Matthew Hayden on Gautam Gambhir

‘ও আরও ভদ্র ভাবে কথা বলতে পারত!’ ভারতের কোচ গম্ভীরের কোন কাজে অখুশি হেডেন

গৌতম গম্ভীরের কাজে খুশি হতে পারছেন না ম্যাথু হেডেন। তাঁর মতে, গম্ভীর যে ভাষায় কথা বলেছেন, তা ঠিক নয়। আরও ভদ্র ভাবে কথা বলা উচিত ছিল ভারতের প্রধান কোচের।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২৫ ১৮:৪০
cricket

গৌতম গম্ভীর। —ফাইল চিত্র।

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পঞ্চম টেস্টের আগে ওভালের পিচ প্রস্তুতকারক লি ফর্টিসের সঙ্গে আঙুল উঁচিয়ে বিবাদে জড়িয়েছিলেন গৌতম গম্ভীর। তাঁর এই কাজে খুশি হতে পারেননি ম্যাথু হেডেন। তাঁর মতে, গম্ভীর যে ভাষায় কথা বলেছেন, তা ঠিক নয়। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটারের মতে, আরও ভদ্র ভাবে কথা বলা উচিত ছিল ভারতের প্রধান কোচের।

Advertisement

একটা সাক্ষাৎকারে সেই বিবাদ নিয়ে মুখ খুলেছেন হেডেন। তিনি বলেন, “পিচের বিষয়ে পিচ প্রস্তুতকারকেরা খুব রক্ষণশীল হন। ইংল্যান্ডে এটা আরও বেশি হয়। শেষ টেস্টের আগে পরিস্থিতিও অন্য রকম ছিল। ইংল্যান্ডের সিরিজ় জেতার সুযোগ ছিল। তাই ওরা চেষ্টা করেছিল, ভারতকে আরও একটু চাপে ফেলতে। তাই ভারতীয় কোচদের কাছ থেকে পিচ দেখতে দেওয়া হচ্ছিল না।”

হেডেনের মতে, গম্ভীর নিজের দলের কখা বলেছেন। তাতে কোনও ভুল নেই। কিন্তু সেটা তিনি অন্য ভাবেও বলতে পারতেন। হেডেন বলেন, “গম্ভীর নিজের কথা বলেছে। সেটা বলার সম্পূর্ণ অধিকার ওর আছে। কিন্তু আমার মনে হয়, ও আরও একটু ভদ্র ভাবে কথা বলতে পারত। গলার স্বর আরও একটু নামিয়ে কথা বলতে পারত। তা হলে এই বিতর্ক হত না।”

ওভালে প্রথম দিনের অনুশীলনে গম্ভীরের সঙ্গে বিবাদ হয় ফর্টিসের। তাঁর দিকে আঙুল উঁচিয়ে এগিয়ে যান গম্ভীর। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘তুমি এখানে এক জন মাঠকর্মী মাত্র। যাও, যেখানে খুশি রিপোর্ট কর। তুমি মাঠকর্মী ছাড়া কিছু নও।’’ এর পর গম্ভীর নাকি ফর্টিসের উদ্দেশে গালিগালাজও করেন। সে সময় কাছেই ছিলেন ভারতীয় দলের ব্যাটিং কোচ সীতাংশু কোটাক। গম্ভীরকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি সামলান তিনি এবং অন্য সাপোর্ট স্টাফেরা। ফর্টিসের সঙ্গে কথা বলেন কোটাক। তখনও দূর থেকে ক্ষুব্ধ গম্ভীরকে চেঁচাতে দেখা গিয়েছে।

পরে ভারতীয় দলের ব্যাটিং কোচ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘মাঠে আইস বক্স রাখার সময় ফর্টিস প্রথমে চিৎকার করে আমাদের সাপোর্ট স্টাফদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর বলার ধরন পছন্দ হয়নি গম্ভীরের। কোচ বিরক্ত হন। তিনি আপত্তি জানান। তা থেকেই প্রথম উত্তেজনা তৈরি হয়। ওভালের পিচ প্রস্তুতকারকের সঙ্গে কথা বলা কঠিন। এটা সকলেই জানে। তবে আমরা সরকারি ভাবে কোনও অভিযোগ জানাব না।’’ গম্ভীর ও কোটাককে নাকি পিচের কাছে যেতে নিষেধ করেছিলেন ফর্টিস। তাতে আরও রেগে যান ভারতের প্রধান কোচ। সেই প্রসঙ্গে কোটাক বলেন, ‘‘আমরা যখন পিচ দেখছিলাম, তখন ফর্টিস এক জন মাঠকর্মীকে পাঠান। তিনি আমাদের আড়াই মিটার দূর থেকে পিচ দেখতে বলেন। মানে আমাদের প্রধান কোচকে দড়ির বাইরে থেকে পিচ দেখতে বলা হয়! আমার ক্রিকেটজীবনে এমন কখনও দেখিনি। আমরা জগার্স পরেছিলাম। রবারের স্পাইক পরে পিচের কাছে যাওয়া যায়। আমরা ভুল কিছু করিনি। ওর বক্তব্য আমাদের অদ্ভুত লেগেছে। আমরা মাঠের কোনও ক্ষতি করতে যাইনি। আমরা পিচ দেখছিলাম। প্রাচীন মূল্যবান কোনও সামগ্রী দেখছিলাম না।’’

ফর্টিসের আচরণ ভাল ভাবে নেননি গম্ভীর। তিনি জবাব দেন। তাতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কোটাক বলেন, ‘‘ফর্টিসের আচরণ থেকেই উত্তেজনার শুরু। গম্ভীর এমন একজন মানুষ, যে খুব বেশি কথা বলে না। কারও সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় কথাও বলে না। আমরা সব জায়গায় খেলতে যাই। সব পিচ প্রস্তুতকারকই আমাদের সঙ্গে কথা বলেন। হয়তো অনেক সময় আমরা ঘাস কাটা হবে কি না জানতে চাই। তাঁরা তাঁদের মতো করে ভাল ভাবে উত্তর দেন।’’

পরে অবশ্য ফর্টিস বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাননি। ওভালের পিচ প্রস্তুতকারক সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিতণ্ডার বিষয়টি প্রথমে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি কিছু বলতে চাই না। সামনেই একটা বড় ম্যাচ। ম্যাচটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই না?’’ কিন্তু তিনি কি গম্ভীরের আচরণে খুশি? চাপাচাপিতে ফর্টিস বলেন, ‘‘খুশি হওয়া বা না হওয়া আমার কাজ নয়। এই প্রথম ওঁর সঙ্গে সামনাসামনি দেখা হল। সকলেই দেখেছেন, উনি কেমন আচরণ করলেন। আমি ঠিক আছি। আমাদের লুকোনোর কিছু নেই। আমি অভদ্রতা করতে চাইনি।’’

ওভাল টেস্টের পরেও গম্ভীরের সঙ্গে তাঁর বিবাদ নিয়ে ফর্টিসকে প্রশ্ন করেছিলেন সাংবাদিকেরা। জবাবে তিনি বলেন, “আমি কখনওই খলনায়ক ছিলাম না। আমাকে খলনায়ক বানানো হয়েছিল। আমি শুধু নিজের দায়িত্ব পালন করছিলাম।” গম্ভীরের সঙ্গে বিবাদে জড়ালেও ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজ়ের সবচেয়ে ভাল পিচ তৈরি করেছেন ফর্টিস। টান টান ম্যাচে ভারত সেখানে জিতে সিরিজ় ড্র করেছে। সেই কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন ফর্টিস। তিনি বলেন, “আশা করি, সকলে ওভালের মনোরম পরিবেশে একটা সুন্দর টেস্ট উপভোগ করেছেন। পুরো আইপিএলের মতো পরিবেশ ছিল। খুব ভাল একটা ম্যাচ হয়েছে।”

Advertisement
আরও পড়ুন