Mohamed Alabbar

মুক্তো চাষ করতেন বাবা, বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ইমারত গড়েন পুত্র! দুবাইয়ের ধনকুবেরের সম্পদ ১৮ হাজার কোটি টাকার

শৈশব থেকেই সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছোনোর তীব্র আকাঙ্ক্ষা ছিল তাঁর। পারিবারিক ব্যবসার বাইরে গিয়ে নিজের পরিচিতি গড়ে তোলার জন্য দুবাই ছেড়ে আমেরিকা পাড়ি দেন। ১৯৮১ সালে যখন তিনি দেশে ফিরে আসেন তখন তাঁর কাছে ছিল একটি মাত্র ডিগ্রি ও দু’চোখ ভরা স্বপ্ন।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৫ ১১:৩২
০১ ১৫
Mohamed Alabbar

বিশ্বের অন্যতম বিস্ময় বলে ধরা হয় এই ইমারতটিকে। বিশ্বের উচ্চতম স্কাইস্ক্র্যাপার দুবাইয়ের বুর্জ খলিফা। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির অন্যতম আকর্ষণ গগনচুম্বী এই বহুতলটি নিয়ে পৃথিবী জুড়ে উন্মাদনার শেষ নেই। ১৬৩তলার এই স্কাইস্ক্র্যাপারটির মালিকানা রয়েছে এমার প্রপার্টিজ়ের হাতে। সেই সংস্থাটি তৈরির পিছনে হাত রয়েছে দুবাইয়েরই এক ভূমিপুত্রের।

০২ ১৫
Mohamed Alabbar

সাধারণ এক জেলের পরিবার থেকে উঠে আসা এক ব্যক্তির আকাশ ছোঁয়ার গল্প। বাবার ছিল উপসাগর জুড়ে খেজুরচাষ ও মুক্তোচাষের ব্যবসা। সাদামাঠা পরিবারের সেই সন্তান আজ প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকার মালিক। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির প্রথম কুড়ি জন ধনকুবেরের তালিকায় নাম রয়েছে তাঁর। তিনি মহম্মদ আলাব্বর।

০৩ ১৫
Mohamed Alabbar

বেশ বড় পরিবার আলাব্বরের। ১২ ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। ভাইবোনের সঙ্গে একটি ঘরেই কেটেছে ছোটবেলা। শৈশব থেকেই সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছোনোর তীব্র আকাঙ্ক্ষা ছিল তাঁর। পারিবারিক ব্যবসার বাইরে গিয়ে নিজের পরিচিতি গড়ে তোলার জন্য দুবাই ছেড়ে আমেরিকা পাড়ি দেন। সেখানে সিয়াটল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন আলাব্বর। ১৯৮১ সালে বিজ়নেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে ডিগ্রি অর্জন করেন।

Advertisement
০৪ ১৫
Mohamed Alabbar

সেই শিক্ষাই পরবর্তী কালে একটি সংস্থা চালানোর প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা জুগিয়েছিল। স্বপ্নকে কী ভাবে কৌশল, পরিকাঠামো ও শৃঙ্খলার সঙ্গে গাঁথতে হয় তা শিখিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ। পুরনো দুবাই যখন খোলস ছেড়ে আধুনিকতার দিকে রূপান্তরিত হচ্ছে সেই সন্ধিক্ষণে দেশে ফেরত আসেন আলাব্বর। ১৯৮১ সালে যখন তিনি দেশে ফিরে আসেন তখন তাঁর কাছে ছিল একটি মাত্র ডিগ্রি ও দু’চোখ ভরা স্বপ্ন।

০৫ ১৫
Mohamed Alabbar

ছোটবেলায় আলাব্বর তাঁর বাবাকে ডকে সাহায্য করতেন। পরে তিনি জানিয়েছিলেন সেখান থেকেই তিনি তাঁর প্রথম ব্যবসায়িক পাঠ শিখেছিলেন। বাবা তাঁকে শিখিয়েছিলেন সময় ও শৃঙ্খলা সাফল্যের মূলমন্ত্র।

Advertisement
০৬ ১৫
Mohamed Alabbar

দেশে ফিরে আলাব্বর প্রথমে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে চাকরি নেন। অর্থনীতিকে কী ভাবে পরিচালনা করতে হয় ও ব্যবসার পুঁজি বৃদ্ধির অন্ধিসন্ধি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা লাভ হয় আলাব্বরের। কর্মস্থলে তাঁর দক্ষতা ও বিচক্ষণতা কর্তৃপক্ষের মনোযোগ আকর্ষণ করে। ফলে তিনি অল্প সময়ের মধ্যেই দুবাইয়ের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল হিসাবে নিযুক্ত হন।

০৭ ১৫
Mohamed Alabbar

এর পর সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছোতে পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি দুবাইয়ের অন্যতম শিল্পপতিকে। সাফল্যে উত্থানের পথে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ ঘটে দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের। দুবাইকে আধুনিক শহরে রূপান্তরিত করার জন্য যে দৃষ্টিভঙ্গি মাকতুম পোষণ করতেন তার সঙ্গে আলাব্বরের উচ্চাকাঙ্ক্ষা সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল।

Advertisement
০৮ ১৫
Mohamed Alabbar

১৯৯৭ সালে যখন আলাব্বর এমার প্রপার্টিজ় প্রতিষ্ঠা করেন, সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে বহু পরিচিতেরাই উপহাস করেছিলেন। দুবাইয়ের রিয়্যাল এস্টেট বাজার তখন সবেমাত্র হাঁটি হাঁটি পা করে এগিয়ে চলার চেষ্টা করছিল। কিন্তু আলাব্বর পরিকল্পনা করেছিলেন দীর্ঘমেয়াদে। তিনি শুধুমাত্র নির্মাণশিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছিলেন না। তাঁর পরিকল্পনা ছিল এই ক্ষেত্রে নিজের সাম্রাজ্য গড়ে তোলা।

০৯ ১৫
Mohamed Alabbar

তাঁর স্বপ্নপূরণে হাত মিলিয়েছিলেন দুবাইয়ের শাসক। দু’জনে মিলে দুবাইয়ের খোলনলচে বদলে ফেলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ জোট গঠন করেন। এই অংশীদারি দুবাইকে বিশ্বব্যাপী পর্যটন এবং ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

১০ ১৫
Mohamed Alabbar

আলাব্বরের তত্ত্বাবধানে এমার প্রপার্টিজ় শহরের সবচেয়ে বিখ্যাত কিছু স্থাপত্য তৈরি করে যা সমালোচকদের মুখ পরবর্তী কালে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। এর মধ্যে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ইমারত বুর্জ খলিফা এবং দুবাই মল ও দুবাই ফাউন্টেন। আলাব্বরের কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি সংস্থাটির উন্নতিতে সাহায্য করেছিল।

১১ ১৫
Mohamed Alabbar

২০১০-এ নির্মাণকাজ শেষ হয় বৈগ্রহিক এই বহুতলের। তাইওয়ানের ১,৬৭০ ফুট উঁচু তাইপেই টাওয়ারের থেকে বিশ্বের উচ্চতম অট্টালিকার খেতাব ছিনিয়ে নেয় বুর্জ খলিফা। বুর্জ খলিফার উচ্চতা ৮২৮ মিটার। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এখানে অ্যাপার্টমেন্ট এবং স্টুডিয়ো মিলিয়ে মোট বাসস্থানের সংখ্যা ৯০০। তাতে ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ থাকেন।

১২ ১৫
Mohamed Alabbar

বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান সংস্থাগুলির মধ্যে একটি হল আলাব্বরের এমার। সংস্থাটির হাতে রয়েছে ৪ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি সম্পদ। আকাশচুম্বী নির্মাণের উদাহরণ তৈরি করেই থেমে যেতে চায়নি আলাব্বরের প্রকল্পের ঘোড়া। তাঁর ব্যবসায়িক উচ্চাকাঙ্ক্ষা রিয়্যাল এস্টেটের বাইরেও বিস্তৃত। ২০১৬ সালে, তিনি পশ্চিম এশিয়ার বাজার ধরতে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম নুন ডট কম চালু করেন। মূলত অ্যামাজ়নের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্যই তিনি ই-কমার্সের দুনিয়ায় পা রাখেন।

১৩ ১৫
Mohamed Alabbar

কোনও সাম্রাজ্যই বাধাহীন ভাবে এগোতে পারে না। ভারতে এমারের পা রাখা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আইনি তদন্তের মুখে পড়তে হয়েছে আলাব্বরের সংস্থাকে। গুরুগ্রাম এবং হায়দরাবাদে কার্যক্রম স্থগিত করে রাখা হয়েছে। আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে সংস্থাটি। ৮৩৪ কোটি টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি।

১৪ ১৫
Mohamed Alabbar

আলাব্বরের বেশির ভাগ সম্পদের উৎস হল আমেরিকানা রেস্তরাঁ। পশ্চিম এশিয়ার খ্যাতনামী ফাস্ট ফুড ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির মালিক তিনি। ২০১৪ সালে আলাব্বর আবু ধাবিতে ইগল হিলস প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংস্থাটিও বিশ্ব জুড়ে উচ্চমানের আবাসন প্রকল্প তৈরি করে থাকে। ২০০২ সাল থেকে এমারও বিশ্ব জুড়ে ১ লক্ষ ২ হাজারেরও বেশি বাড়ি তৈরি করেছে।

১৫ ১৫
Mohamed Alabbar

২০২৪ সালে ফোর্বসের বিচারে পশ্চিম এশিয়ার সবচেয়ে প্রভাবশালী রিয়্যাল এস্টেট নেতা হিসাবে মনোনীত করা হয় আলাব্বরকে।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি