বছর বয়স, তখন থেকেই ছবি তোলার আগ্রহ ছিল। হাতে তুলে নিয়েছিলেন ক্যামেরা। তার পর থেকে সেটিকেই তাঁর জীবনের পাথেয় করেছেন।
এপিআরই আর্ট হাউসের পোর্টালে রেহানের প্রোফাইলে বন্যপ্রাণ, স্ট্রিট ফোটোগ্রাফি এবং বাণিজ্যিক ফোটোগ্রাফির উল্লেখ রয়েছে।
২০২১ সালে নয়াদিল্লির বিকানের হাউসে ‘ডার্ক পারসেপশন’ নামে একটি একক প্রদর্শনীতে প্রথম প্রকাশ্যে আসে রেহানের তোলা ছবি। পরে কলকাতাতেও ‘দ্য ইন্ডিয়া স্টোরি’ নামে একক প্রদর্শনী হয় তাঁর তোলা ছবির।
রেহানের কাজ সাংস্কৃতিক মহলেও বেশ প্রশংসিত। সাদা-কালো ছবি তুলতেই বেশি পছন্দ করেন তিনি। ২০১৭ সালে ক্রিকেট খেলার সময় চোখে আঘাত লেগেছিল রেহানের। মা প্রিয়ঙ্কাই তাঁর অনুপ্রেরণা। তিনি রেহানকে ফোটোগ্রাফি নিয়ে উৎসাহ জুগিয়ে গিয়েছেন। প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী তথা রেহানের দাদামশাইয়েও ফোটোগ্রাফির প্রতি আকর্ষণ ছিল।
সেই রেহান এবং আবিবাই এ বার বাগ্দান পর্ব সারলেন। দিন তিনেক আগে আবিবা তাঁর ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে রেহানের সঙ্গে একটি ছবি আপলোড করেছিলেন। তিনটি হৃদয়ের ইমোজি ছিল ছবিটিতে। তার পরেই দু’জনের বাগ্দানের কথা প্রকাশ্যে আসে।
সব ছবি: সংগৃহীত।