Tattoo gang of Bengaluru

ধরিয়ে দিল এক জোড়া এয়ারপড, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশের জালে জিম প্রশিক্ষক তরুণী ও কুখ্যাত ‘ট্যাটু গ্যাং’

তিন জনের দলটি উদ্দেশ্যহীন ভাবে ট্রেনে চড়ে ঘুরে বে়ড়াতেন। হঠাৎ করেই যে কোনও স্টেশনে নেমে পড়তেন তাঁরা। স্টেশনে নেমেই যে কাজটা প্রথমে করতেন সেটি হল তাঁদের মোবাইল ফোন বন্ধ করা। ফাঁকা ও অন্ধকার বাড়িগুলির তালা ভেঙে কয়েক মিনিটের মধ্যে হাতের কাছে যা পেতেন তাই লুট করে নিয়ে বেরিয়ে আসতেন তাঁরা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৫ ১৩:০২
০১ ১৩
Tattoo gang of Bengaluru

রেললাইনের ধারের ফাঁকা বাড়িগুলিই ছিল ‘টার্গেট’। জনশূন্য বাড়িতে ঢুকে কয়েক মিনিটের মধ্যে হামলা চালিয়ে সাফ করে দিত ডাকাতদলটি। ডাকাতির জন্য বিশেষ কয়েকটি পন্থা বেছে নিয়েছিল ডাকাতেরা। প্রতি বার ডাকাতি করার জন্য ব্যবহার করত গাঢ় রঙের পোশাক। পরত গ্লাভসও। স্কার্ফ, মাঙ্কি ক্যাপ দিয়ে মুখ ঢেকে রাখত।

০২ ১৩
Tattoo gang of Bengaluru

তালা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে ১০ মিনিটের মধ্যে হাতের কাছে যা পেত তাই তুলে নিয়ে চম্পট দিত ডাকাতদল। বেঙ্গালুরুর বেশ কয়েকটি ফাঁকা বাড়িতে ডাকাতির ঘটনার পর পুলিশের টনক নড়ে যায়। সম্প্রতি শহরের উপকণ্ঠে দোদ্দাবল্লাপুরার একটি তালাবন্ধ বাড়িতে ৮ লক্ষ টাকার মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করার কয়েক ঘণ্টা পরে পুলিশ চার জনের একটি ডাকাতদলকে গ্রেফতার করে।

০৩ ১৩
Tattoo gang of Bengaluru

তদন্তে উঠে আসে রেললাইনের ধারে ফাঁকা বাড়িতে ডাকাতির ঘটনার নেপথ্যে হাত রয়েছে এই দলটির। চার জন অভিযুক্তের মধ্যে এক জন তরুণীও রয়েছেন। দলটি মূলত চালাতেন পুরুষোত্তম এম নামের এক ২২ বছরের তরুণ। যিনি নিজেকে জিমের প্রশিক্ষক বলে দাবি করেছেন তিনি পুরুষোত্তমের বান্ধবী। নাম সৌভাগ্য বিএইচ ওরফে লতা, বয়স ২৪। দলে রয়েছেন দর্শন ওরফে সত্য নামের ২০ বছরের আর এক তরুণ এবং বছর ২৪-এর চন্দ্রু।

Advertisement
০৪ ১৩
Tattoo gang of Bengaluru

১২ দিন আগে হোসুর রোডের কুডলুতে তাঁদের ভাড়া করা একটি ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মাত্র কয়েক দিন আগে তাঁরা টুমকুরুর একটি চুরির মামলা থেকে রেহাই পেয়েছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশি জেরায় উঠে এসেছে ডাকাতদলের ‘মোডাস অপারেন্ডি’। তাঁদের কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, তিন জন ব্যক্তি রাতে রেললাইনের ধারে বাড়িগুলিকে লক্ষ্য করে হামলা চালাত।

০৫ ১৩
Tattoo gang of Bengaluru

তিন জনের দলটি উদ্দেশ্যহীন ভাবে ট্রেনে চড়ে ঘুরে বে়ড়াতেন। হঠাৎ করেই যে কোনও স্টেশনে নেমে পড়তেন তাঁরা। স্টেশনে নেমেই যে কাজটা প্রথমে করতেন সেটি হল তাঁদের মোবাইল ফোন বন্ধ করা। তার পর এক কিলোমিটারেরও বেশি রেললাইন ধরে হেঁটে যেতেন এবং তাঁদের জুতো ফেলে রাখতেন।

Advertisement
০৬ ১৩
Tattoo gang of Bengaluru

রেললাইনের ধার দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে তাঁরা ফাঁকা ও অন্ধকার বাড়িগুলির দিকে নজর রাখতেন। তালা ভেঙে ঢোকার পর কয়েক মিনিটের মধ্যে হাতের কাছে যা পেতেন তা-ই লুট করে নিয়ে বেরিয়ে আসতেন ওই তিন জন। ডাকাতি সেরে রেললাইন বরাবর হাঁটতে হাঁটতে তাঁরা যেখানে তাঁদের জুতো ছেড়ে রেখে যেতেন সেখানে ফিরে আসতেন। তার পর হেঁটে স্টেশনে ফিরে যেতেন এবং অন্য ট্রেনে চড়তেন।

০৭ ১৩
Tattoo gang of Bengaluru

পুলিশের মতে, এই দলটি ট্রেন ট্র্যাক করার জন্য একটি অ্যাপও ব্যবহার করত। তিন জন ঘুরে ঘুরে ডাকাতি করলেও পুরুষোত্তমের বান্ধবী সৌভাগ্য কখনও সরাসরি ডাকাতিতে অংশ নেননি বলে জানা গিয়েছে। তাঁর কাজ ছিল ডাকাতি বা চুরি করে আনা মূল্যবান জিনিসপত্র বিক্রির ব্যবস্থা করা। গা-ঢাকা দেওয়ার জন্য বাড়িভাড়ার বন্দোবস্ত করা এবং জামিনের জন্য আইনজীবী খুঁজতেও সাহায্য করতেন জিম প্রশিক্ষক তরুণী।

Advertisement
০৮ ১৩
Tattoo gang of Bengaluru

১৭ সেপ্টেম্বর এক নববিবাহিত দম্পতির বাড়ি থেকে ৮ লক্ষ টাকার সোনার অলঙ্কার, রুপোর নূপুর এবং এয়ারপড চুরি যাওয়ার পর তদন্তে নামে পুলিশ। সূত্র ধরে চার জনের দলটির হদিস পায় তারা। দোদ্দাবল্লাপুরার টিবি ক্রস অঞ্চলের নারায়ণপ্পা বাদাভানের বাসিন্দা দিব্যাশ্রী জি এবং তাঁর স্বামীর অনুপস্থিতিতে বাড়ি থেকে খোয়া যায় লক্ষ লক্ষ টাকার অলঙ্কার ও মূল্যবান জিনিসপত্র।

০৯ ১৩
Tattoo gang of Bengaluru

) চুরি যাওয়া এয়ারপডগুলির সাহায্যেই পুলিশ ডাকাতদলকে পাকড়াও করতে সমর্থ হয়। ডাকাতদলের একজন চুরি করা এয়ারপড ব্যবহার শুরু করতেই তা বুঝতে পারেন পডটির মালিক দিব্যাশ্রী। ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার পরে সেটির ‘লোকেশন ট্র্যাক’ করে কুডলুর একটি অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছে যায় পুলিশ। ১৭ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে দোদ্দাবল্লাপুরা পুলিশের একটি দল দুষ্কৃতীদের ফ্ল্যাটে হানা দেয়। দম্পতির চুরি যাওয়া মূল্যবান জিনিসপত্র উদ্ধার হয় সেই ফ্ল্যাট থেকে।

১০ ১৩
Tattoo gang of Bengaluru

পুলিশ জেনেছে, বেঙ্গালুরু–সহ হুব্বালি, ধারওয়ার্দ, তুমকুরু এবং তেলঙ্গানায় এই দলটি ট্রেনে চড়ে ঘুরে ঘুরে শিকার করত। এঁরা সকলেই দাভানগেরের বাসিন্দা এবং দলের সদস্যদের হাতে, বুকে একই নকশার ট্যাটু আঁকা রয়েছে। তাঁদের সকলের বুকে ট্যাটুতে ‘টিচ পিস’ এবং ডান হাতে ৩১৩ সংখ্যাটি লেখা আছে।

১১ ১৩
Tattoo gang of Bengaluru

পুরুষোত্তম, যিনি নিজেকে এক জন ক্যাটারিং সংস্থার কর্মী বলে দাবি করেছেন, পুলিশের খাতায় তিনি দাগী অপরাধী বলে চিহ্নিত। পুরুষোত্তমের মাথায় কিশোর বয়সে এক ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগ ঝুলে রয়েছে। দর্শন নামের সদস্য বিবিএ পড়া মাঝপথে ছেড়ে এই দলে যোগ দেন। তাঁর বিরুদ্ধে ১০টি মামলার অভিযোগ রয়েছে। আর শেষ সদস্য চন্দ্রু স্কুলছুট, একটি গ্যারেজে কাজ করেন।

১২ ১৩
Tattoo gang of Bengaluru

তুমকুরুতে চুরি যাওয়া সোনা বিক্রি করে তাঁরা ১২ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন এবং তার পরে সকলে মিলে কেরলে বেড়াতে চলে যান। চুরির টাকা আট দিনের মধ্যে নিঃশেষ করে তাঁরা বেঙ্গালুরু ফিরে আসেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন ডাকাতেরা। পুরুষোত্তম, দর্শন এবং চন্দ্রু, যাঁদের আগে তুমকুরু পুলিশ গ্রেফতার করেছিল, তাঁরা সৌভাগ্যের সহায়তায় জামিনে বেরিয়ে এসেছিলেন।

১৩ ১৩
Tattoo gang of Bengaluru

দোদ্দাবল্লাপুর পুলিশ আটক করার পর সৌভাগ্যকে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেখান থেকে পালিয়ে বেঙ্গালুরুর পুলিশ সুপার সিকে বাবার সঙ্গে দেখা করেন। গ্রেফতারির পর পুলিশ আধিকারিকেরা তাঁকে যৌন হয়রানি করেছেন বলে অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর সোনার অলঙ্কার কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন। তদন্তের সময় তাঁর দাবি মিথ্যা প্রমাণিত হয়।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি