কোন মানুষ কেমন প্রকৃতির তার অনেকটাই উক্ত মানুষের রাশি বিচার করে বলে দেওয়া সম্ভব। শাস্ত্রমতে, প্রতিটি ব্যক্তির মধ্যেই এমন কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা তাঁদের রাশি থেকে পাওয়া। অর্থাৎ, তাঁদের রাশির মধ্যে নির্দিষ্ট গুণটি দেখা যায় বলেই তাঁরা এই রকম। সেটাই দাবি করছে জ্যোতিষশাস্ত্র।
সব মানুষের মধ্যে মুখে মুখে কথা বলার ক্ষমতা থাকে না। যাঁদের এই ক্ষমতা নেই, তাঁদের নানা ক্ষেত্রেই সমস্যায় পড়তে হয়। অনেক সময় এই কারণে তাঁরা পিছিয়েও পড়েন বা দোষ না করেই ফেঁসে যান। কিন্তু কিছু মানুষ রয়েছেন যাঁরা নিজেদের তর্ক করার ক্ষমতার জোরে সকলকে ছাপিয়ে যান।
আমাদের আশপাশে এমন বহু মানুষ রয়েছেন যাঁদের মতো মুখে মুখে কথা বলার ক্ষমতা প্রায় কারও নেই। তাঁদের সঙ্গে তর্কে জড়ালে হার নিশ্চিত। যে কোনও বিষয় নিয়ে তর্কাতর্কি করার জন্য এঁরা সর্বদা প্রস্তুত। কেবল নিজের জন্যই না, তাঁদের কাছের মানুষেরা সে রূপ কোনও পরিস্থিতিতে পড়লেও এঁরা তর্কে নামতে রাজি আছেন।
জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, পাঁচ রাশি রয়েছে যারা ঝগড়া করার ব্যাপারে ওস্তাদ। কথার লড়াইয়ে এরা হারতে শেখেনি। বরং যে কোনও বিষয় নিয়ে তর্কাতর্কি করতে এরা সদাপ্রস্তুত। তালিকায় কোন কোন রাশি রয়েছে দেখে নিন।
মেষ: রাশিচক্রের প্রথম রাশি মেষ স্বভাবতই ভীষণ প্রতিযোগিতামূলক। এরা খেলার মাঠে জেতার জন্যই নামে। আর লড়াইটা যদি তর্কের হয়, তা হলে তো কোনও কথাই নেই। এদের চুপ করানোর সাধ্যি প্রায় কারও নেই। তর্কের লড়াইয়ে এরা জিতেই ফেরে।
মেষ রাশির জাতক-জাতিকাদের উত্তর সর্বদা জিভের গোড়ায় লেগে থাকে। কারও কোনও কথা বা কাজ পছন্দ না হলেই এঁরা ঝগড়া করতে এগিয়ে যান। সেই কারণে বন্ধুমহলে সবাই এঁদের সমঝেই চলেন। যুক্তি সাজিয়ে কথা বলার বিষয়ে এঁরা পটু। তাই এঁদের সঙ্গে পেরে ওঠা যায় না।
মিথুন: কৌতূহলী মিথুন রাশির জাতক-জাতিকারাও ঝগড়া করার ব্যাপারে পিছিয়ে নেই। বুধ এই রাশির জাতক গ্রহ। এঁরা নিজের পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের প্রতি খুব সংবেদনশীল হন। এঁদের সঙ্গে কেউ খারাপ করলে এঁরা চুপ করে সেটা সহ্য করেন না। ছুটে যান প্রতিবাদ করতে।
তবে নিজেদের সঙ্গে হওয়া অন্যায়কেও মুখ বুজে সহ্য করেন না এঁরা। যেটা এঁদের পছন্দ হয় না, সেটা এঁরা মুখের উপর বলে দিতে পছন্দ করেন। তার জন্য যদি বাগ্বিতণ্ডার পরিস্থিতিও তৈরি হয়, তাতেও এঁদের কিছু যায়-আসে না। কারণ এঁরা জানেন যে এঁদের ঝগড়ুটে স্বভাবের সামনে অন্যেরা টিকতে পারবেন না।
সিংহ: অযৌক্তিক কথা বলে ঝগড়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সিংহ রাশির ব্যক্তিদের জুড়ি মেলা ভার। এঁরা নিজেদের শ্রেষ্ঠ মনে করেন। ফলত নিজেরা যে কখনও ভুলও হতে পারেন সেটা সিংহ রাশির জাতক-জাতিকারা মেনে নিতে পারেন না। এঁদের বিপরীত পক্ষে থাকা মানুষের কাছে এঁরা হারতে নারাজ।
নিজের ভুল সিংহ রাশির ব্যক্তিরা কখনও স্বীকার করেন না। কিন্তু অপর ব্যক্তি কোনও ভুলও এঁরা সহ্য করেন না। হুল ফোটানো কথা বলে অপর মানুষটিকে কাঁদিয়ে ছাড়েন। সূর্যের রাশি সিংহের তেজও খানিকটা সূর্যেরই মতো। তাই এঁদের সঙ্গে যুদ্ধের ময়দানে নামলে ভাগ্যে হারই থাকে।
কন্যা: ঝগড়ার ময়দানে পিছু হাঁটেন না কন্যা রাশির জাতক-জাতিকারাও। এঁদের ন্যায়বোধ অত্যন্ত প্রবল। কোথাও কোনও ভুল হতে দেখলে এঁরা চুপ করে থাকতে পারেন না। সেই কারণে এই রাশির ব্যক্তিদের ভাগ্যে ঝগড়ুটে তকমা জোটে। কিন্তু তাতে এঁদের কিছু যায়-আসে না।
তর্কের লড়াইয়ে অপর পক্ষকে চুপ করানো না পর্যন্ত কন্যা রাশির জাতক-জাতিকারা থামেন না। লড়াইকে যত দূর টেনে নিয়ে যাওয়া যায়, এঁরা তত দূর টেনে নিয়ে যেতে রাজি আছেন। কোনও মতেই হার স্বীকার করতে রাজি নন কন্যা রাশির ব্যক্তিরা। অপরকে ভুল প্রমাণ করে এঁরা উৎকট আনন্দ পান।
বৃশ্চিক: বৃশ্চিক রাশির ব্যক্তিরা আবার যেচে কারও সঙ্গে ঝগড়া করতে যান না। মাথা গরম করা এঁদের রাশিগত প্রকৃতিতে নেই। কিন্তু অপরকে ঝগড়া করার জন্য উস্কানোর ব্যাপারে এঁরা সকলের থেকে এগিয়ে থাকেন। এই রাশির মানুষেরা এমন কথা বলেন যাতে বিপরীত পক্ষে থাকা ব্যক্তি রাগতে বাধ্য হন।
যদিও বৃশ্চিকের সঙ্গে ঝগড়ায় জড়ালে হার অপর পক্ষেরই হয়। কারণ এঁদের কথার দৃঢ়তার সামনে অপরের বাক্যের কোনও জোর থাকে না। বেশি কথা বলতে পছন্দ করেন না বৃশ্চিক রাশির ব্যক্তিরা। কিন্তু এঁদের অল্প কথার তীক্ষ্ণতার সামনে অপর পক্ষ চুপ করে হার স্বীকার করে নিতে বাধ্য হন।
সব ছবি: সংগৃহীত।