এক নায়কের সঙ্গে প্রেম ভাঙার পরেই অন্য নায়কের প্রেমে পড়েছিলেন বলি অভিনেত্রী করিশ্মা কপূর। সেই অভিনেতা আবার ছিলেন করিশ্মার বোনের ‘ক্রাশ’। মেয়ের প্রেমের কথা জানতে পেরে নাকি তারকাসন্তানের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন করিশ্মার বাবা। তবে, বিয়ের কথা এগোনোর আগেই বাধ সেধেছিলেন নায়িকার মা।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, নব্বইয়ের দশকে বলি অভিনেতা অজয় দেবগনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন করিশ্মা। ১৯৯২ সালে ‘জিগর’ ছবিতে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছিলেন তাঁরা। সেট থেকেই তাঁদের বন্ধুত্ব প্রেমে পরিণতি পায়।
যদিও এক পুরনো সাক্ষাৎকারে অজয়ের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে করিশ্মাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানিয়েছিলেন যে, দু’জনে খুব ভাল বন্ধু। পরে জানা যায়, নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে অজয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে যায় করিশ্মার। কারণ, অজয় তখন কাজলের প্রেমে পড়েছিলেন। চার বছর পর ১৯৯৯ সালে কাজলকে বিয়েও করে ফেলেন অজয়।
অজয়ের সঙ্গে সম্পর্কে ভাঙার পর করিশ্মার সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল বলি অভিনেতা অক্ষয় খন্নার। অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায়, নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে অক্ষয়ের সঙ্গে গভীর বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল করিশ্মার। অজয়ের সঙ্গে প্রেম ভাঙার পর অক্ষয়ের কাছে আশ্রয় খুঁজে পেয়েছিলেন তিনি।
অক্ষয় এবং করিশ্মা যে গোপনে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন, তা কোনও ভাবে জানতে পেরে গিয়েছিলেন করিশ্মার বাবা রণধীর কপূর। অন্য দিকে, করিশ্মার বোন করিনা কপূর খানেরও নাকি ‘ক্রাশ’ ছিলেন অক্ষয়।
অক্ষয়ের কেরিয়ারের প্রথম ছবি ছিল ‘হিমালয় পুত্র’। অক্ষয়কে বড়পর্দায় দেখেই তাঁর প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন করিনা। অক্ষয়ের জন্য ছবিটি ২০ বার দেখে ফেলেছিলেন। তবে সেই সময় করিনা ছিলেন কিশোরী। স্কুলে পড়তেন তিনি।
বড় মেয়ে যে মনে মনে অক্ষয়কে ভালবেসে ফেলেছে তা জানতে পেরে নাকি সরাসরি নায়কের বাবা বিনোদ খন্নার সঙ্গে কথা বলেছিলেন রণধীর। বিনোদের কাছে গিয়ে করিশ্মা এবং অক্ষয়ের বিয়ের কথা পেড়েছিলেন রণধীর। বিনোদের পরিবারের তরফেও নাকি কোনও আপত্তি ছিল না।
বলিপাড়ার জনশ্রুতি, করিশ্মার সঙ্গে অক্ষয়ের বিয়ের কথা এগোতে না এগোতেই বাধ সাধেন করিশ্মার মা ববিতা কপূর। অক্ষয়ের সঙ্গে বড় মেয়ের বিয়ে হোক, তা কিছুতেই চাননি ববিতা। স্পষ্ট ভাবে বিয়েতে নিজের অসম্মতি জানিয়েছিলেন তিনি।
বলিউডের অধিকাংশের দাবি, করিশ্মার সঙ্গে অক্ষয়ের বিয়ের কথা হওয়ার সময় কেরিয়ারের তুঙ্গে ছিলেন নায়িকা। ববিতা চাইছিলেন, তাঁর মেয়ে যেন সেই মুহূর্তে কেরিয়ার ছাড়া অন্য কোনও দিকে মন না দেন।
আবার বলিপাড়ায় গুঞ্জন শোনা যেতে থাকে যে, অক্ষয়ের কেরিয়ার নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না ববিতা। করিশ্মা যে সময় সাফল্যের চূড়ায়, সে সময় কাজের বিশেষ সুযোগ পাচ্ছিলেন না অক্ষয়। জামাই হিসাবে এমন পাত্রকে মনে ধরেনি ববিতার। তাঁর আপত্তিতে অক্ষয়ের সঙ্গে বিয়ের কথা পাকা হওয়ার আগেই ভেঙে যায়।
১৯৯৭ সালে করিশ্মার তুতো ভাই নিখিল নন্দের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল অভিষেক বচ্চনের দিদি শ্বেতা বচ্চনের। সেই সূত্রে অভিষেক এবং করিশ্মার ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। কানাঘুষো শোনা যায়, পাঁচ বছর সম্পর্কে ছিলেন অভিষেক এবং করিশ্মা।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ২০০২ সালে অমিতাভ বচ্চনের জন্মদিন পালনের সময় অভিষেক এবং করিশ্মার বাগ্দানের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। আংটিবদল সেরে ফেললেও বিয়ের পিঁড়ি পর্যন্ত পৌঁছোতে পারেননি দুই তারকা।
বাগ্দানের কয়েক মাসের মধ্যেই অভিষেকের সঙ্গে বিয়ে ভেঙে গিয়েছিল করিশ্মার। বলিপা়ড়ার অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায়, নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা ব্যবসার দিকে মুখ থুবড়ে পড়ায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল বচ্চন পরিবার। অন্য দিকে, অভিষেকও তাঁর কেরিয়ারে বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেননি।
ববিতা নাকি বচ্চন পরিবারের কাছে আবদার করেছিলেন, অমিতাভ তাঁর সম্পত্তির কিছু অংশ যেন অভিষেককে হস্তান্তর করেন। মেয়ের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার জন্য এই শর্ত রেখেছিলেন ববিতা। কিন্তু সেই শর্তে রাজি হয়নি বচ্চন পরিবার।
বলিপাড়ার জনশ্রুতি, অভিষেকের সঙ্গে বিয়ের পর করিশ্মাকে অভিনয় ছাড়ার শর্ত দিয়েছিল বচ্চন পরিবার। সেই সময় করিশ্মার কেরিয়ার সাফল্যের চূড়ায়। মেয়ের কেরিয়ার নিয়ে আপস করতে চাননি ববিতা। তাঁর জন্যই নাকি অভিষেকের সঙ্গে বিয়ে ভেঙে গিয়েছিল করিশ্মার।
২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সঞ্জয় কপূর নামে এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেন করিশ্মা। বিয়ের অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত ছিলেন অক্ষয় খন্নাও। করিশ্মাকে বিয়ের সাজে দেখে সকলের সামনে তাঁর হাতে চুমু এঁকে দিয়েছিলেন অক্ষয়।
বিয়ের পর দুই সন্তানের জন্ম দেন করিশ্মা। ২০১৬ সালে বিবাহবিচ্ছেদও হয়ে যায় তাঁর। তবে সারা জীবন অবিবাহিত থেকে যান অক্ষয়। বলিপাড়ার একাংশের দাবি, করিশ্মাকে বিয়ে করতে না পারার কারণে আর কখনও বিয়ে করেননি অভিনেতা।
চলতি বছরের মার্চ মাসে ৫০ বছর পূর্ণ হল অক্ষয়ের। অবিবাহিত থাকার প্রসঙ্গে অভিনেতা এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘আমি আমার জীবনের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে রাখতে চাই। বিয়ের পর সেই সুযোগটা পাব না। বিয়ের পর জীবনে দ্বিতীয় ব্যক্তি এসে জুড়ে যায়। তখন আমার জীবন আর আমার একার থাকবে না। জীবনযাত্রায় আগাগোড়া বদল চলে আসতে বাধ্য। আমি নিজের জীবনের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে সেই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার মতো মানুষ নই।’’
সব ছবি: সংগৃহীত।