Cotton Import Duty

ট্রাম্পের ভয়েই কি তুলো থেকে শুল্ক প্রত্যাহার? নয়াদিল্লির শুল্ক-কূটনীতিতে যন্ত্রণা বাড়বে তুলোচাষিদের?

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৫ অগস্ট ঘোষণা করেছিলেন কৃষক ও ব্যবসায়ীদের গায়ে শুল্ক সংক্রান্ত কোনও আঁচ সরকার আসতে দেবে না। শুল্কযুদ্ধের প্রভাব আগামী দিনে ভারতীয় ছোট ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্রগুলিতে প্রবল সমস্যা তৈরি করতে পারে, সেই আশঙ্কা থেকেই ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’-এর পথে নেমে পড়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৫ ১৭:৩৮
০১ ১৫
Cotton Import Duty

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কড়া শুল্কনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য বড় পদক্ষেপ করল নয়াদিল্লি। ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কযুদ্ধের প্রভাব আগামী দিনে ভারতীয় ছোট ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্রগুলিতে প্রবল সমস্যা তৈরি করতে পারে, সেই আশঙ্কা থেকেই ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে পড়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। ট্রাম্প অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় আমেরিকার বাজারে ভারতীয় পণ্যে মোট করের অঙ্ক দাঁড়াচ্ছে ৫০ শতাংশ।

০২ ১৫
Cotton Import Duty

শুল্ক নিয়ে ট্রাম্পের বাড়াবাড়ির ফলে রফতানিকারকেরা ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রভূত টানাপড়েনের মুখোমুখি হচ্ছেন। বিশেষ করে বস্ত্রশিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের ক্রমবর্ধমান শুল্ক-বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। ভারতের বস্ত্র ব্যবসায়ী ও রফতানি শিল্পের শঙ্কা দূর করতে তুলো আমদানিতে শুল্কছাড়ের ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে এই ছাড় সাময়িক।

০৩ ১৫
Cotton Import Duty

১৯ অগস্ট থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকছে এই করছাড়ের নির্দেশিকা। সোমবার রাতে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হিসাবে এই ছাড় দেওয়া হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তি জারির আগে পর্যন্ত ভারতের বাইরে থেকে তুলো আমদানি করতে হলে ব্যবসায়ীদের ১১ শতাংশ শুল্ক দিতে হত। আপাতত সেই শুল্ক দিতে হবে না ব্যবসায়ীদের।

Advertisement
০৪ ১৫
Cotton Import Duty

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৫ অগস্ট ঘোষণা করেছিলেন, কৃষক ও ব্যবসায়ীদের গায়ে শুল্ক সংক্রান্ত কোনও আঁচ সরকার লাগতে দেবে না। ঢাল হয়ে দাঁড়াবে কেন্দ্র। সরকারের শুল্ক তুলে নেওয়ার ফলে উপকৃত হবেন বস্ত্রশিল্পের সঙ্গে যুক্ত কয়েক হাজার ব্যবসায়ী। আমেরিকার রফতানির বাজারে ধাক্কা সামলাতে ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে নয়াদিল্লি।

০৫ ১৫
Cotton Import Duty

শুধু কি ভারতীয় ব্যবসায়ীদের স্বার্থ দেখতেই শুল্কছাড়ের ঘোষণার পথে হাঁটল কেন্দ্র? শিল্পমহলের একাংশের ধারণা, ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নতির পথ কিছুটা মসৃণ করতে চায় মোদী সরকার। আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করে ওয়াশিংটনকে ভারতের বার্তা, আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যের পথে সংঘাত চাইছে না ভারত। মার্কিন তুলো রফতানিকারীদের উদ্বেগ কমাতেও সচেষ্ট ভারত।

Advertisement
০৬ ১৫
Cotton Import Duty

ভারত মূলত মুষ্টিমেয় কিছু দেশের সরবরাহকারীর কাছ থেকে তুলো আমদানি করে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় রফতানিকারক দেশ দু’টি হল অস্ট্রেলিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের মার্চ পর্যন্ত তুলা আমদানির পরিমাণ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে ১২০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। এক বছর আগে এই পরিমাণ ৫৭.৯ কোটি ডলার ছিল। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া থেকে ২৫.৮ কোটি ডলার, আমেরিকা থেকে ২৩.৪ কোটি ডলার, ব্রাজিল থেকে ১৮.১ কোটি ডলার এবং মিশর থেকে ১১.৬ কোটি ডলার মূল্যের তুলো ভারতে আমদানি করা হয়েছে।

০৭ ১৫
Cotton Import Duty

শুল্কছাড়ে সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্য বিরোধীদের বক্তব্য অন্য। বিরোধীমহলের ধারণা, ট্রাম্পের শুল্ক-জুজুতে ভয় পেয়ে মাথা ঝুঁকিয়েছে নয়াদিল্লি। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে সন্তুষ্ট করতে দেশীয় তুলোচাষিদের বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে সরকার।

Advertisement
০৮ ১৫
Cotton Import Duty

আমেরিকার তুলো দেশীয় তুলোর থেকে গুণমানে উন্নত। আমদানি শুল্ক কমালে দেশের বস্ত্রশিল্পে সেই তুলো ব্যবহারের প্রবণতা আরও বাড়বে। বেশি দাম দিয়ে দেশের তুলো কেনার উৎসাহে ভাটা পড়বে বলে দাবি বিরোধীদের। সে ক্ষেত্রে মার খাবেন দেশীয় তুলা উ়ৎপাদনকারীরা।

০৯ ১৫
Cotton Import Duty

‘ইন্ডিয়ান কটন ফেডারেশন’-এর সচিব নিশান্ত আশেরের মতে, ২০২৪-২৫ সালের তুলোর মরসুমে (অক্টোবর থেকে সেপ্টেম্বর) ভারত ৩৯ লক্ষ বেল তুলো আমদানি করেছে। প্রায় দু’লক্ষ বেল তুলো এখনও আমদানির পথে রয়েছে বলে ধারণা।

১০ ১৫
Cotton Import Duty

কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বস্ত্রশিল্পে বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতার নিরিখে ভারত ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তুলোর দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। ফলে বস্ত্র উৎপাদনের পর তার দামও বাড়ছে। কফিনে শেষ পেরেক পোঁতার মতো অবস্থা হয়েছে ট্রাম্পের বাড়তি শুল্ক ঘোষণার পর। দামের নিরিখে মার্কিন বাজারে মার খাচ্ছে ভারতীয় পণ্য।

১১ ১৫
Cotton Import Duty

ভারতের পোশাক রফতানিকারকদের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার। উচ্চ শুল্কের কারণে বহু অর্ডার বাতিল হচ্ছে সেখানে। ভারতের বস্ত্র ব্যবসায়ীদের মূলত তিনটি দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হতে হচ্ছে। ভারতের তুলনায় পড়শি দেশ চিন ও বাংলাদেশের পণ্য তুলনামূলক সস্তা হওয়ায় আমেরিকাবাসীরা এই দুই দেশে নির্মিত পোশাকের দিকেই ঝুঁকতে বাধ্য হচ্ছেন। এই প্রতিযোগিতায় মাথা গলিয়েছে ভিয়েতনামও।

১২ ১৫
Cotton Import Duty

ভারতীয় পণ্যের উপর মার্কিন সরকার ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপালেও বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের ক্ষেত্রে শুল্ক রয়েছে ২০ শতাংশ। আমেরিকার সঙ্গে চিন সরাসরি সংঘাতে নামলেও তাদের উপর ৩০ শতাংশের বেশি শুল্ক চাপায়নি ট্রাম্প সরকার। ফলে শুল্কযুদ্ধের আবহে অ্যামাজ়ন, ওয়ালমার্টের মতো রিটেল সংস্থা ইতিমধ্যেই ভারতের পণ্যের অর্ডার বাতিল করতে শুরু করে দিয়েছে বলে খবর।

১৩ ১৫
Cotton Import Duty

এতে বিপদে পড়েছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। আমেরিকার বাজারে রফতানিতে ধাক্কা খেয়েছেন অনেকে। কী ভাবে এই ধাক্কা সামলানো সম্ভব, তার পথ খুঁজছেন ব্যবসায়ীরা। আমেরিকা পণ্যের উপরে ২৫ শতাংশ এবং তার উপরে ২৫ শতাংশ বর্ধিত শুল্ক— সব মিলিয়ে যদি ৫০ শতাংশ করের বোঝা চাপে, তা হলে ভারতের বস্ত্রশিল্পে বড় ধাক্কা লাগবে।

১৪ ১৫
Cotton Import Duty

বস্ত্রশিল্পের মতো ক্ষেত্রে যেখানে বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থান হয়, সেখানে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। অনেকে মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী বার্তা দিতে চাইছেন যে, তিনি দেশের কৃষক ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষা করতে চাইছেন।

১৫ ১৫
Cotton Import Duty

সরকারি সূত্রে বলা হয়েছে, শুল্ক প্রত্যাহারের এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হল কাঁচা তুলোর দাম স্থিতিশীল করা। ভারতে তৈরি টেক্সটাইল পণ্যের উপর মুদ্রাস্ফীতির চাপ কমানো। দামের অস্থিরতার জন্য লড়াই করে চলা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলিকে রক্ষা করা।

সব ছবি : সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি