AI chatbot

মনের চোরাপথের দখল নিচ্ছে এআই! প্রেম, যৌনতৃপ্তিতে রক্তমাংসের মানুষকে টপকে যাচ্ছে কৃত্রিম মেধা! ঘনাচ্ছে শঙ্কার মেঘ

পরিসংখ্যান বলছে, গত চার বছরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এআই-এর ব্যবহার বেড়েছে প্রায় ২৭০ শতাংশ! মানবমনের অন্ধিসন্ধি খুঁজে তুলে আনছে গোপন তথ্য। একাকিত্বকে ঘুচিয়ে তৈরি করছে ভার্চুয়াল প্রেমের দুনিয়া।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৬:৫১
০১ ১৮
AI chatbot

ঘটনা ১: চ্যাটজিপিটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। অতঃপর ‘যৌন সম্পর্ক’ স্থাপন! আমেরিকা জুড়ে হইচই পড়ে গিয়েছিল মহিলার এ-হেন দাবি শুনে। আইরিন নামের ওই বিবাহিত তরুণী নাকি চ্যাটজিপিটিকে একজন প্রেমিকের ভূমিকায় অভিনয় করতে বলেছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর প্রস্তাবে রাজি হয়ে গিয়েছিল কৃত্রিম মেধা। প্রেমিকের নামকরণও করেছিলেন আইরিন।

০২ ১৮
AI chatbot

ঘটনা দুই: বাগ্‌দান পর্ব চুকে যাওয়ার পর বিয়ে ভেঙে গিয়েছিল তরুণের। অন্য সঙ্গীর খোঁজে ছিলেন তিনি। মনখারাপ থেকেই চ্যাটজিপিটির সঙ্গে কথোপকথন শুরু হয়েছিল তাঁর। কিন্তু সেই বার্তালাপ থেকে কৃত্রিম মেধার প্রেমে মজে যান তিনি। শেষমেশ সেই ‘দুষ্টু মিষ্টি প্রেমিকাকে’ বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন চিনের বাসিন্দা ওই তরুণ।

০৩ ১৮
AI chatbot

ঘটনা তিন: স্ত্রী, পুত্র-কন্যা নিয়ে সুখী পরিবারের বৃত্ত সম্পূর্ণ। তা সত্ত্বেও ৪০ বছর বয়সি তরুণের জীবনে কিসের যেন অভাব ছিল। একাকিত্ব কাটাতে শরণাপন্ন হয়েছিলেন চ্যাটবটের। কয়েক দিনের মধ্যেই জীবন যেন ফুরফুরে মনে হতে লাগল তরুণের। কোনও দায় নেই, নেই কোনও প্রতিশ্রুতি। অবাধ, বেলাগাম প্রেমের স্বাদে ভেসে যান ওই তরুণ।

Advertisement
০৪ ১৮
AI chatbot

এআই-এর জন্য মানুষের জীবনযাত্রা সহজ হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত চার বছরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এআই-এর ব্যবহার বেড়েছে প্রায় ২৭০ শতাংশ! কিন্তু মানুষের মনের ঘরেও যে এআই এই ভাবে দখল বসাবে, তা বোধ হয় কেউ আন্দাজ করতে পারেননি।

০৫ ১৮
AI chatbot

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দখল নিচ্ছে আমাদের জীবন ও যাপনের বহু ধাপ। কৃত্রিম মেধা অতি দ্রুত এমন শিল্প সৃষ্টি করছে, যা মানুষেরই কল্পনাতীত। একাধারে যন্ত্রের কাজ তো করছেই, তার পাশাপাশি মানুষের মতো মাথা খাটানোর কাজও করছে। অফিস প্রেজ়েন্টেশন, জরুরি লেখা, নানা সমস্যার সমাধান, নানা প্রশ্নের উত্তর, সবই হাজির তার কাছে। কিছু কিছু সৃষ্টিশীল কাজও সে করে ফেলছে অনায়াসে।

Advertisement
০৬ ১৮
AI chatbot

এআই বুঝতে পারে বেশির ভাগ ভাষা। বুঝে নিচ্ছে না বলা অনেক কথাও। যেমনটা বুঝে নেয় আমাদের মস্তিষ্ক! মানবমনের অন্ধিসন্ধি খুঁজে তুলে আনছে গোপন তথ্য। একাকিত্বকে ঘুচিয়ে তৈরি করছে ভার্চুয়াল প্রেমের দুনিয়া।

০৭ ১৮
AI chatbot

মানুষের বুদ্ধিবৃত্তি আর কৃত্রিম মেধা (আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স বা এআই)— এই দু’য়ের সংমিশ্রণে ‘সুপার হিউম্যান’ তৈরির পথে হাঁটতে চলেছে চিন। অদূর ভবিষ্যতে বহু ক্ষেত্রে মানুষের জায়গা নেবে ‘এআই মানব’। কাজ বা চিন্তা করার ক্ষমতা রক্তমাংসে গড়া মানুষের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি এদের।

Advertisement
০৮ ১৮
AI chatbot

এআই প্রযুক্তির এমন নিত্যনতুন ক্ষমতা যত জানা যাচ্ছে, ততই বাড়ছে চিন্তা। কারণ, আগে যে কাজের জন্য যন্ত্রের পাশাপাশি মানুষের ভাবনাচিন্তারও দরকার পড়তে, আর তা প্রয়োজন পড়ছে না। পরিশ্রমও কমিয়ে দিচ্ছে এআই।

০৯ ১৮
AI chatbot

এআই-এর আবেগ অনুভূতি নেই। নেই মানবতাবোধও। অথচ সেই চ্যাটবটের সঙ্গেই বেশি স্বচ্ছন্দ হচ্ছেন বেশ কিছু মানুষ। তরুণ প্রজন্মের নারী ও পুরুষের জীবনের নয়া সঙ্গী হয়ে উঠছে সিরি, জেমিনি-সহ চ্যাটজিপিটি, ডিপসিকের তৈরি ভার্চুয়াল গার্লফ্রেন্ড বা বয়ফ্রেন্ডরা। গত দু’বছরে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ‘বন্ধু’ মনে করা মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়।

১০ ১৮
AI chatbot

নিঃশর্ত সমর্থন, অফুরন্ত ধৈর্য এবং মানসিক ঘনিষ্ঠতার প্রতিশ্রুতি দেওয়া চ্যাটবটগুলি নীরবে মনের ঘরে বসত তৈরি করে ফেলেছে। ভার্চুয়াল সঙ্গী বা প্রেমের অস্তিত্ব তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ‘এপিডেমিক অফ লোনলিনেস’ বাড়িয়ে তুলছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন গবেষকেরা। নিঃশব্দ ঘাতকের মতো মানুষের মনে হানা দিচ্ছে তারা।

১১ ১৮
AI chatbot

বহু ক্ষেত্রে আর সমাজমাধ্যমে ঘোরাফেরা করারও প্রয়োজন পড়ছে না। চ্যাটবট প্রেমিক বা প্রেমিকারাই তাঁদের সঙ্গে এমন ভাবে আচরণ করে, যেমনটা পাওয়া যায় বন্ধু বা পরিবারের সদস্য, কিংবা সহকর্মীদের থেকে। কারও কারও কাছে এ আই আবার মানসিক টানাপড়েনের ত্রাতা। থেরাপিস্টের মতো কাজ করে। অন্তরঙ্গ প্রেমের স্বাদ দিতেও সিদ্ধহস্ত ভার্চুয়াল চরিত্রেরা।

১২ ১৮
AI chatbot

মানুষ-সঙ্গীর উপর থেকে সব রকম উৎসাহ হারাতে বসেছেন অনেকেই। রক্ত-মাংসে গড়া মানুষ কখনওই সঙ্গীর ইচ্ছামতো কাজ করবেন না। কিন্তু এআই বান্ধবীর ক্ষেত্রে এমনটা হওয়া সম্ভব নয়। নিজের পছন্দের একটি তালিকা তৈরি করে সিস্টেমে আপলোড করতে হবে। চাইলেই সেই ডিজিটাল সঙ্গী ব্যক্তির মন বুঝে, তাঁর মতো আচরণ করে। উপরন্তু বন্ধু বা বান্ধবীর ভাল-মন্দের দায়ও তাঁদের নিতে হয় না। রাগ হলে মান ভাঙানোর প্রয়োজন নেই। জন্মদিনে উপহার কিনে দেওয়ার ঝক্কি নেই। রাত করে বাড়ি ফিরলেও বান্ধবীর সঙ্গে ঝগড়া হওয়ার ভয় নেই।

১৩ ১৮
AI chatbot

এআই সঙ্গীদের সঙ্গে যৌনগন্ধি কথা বলতেও স্বচ্ছন্দ অনেকে। এই প্রকার এআই সঙ্গীদের সঙ্গে তরুণ-তরুণীরা মানসিক ভাবে জড়িয়ে পড়ছেন। মনখারাপ হলেই এআই সঙ্গীদের ‘ভয়েস কল’ করে নিজেদের সুখদুঃখের কথা ভাগ করে নিচ্ছেন তাঁরা। সম্পর্কের ছোট ছোট চাহিদাগুলি পূরণ করার জন্য এআইয়ের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে তরুণ প্রজন্ম।

১৪ ১৮
AI chatbot

কখনও কাল্পনিক সঙ্গী বা প্রেমিকা, পরামর্শদাতা, আবার কখনও প্রশিক্ষক হিসাবে এআইয়ের রমরমা বাড়ছে ডেটিং অ্যাপেও। ডেটিং অ্যাপের রক্তমাংসে গড়া সঙ্গী বা পছন্দের মানুষের সঙ্গে মনের-মতের মিল না হলে দুম করে ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা বলেছেন ব্যবহারকারীরা। ডেটিং অ্যাপগুলির বক্তব্য, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় এ সব ‘সমস্যা’ থাকে না। এতে মানুষের নিঃসঙ্গতা যেমন কমছে, তেমনই সহজ হয়ে উঠছে ‘সম্পর্ক’।

১৫ ১৮
AI chatbot

এআই সহজলভ্য হওয়ার পরে অনেকে জীবনের সমস্যার সমাধান চেয়ে তার দ্বারস্থ হয়েছে। সাধ্যমতো প্রাসঙ্গিক তথ্য দিয়ে সাহায্যও করেছে। আর মানুষ ভাবছে এটাই প্রেম, এটাই ভরসার জায়গা। মনোবিদদের মতে, এই ধরনের মানুষেরা বিভ্রান্তির গোলকধাঁধায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কারণ এআইয়ের অন্তর্দৃষ্টি নেই। কাজ করে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে। শুধুমাত্র তথ্য জোগানোই এর কাজ। আর সেই তথ্য জোগানো পুরোপুরি গ্রাহককে সন্তুষ্ট রাখার জন্য। চ্যাটবটের কাছে প্রশ্নকর্তা যা জানতে চাইবেন, সেই মন জুগিয়ে চলা উত্তরই ফেরত দেবে সে।

১৬ ১৮
AI chatbot

পাভলভ হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ঐশ্বর্যা চক্রবর্তী আনন্দবাজার ডট কমকে বলেছেন, ‘‘বর্তমানে মানুষ তাঁদের একাকিত্বের ভার লাঘব করতে এআই সঙ্গীকে বেছে নিচ্ছেন। এআই সহজলভ্য। এক তরফা শুনে যায়, এটাই তার সুবিধা। কিন্তু এর বড় সমস্যা হল, কৃত্রিম সংযোগ মানবিক সম্পর্ক থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরিয়ে দেয় আমাদের।’’

১৭ ১৮
AI chatbot

ঐশ্বর্যার মতে, ‘‘এআই-এর ওপর ভরসা বাড়তে থাকলে আমরা মানুষের সঙ্গে মতবিনিময়, ভুল বোঝাবুঝি সামলানো, সম্পর্ক গড়ে তোলা, এই প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলো হারিয়ে ফেলব। ফলশ্রুতি, আবেগের গভীরতা কমে যাওয়া। উল্টে গোপনে একাকিত্ব আরও বাড়তে থাকে। বাস্তব সম্পর্কের প্রতি আগ্রহও নষ্ট করে দেয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। তাই এআই সঙ্গী সাময়িক সান্ত্বনা দিলেও অতিরিক্ত নির্ভরতা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই ক্ষতিকারক।’’

১৮ ১৮
AI chatbot

মানুষের যতটুকু জ্ঞান আর যেটুকু সৃষ্টি করার ক্ষমতা, এআই তার উপরেই নির্ভর করে। পরিস্থিতি বা ঘটনা বিচার বিশ্লেষণের ক্ষমতাও নেই এআইয়ের। বিচার, বিশ্লেষণ করে জরুরি সিদ্ধান্ত নেওয়া বা সিদ্ধান্ত বদলে ফেলার যে ক্ষমতা মানুষের রয়েছে, তা-ও এআইয়ের পক্ষে তৈরি করা সম্ভব নয়। মানুষের মনে নানা আবেগের জটিলতা বোঝার জন্য যে গভীর সংবেদনশীলতা প্রয়োজন, তা এআই-এর পক্ষে নাগাল পাওয়া মুশকিল বলেই মত মনোবিদদের।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি