—প্রতীকী চিত্র।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কোলাঘাট এবং দেউলটি স্টেশনের মধ্যে রূপনারায়ণ নদীর উপরে নির্মিত রেলসেতুর বয়স প্রায় ১২৫ বছর। গত শতকে নির্মিত, ৮০৪ মিটার দীর্ঘ ওই রেলসেতুর মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ায় কিছুটা দূরত্বে নতুন সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। ওই কাজের জন্য ৪৩১ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছে রেল। ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে নির্মিত ওই নতুন রেলসেতু চালু হতে ২০২৭ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে রেল সূত্রের খবর।
চালু থাকা পুরনো সেতুতে ডাউন মেন এবং ডাউন মিডল লাইন রয়েছে। ওই সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে এখন বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। ডাউন মেন লাইন দিয়ে যাত্রিবাহী এক্সপ্রেস, মালগাড়ি এবং একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দ্রুতগামী ট্রেন চালানো হয় না। আপাতত ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার গতিতে অল্প কিছু ট্রেন চলে। এর পরিবর্তে রিভার্স সিগন্যালিং পদ্ধতিতে ওই সমস্ত ট্রেন মেন লাইন দিয়ে চালানো হয়। একটি লাইন দিয়ে আপ ও ডাউন রুটের সমস্তগুরুত্বপূর্ণ ট্রেন চালাতে গিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ওই শাখায় ট্রেন চলাচলে বিলম্ব ঘটে। প্রায়ই বিভিন্ন ট্রেনকে নিকটবর্তী স্টেশনে অপেক্ষায় রাখতে হয়। ফলে ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা ধাক্কা খায়।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বিভিন্ন ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা নিয়ে অবশ্য যাত্রীদের দীর্ঘ দিনের অভিযোগ রয়েছে। রূপনারায়ণ নদীর উপরে নির্মিত পুরনো ওই রেলসেতু দিয়ে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের বহু ট্রেনও যাতায়াত করে। ফলে ওই পথে ট্রেনের চাপ যথেষ্ট বেশি। রেল কর্তাদের দাবি, সেতুর কর্মক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার বড় প্রভাব পড়ছে ট্রেনের চলাচলের উপরে।
তাই ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে নতুন রেলসেতুটি অনেক বেশি ভার বহনের উপযোগী করে তৈরি করা হচ্ছে। পাশাপাশি, তিনটি লাইনের ওই পথে ভবিষ্যৎ সম্প্রসারণের কথা মাথায় রেখে নতুন রেলসেতু তৈরির কথা ভাবা হয়েছে। ভারী মালবাহী ট্রেন ছাড়াও দূরপাল্লার বিভিন্ন এক্সপ্রেস যাতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৩০ কিলোমিটার গতিতে চালানো যায়, তার উপযোগী করেই ওই রেলসেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর সঙ্গে কোলাঘাট স্টেশনের সম্প্রসারণের বিষয়টিও জড়িয়ে রয়েছে।
ইতিমধ্যেই ওই রেলসেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। বছর দেড়েকের মধ্যে নতুন সেতু চালু হলে ওই শাখায় ট্রেন চলাচল অনেকটা মসৃণ হবে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার সৌমিত্র মজুমদার।