ছবি: কুনাল বর্মণ।
বোগেনভিলিয়া নিখোঁজ। আজ টিফিন টাইমের পরেই নাকি এই ঘটনা। তন্নতন্ন করে খুঁজে দেখা হয়েছে স্কুলে, কোথাও নেই। প্রিন্সিপাল ম্যামের ফোন এসেছিল একটু আগে। ল্যান্ডলাইনে সে খবর শুনেই ও বাড়ির কাজের মাসি
ছুটে এসেছে। আমরা মুখোমুখি বাড়ির বাসিন্দা।
শুনে তো বিশ্বাসই করতে পারলাম না! এই তো দেখলাম আজ, মেয়েটা তখন স্কুল যাচ্ছে। তবে পুল-কারে ওঠার সময় আজ যেন মুখটায় বাদুলে মেঘ ছিল। হাতে একটা খেলনা তালা-চাবির মতো জিনিস। অন্যমনস্ক চাহনি। নিলিকে অমন দেখলে কষ্ট হয়। এত মিষ্টি! বয়স, বছর দশেক হবে।
ও, বলা হয়নি, নিলিই আমার বোগেনভিলিয়া। ওই যে রোজ যখন ও দাঁত ব্রাশ করতে নিজের ব্যালকনিতে দাঁড়ায়, আর ওদের টবের এক থোকা বোগেনভিলিয়া ওর ফর্সা গালের পাশে লতিয়ে থাকে, আহ্! সে যে কী মিষ্টি ছবি! সেই থেকে মেয়েটার নাম দিয়েছি বোগেনভিলিয়া।
স্কুলের নাম অবশ্য নীলাক্ষী। মা নীলা আর বাবা, ইন্দ্রনীল। তিন জনের নামেই বেশ একটা আকাশরঙা নীল আছে। অথচ সেই আকাশে বিছিন্ন হয়ে ওরা তিন টুকরো মেঘ হয়ে ভেসে বেড়ায়। প্রতিবেশী তো, কানাঘুষোয় খবর পাই, ইন্দ্রনীল আর নীলার মধ্যে নাকি সাইলেন্ট ডিভোর্স। মানে আইনি বিচ্ছেদ হয়নি, অথচ মানসিক ভাবে বিচ্ছিন্ন। একই বাড়ি, কিন্তু খাওয়াদাওয়া, শোওয়া সব আলাদা।
ক’দিন আগে নিলি হঠাৎ হাজির আমার ফ্ল্যাটে, বলল, “ভাল আন্টি, তোমাদের মতো আমিও সুইৎজ়ারল্যান্ড, ভেনিস ঘুরতে যাব। তোমার মোবাইলটা দাও তো ভাল আন্টি, ছবিগুলো দেখব।”
“কোন ছবি রে?”
“ওই যে ভেনিসে তোমরা গ্র্যান্ড ক্যানালে ভেসে ভেসে গন্ডোলা
রাইড করেছ, উপরে দিয়ে লম্বা ব্রিজ চলে গেছে।”
মোবাইলটা হাতে দিতেই ও হামলে পড়ে ছবিগুলো জ়ুম করে করে দেখতে শুরু করে। তার পর গম্ভীর হয়ে কী যেন ভাবতে বসল, “আচ্ছা ভাল আন্টি, ও দেশে ঘুরতে অনেক টাকা লাগে?”
“তা তো লাগে। তুমি বাবা-মাকে বলো না, নিয়ে যাবে।”
“যাবেই না। আমাকে নিয়ে এক সঙ্গে ওরা কোথাও বেরোয় না।”
আমি সে দিন আর কী বলব, বুঝতে পারিনি।
আজ স্কুল থেকে খবর আসার আধ ঘণ্টার মধ্যে দু’জনেই অফিস থেকে দুদ্দাড় করে ফিরে এসেছে বাড়ি। মুখে আতঙ্ক। আমি গেলাম ওদের ফ্ল্যাটে। বিপদের দিনে কাছে না দাঁড়ালে হয়? তা ছাড়া মেয়েটা আমার বড় ন্যাওটা। আলমারি খুলে ওরা টাকাপয়সা, আর কী কী সব জরুরি জিনিস নিয়ে স্কুলে ছুটল। আমিও গেলাম সঙ্গে।
*****
স্কুলে পৌঁছে তো আমরা হাঁ। শুধু বোগেনভিলিয়া নয়, ক্লাস নাইনের তুলিকা রায়, সেও নিখোঁজ। এই দু’জনের মধ্যে নাকি ভীষণ বন্ধুত্ব। অসমবয়সি, তবু… নিলি তো সবে ক্লাস ফাইভ।
টিফিন ব্রেকে বাগানের দিকে ওরা নাকি একটা গাছতলায় বসে, টিফিন ভাগাভাগি করে খায়। খবরটা দিল তিওয়ারি, স্কুলের দারোয়ান।
প্রিন্সিপাল ম্যামের ঘরেই আমরা এখন বসে আছি। এক জন খবর দিয়ে গেল, সিসি ক্যামেরায় দেখা গেছে টিফিন ব্রেকে ওরা দু’জন হাত ধরাধরি করে চলে যাচ্ছে বাগানের দিকে। তার পর আর কোনও ফুটেজ
পাওয়া যায়নি।
একটু পরেই হাঁপাতে হাঁপাতে ঢুকল তুলিকার মা। নিজেই হাতজোড় করে পরিচয় দিল।
প্রিন্সিপাল এ বার এক ছিপছিপে তন্বী চেহারার মহিলাকে ডেকে পাঠালেন। পরিচয় করিয়ে দিলেন আমাদের সঙ্গে, “ও সুধন্যা, আমাদের স্কুলের সাইকোলজিস্ট। কোনও ছাত্রীর কাউন্সেলিং প্রয়োজন পড়লে, আমরা সুধন্যার কাছে পাঠাই। আচ্ছা সুধন্যা, এই দু’টি মেয়েকে কি কখনও আলাদা করে আইডেন্টিফাই করেছ?”
“করেছি ম্যাম,” বলেই সুধন্যা আড়ে আড়ে সবার দিকে তাকাচ্ছে। আমরা অস্বস্তিতে। কী বলতে চায় ও?
আমতা আমতা করে সুধন্যা বলে, “দুটো মেয়েরই ফ্যামিলি লাইফ খুব ডিস্টার্বড। ছোট হলেও ওরা খুব সেনসিটিভ। সব সময় মুষড়ে থাকে, কারও সঙ্গে সে ভাবে মেশে না। শুধু দু’জন দু’জনকে পেলে…”
প্রিন্সিপালের ভ্রুতে ভাঁজ, “কেন, কী হয়েছে?”
“তুলিকা, ডিভোর্সি বাবা-মায়ের সন্তান। তবে এ ব্যাপারে আমার কাছেও ও প্রথমে ওপন-আপ করতে চাইত না। এ দিকে নীলাক্ষীর পেরেন্টসও… ওদের দু’জনের এই বন্ধুত্ব, স্কুলের একটা ড্রামা কম্পিটিশন থেকে শুরু। সেখানে ওরা দু’জন, দিদি আর বোনের পার্ট প্লে করেছিল।”
তিওয়ারি হঠাৎ বলে বসে, “জানেন ম্যাম, ওরা বিদেশ পর্যন্ত ঘুরতে যাবে বলত। এত সাহস! একেবারে প্লেনে উড়ে উড়ে। আমার তো এখন ডর লাগছে, ছেলেধরার দল ওদের বিদেশে নিয়ে যাবে বলে ফুসলে নিয়ে গেল না তো?”
“অ্যাই চুপ করো তো,
অকারণ টেনশন ছড়িয়ো না!” প্রিন্সিপাল ধমকে উঠলেন।
ইতিমধ্যে লোকাল থানার বড়বাবু হাজির। সঙ্গে এক জন
লেডি কনস্টেবল।
“আসুন স্যর,” প্রিন্সিপাল ম্যাম খুব খাতির করে চেয়ারে বসালেন, “ফোনে তো সবই জানিয়েছি। ব্যাপারটাকে প্লিজ় একটু সিক্রেটলি হ্যান্ডল করবেন। আশপাশের লোকের কানে গেলে সর্বনাশ! মিডিয়া পৌঁছতে দেড় মিনিট। তার পর তো স্কুলের একটা ইটও আস্ত থাকবে না।”
বড়বাবু গম্ভীর। লেডি কনস্টেবল কিছু নোট করবেন বলে একটা কাগজ বার করেছেন।
বড়বাবু বললেন, “ঘটনাটা প্রথম থেকে আমাদের বলুন তো! মেয়ে দু’জনের বয়স কত? কোনও অ্যাফেয়ারের চক্কর ছিল নাকি?”
তুলিকার মা এত ক্ষণ রুমালে চোখ চাপা দিয়ে ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদছিল। এ বার তার গলায় জোরদার প্রতিবাদ, “অসম্ভব! আমার মেয়ের ও সব ইয়েটিয়ে নেই। কেসটাকে অন্য দিকে ঘোরানোর চেষ্টা করবেন না।”
বড়বাবু সরাসরি তাকালেন মহিলার দিকে, “তা হলে আপনিই একটু হিন্টস দিন না, মেয়ে দুটো হঠাৎ স্কুল থেকে কোথায় উবে
যেতে পারে?”
“সেটা স্কুল অথরিটি বলতে পারবে। হয়তো টিচাররা ওদের সঙ্গে এমন কোনও দুর্ব্যবহার করেছিল…”
“লিসন, লিসন, মিসেস রয়...” প্রিন্সিপাল চাপা হিসহিসে গলায় বলে উঠলেন, “এই দুটো মেয়ে দুটো আলাদা আলাদা ক্লাসে পড়ে। তা হলে তো ধরে নিতে হবে, ওই দুই ছাত্রীর সঙ্গেই একই দিনে, একই সময় টিচাররা দুর্ব্যবহার করেছে, তাই তারা একই সঙ্গে মনের দুঃখে স্কুল থেকে বেরিয়ে গেছে। ইজ় ইট পসিবল? এ সব আষাঢ়ে গল্প ভাববেন না প্লিজ়। ওসি সাহেব, আপনিই পারবেন ওদের খুঁজে বার করতে, ঘটনাটা মাত্র ঘণ্টা তিনেক আগে ঘটেছে। এর মধ্যে কোথায়ই বা যেতে পারে?”
হঠাৎ ঘরের বাইরে বিরাট হইচই। কী ব্যাপার? আমরা সবাই ঘাড় ফিরিয়ে তাকিয়ে আছি। দেখি, দরজা ঠেলে হাঁপাতে হাঁপাতে ঢুকছে একটা লোক। পরনে একটা খাটো ধুতি।
“কী ব্যাপার, মালীভাই?” প্রিন্সিপাল নিজের চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে পড়েছেন।
“পেয়েছি ম্যাডাম, মেয়েগুলোকে খুঁজে পেয়েছি।”
“কোথায় ওরা?”
“বাইরে। ভয় পাচ্ছে ভিতরে আসতে।”
“ডাকো। ভয় পাওয়ার কিছু নেই।”
দুই শ্রীমতী ঢুকল মাথা নিচু করে। প্রিন্সিপাল আমাদের দিকে তাকিয়ে ফিসফিস করলেন, “কেউ এক্সাইটেড হবেন না। যা বলার
আমি বলব।”
বোগেনভিলিয়া এক বারের জন্য মাথা তুলেছিল। আমার চোখে চোখ পড়তেই মুখ ফ্যাকাসে।
“সিট ডাউন গার্লস। তোমরা কোথায় ছিলে এত ক্ষণ?”
কারও ঠোঁট নড়ল না।
“স্পিক আউট গার্লস। আই প্রমিস, কেউ তোমাদের বকবে না।”
ওরা তবু চুপ।
প্রিন্সিপাল তাকালেন মালীর দিকে, “ওদের কোথায় পেলে?”
“পুকুরপাড়ে। কী করেছে জানেন ম্যাডাম? স্কুলের পিছন দিকে একটা পাঁচিলে ফাটল ধরেছিল, সারানো হচ্ছে। একটা মই লাগানো ছিল মিস্তিরিদের। ওটায় উঠে পাঁচিল টপকে বাইরে বেরিয়ে পুকুরপাড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল।”
“পুকুরপাড়ে? কেন? আনসার মি!” প্রিন্সিপালের রাগী গলাটা হঠাৎ বেরিয়ে এল।
তবু ওরা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মালীভাই বলতে শুরু করল, “স্কুলের ডিউটি শেষ করে সবে পুকুরে চান করতে গেছি, হঠাৎ দেখি ওই দুই মেয়ে। কেমন যেন সন্দেহ হল। জোর করেই ধরে নিয়ে এলাম।”
প্রিন্সিপাল গলা ঝাড়লেন। শান্ত গলায় বললেন, “আচ্ছা, কেউ কি পুকুরপাড়ে তোমাদের ডেকেছিল বা বলেছিল, অপেক্ষা করবে…”
“নো ম্যাম!” নীলাক্ষীই মুখ
খুলল প্রথমে।
“তা হলে? তোমরা কি বোঝো না, দিনকাল কত খারাপ! আজ যদি কিছু হয়ে যেত, তোমাদের বাড়ির লোকদের কী অবস্থা হত বলো তো?”
“কিচ্ছু হত না ম্যাম!” তুলিকার মুখ থেকে এ বার যেন তুবড়ির মতো জবাব ছুটে এসেছে, “আমার বাবা-মা ডোন্ট বদার অ্যাবাউট মাই সরো অর জয়। আমার কিছু হয়ে গেলেও, ওরা নিজেদের মধ্যে ফাইট করে যাবে।” শেষ কথাগুলো বলতে গিয়ে গলায় তার একেবারে মেঘভাঙা বৃষ্টি।
বোগেনভিলিয়া নিজের হাতের চেটো দিয়ে তুলিকার চোখ মোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, “কেঁদো না। প্লিজ়, কেঁদো না। তুমি ভুল জানো দিদি। আমাদের বাবা-মা, আমাদের ভালবাসে, কিন্তু আলাদা আলাদা করে ভালবাসে। এক সঙ্গে নয়। তাই আমরা বুঝতে পারি না ওদের ভালবাসা।” বলেই নিলি আমার মুখের দিকে তাকায়, “তাই না
ভাল আন্টি?”
হেসে ফেললাম। কথাটা মনে আছে মেয়েটার?
“ম্যাম, আমরা পাঁচিল টপকে ওই পুকুরধারে লাভ লকস বাঁধতে গিয়েছিলাম।” নিলি বলল প্রিন্সিপালের দিকে তাকিয়ে।
লাভ লকস মানে? আমরা হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। প্রিন্সিপালের চোখেও প্রশ্ন।
নিলি বলে চলে, “লাভ লকস এক ধরনের তালা-চাবি। আজ ওই পুকুরপাড়ের রেলিংয়ে বাঁধতে গিয়েছিলাম। তুলিকা দিদিই বলেছিল। ও একটা ওয়েব সিরিজ়ে দেখেছে, ভেনিসের গ্র্যান্ড ক্যানালের উপর যে ব্রিজ আছে, সেই রেলিংয়ে যদি কোনও দু’জনের নাম করে তালা-চাবি আটকে দিয়ে আসা যায়, তা হলে আর তাদের মধ্যে কোনও ফাইটিং থাকবে না। তুলিকা দিদি বলে, ওর মা-বাবা তো সেপারেটেড, আর কখনও এক সঙ্গে জুড়বে না, কিন্তু আমার
এখনও নাকি সময় আছে। কিন্তু বেশি দেরি করলে হবে না। তাই লকটা বাঁধতে গিয়েছিলাম...” বলতে বলতে মেয়েটা হাঁপাচ্ছে।
আহা রে! বাচ্চাগুলো ওদের বাবা মা-কে এক সঙ্গে জুড়ে রাখার জন্য, তাদের একত্রিত ভালবাসা পাওয়ার জন্য কত কাঙাল!
“কিন্তু ম্যাম, আমরা ক্যালকুলেট করে দেখেছি, ভেনিস যাওয়ার পয়সা নেই আমাদের। তুলিকা দিদি তখন বলল, ‘তা হলে আর দেরি করিস না। স্কুলের পিছনের পুকুরধারে যে রেলিংটা আছে…’”
ব্যস, নিলি এই পর্যন্ত বলেই থেমে গেছে। অল্প অল্প হাঁপাচ্ছে। আমি পায়ে পায়ে এগিয়ে যাই ওর কাছে। ওর মাথাটা টেনে নিয়ে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরি, “আয় বোগেনভিলিয়া, আমার কাছে আয়।”
ব্যস, মেয়ের চোখ এ বার ভাসাভাসি। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। আজ লক্ষ করলাম, নীলাক্ষীর চোখের মণিটা সত্যিই নীল!
প্রিন্সিপালের রুমে আরও খানিক কথাবার্তার পর বেরিয়ে এসেছি স্কুল থেকে। ইন্দ্র বলে, “চল নিলি, আজ একটু ভিক্টোরিয়া ঘুরে বাড়ি ফিরি।”
“ইয়ে!” শুনেই এক পাক নেচে নিল ও। “ওই পরিটা আছে
তো বাবা?”
“হা হা হা! যাবে কোথায়?”
ইন্দ্র হাসল।
“না, যদি ডানা মেলে উড়ে যায়!”
নীলা মেয়েকে জড়িয়ে ধরে চুমু দিল, “না, ও আর কোথাও যাবে না। এখানেই ঘর বেঁধেছে।”
“কী মজা! কী মজা!” মেয়ের উল্লাস এ বার দেখে কে! “চলো, চলো, এখুনি চলো...” মা আর বাবার দুটো হাত নিজের দু’মুঠিতে নিয়ে এ বার বোগেনভিলিয়া চলতে শুরু করল লাফিয়ে লাফিয়ে।
কত দিন পর তিনটে খুশিয়াল মুখ দেখছি। আহা! পিছন থেকে ডেকে বললাম, “তা হলে এই ভাল আন্টির কাছে এসে আর ভেনিসের গল্প শোনার দরকার নেই তো? আর ভেনিস যাওয়াও…”
“ক্যানসেল!” ঘাড় ফিরিয়ে ফিক করে একটু হাসি দিল নিলি।
মনে হল এক অদৃশ্য তালায়, নীলা আর ইন্দ্রকে বেঁধে নিয়ে চলেছে ও। এটাই কি লাভ লকস? ভালবাসার বন্ধনী। আহ্, কী শান্তি!
এ বার সাধ্য কি ওই তালা ভেঙে কেউ চলে যায়! কিন্তু চাবিটা! যদি কেউ আবার… উঁহু, পুঁচকেটা নিশ্চয়ই ওর বুকের কোটরে পুরে রেখে দিয়েছে ওই তালার চাবি।
অনেক দিন পর মনে হল, মাথার উপর গোটা আকাশটাই আজ শুধু নীল আর নীল। কোনও খণ্ড বিচ্ছিন্ন মেঘের ওড়াউড়ি নেই সেখানে। মেঘমিলান্তি খেলায় সব মেঘ জুড়ে জুড়ে একাকার হয়ে মিশে গেছে
নীল আকাশে। আজ আর মেঘেরা আলাদা আলাদা করে নয়, এক সঙ্গে ভালবাসবে আকাশকে।