Harmanpreet Kaur

বিশ্বকাপ জিতেও ঘোর কাটছে না হরমনপ্রীতের, ‘হয়তো কয়েক মাস পর বুঝতে পারব কী করে ফেলেছি’

দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন ছিল বিশ্বকাপ জিতবেন। রবিবার স্বপ্নপূরণ হয়েছে। এখনও হরমনপ্রীত কৌরের বিশ্বাস হচ্ছে না যে, তিনি বিশ্বকাপ জিতেছেন। ‘গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া’র সামনে আইসিসি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কী বললেন ভারতের অধিনায়ক?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:৪৩
cricket

বিশ্বকাপ হাতে হরমনপ্রীত কৌর। ছবি: পিটিআই।

দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন ছিল বিশ্বকাপ জিতবেন। কিন্তু কাছাকাছি এলেও কাপ আর ঠোঁটের দূরত্ব কিছুতেই মিটছিল না। ২ নভেম্বর, রবিবার নবি মুম্বইয়ের ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে স্বপ্নপূরণ হয়েছে। তবে এখনও হরমনপ্রীত কৌরের বিশ্বাস হচ্ছে না যে, তিনি বিশ্বকাপ জিতেছেন। বিশ্বকাপের পরের দিন ‘গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া’র সামনে আইসিসি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিভিন্ন কথা শোনা গিয়েছে ভারতের অধিনায়কের মুখে। শুক্রবার সেই সাক্ষাৎকার প্রকাশ্যে এনেছে আইসিসি।

Advertisement

বিশ্বকাপ জয়ের অনুভূতি

এখনও ভাবতেই পারছি না যে, বিশ্বকাপ জিতেছি। কয়েক মাস পর হয়তো বুঝতে পারব যে কী করে ফেলেছি। এখন কিছুই বুঝতে পারছি না। অমল স্যরের সঙ্গে এটাই বলছিলাম যে হয়তো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ়‌ জিতে ঘরে ফিরেছি মনে হচ্ছে। এখনও বিশ্বকাপজয় স্বপ্ন মনে হচ্ছে। সকলেই এক বার ট্রফিটা ছুঁয়ে বিশ্বাস করার চেষ্টা করছিল, যা দেখছি সেটা কি সত্যি? কত বছর ধরে এই ট্রফিটা দূর থেকেই দেখতে হয়েছে। এত কাছে আসার সুযোগ, ছবি তোলার সুযোগ কখনও পাইনি। যা হয়েছে সেটা স্বপ্নের মতো লাগছে।

বিশ্বকাপ জয়ের পরের মুহূর্ত

এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। আমরা একে অপরের সঙ্গে দেখা হলেই বলছি, ‘বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, বিশ্বচ্যাম্পিয়ন’। খুব আলাদা একটা অনুভূতি, যেটা পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলাম এত দিন। সারা রাত আমরা জেগে ছিলাম। সকাল ৮-৮.৩০টা নাগাদ ঘরে গিয়েছিলাম। তার পর শুয়েছি কিছু ক্ষণ। কারণ অনেক কাজকর্ম ছিল পরে। এই ফোটোশুটে আসার জন্য আগে উঠতে হয়েছে।

বিশ্বকাপ জয়ের উচ্ছ্বাস

বিশ্বজয়ের রাতে সবাই নেচেছি। পরিবার, বন্ধুবান্ধবেরাও ছিল। খুব আবেগপ্রবণ একটা অনুভূতি। যাদের কোনও দিন নাচতে দেখিনি তারা সকলের আগে নাচতে শুরু করেছিল। যেমন স্মৃতি, দীপ্তিকে আগে কোনও দিন নাচতে দেখিনি। ওরা নিজেদের ও ভাবে প্রকাশ করতে পারছে, এটা দেখেই খুব ভাল লেগেছে।

ছবি তুলতে ভুলে যাওয়া

সকলেই ভাবছিল কখন ট্রফি সাজঘরে নিয়ে আসব এবং কখন ঘরে যাব। সকলেই পরিকল্পনা করে রেখেছিল যে, শোয়ার সময় ট্রফির সঙ্গে ছবি তুলবে। আমরা ভুলেই গিয়েছিলাম যে শোয়ার সময়ই আর নেই। আমরা তো শুইনি। সকালে প্রত্যেকে তাড়াতাড়ি ছবি তুলেছে। সকলেরই ইচ্ছা ছিল ছবি তুলে সমর্থকদের সঙ্গে ছবি ভাগ করে নেবে।

ক্যাচ নেওয়ার পর

অরুর (অরুন্ধতী রেড্ডি) সঙ্গেও এটা নিয়ে কথা হচ্ছিল। ক্যাচটা ধরার পরেই বল হাতে নিয়ে দৌড়োচ্ছিলাম। জানতাম না কী করব। সামনে হঠাৎ অরু চলে এল, ‘হ্যারিদি হ্যারিদি’ করে ডাকছিল। আমি বললাম, ‘কী হয়েছে’? ও বলল, ‘আমরা জিতে গিয়েছি’। আমি সত্যিই ভাষায় এটা বলে বোঝাতে পারব না। শুধু দৌড়োতে ইচ্ছা করছিল। যত সমর্থক রয়েছেন সকলের কাছে যেতে ইচ্ছা করছিল। খুব আবেগের মুহূর্ত ছিল ওটা।

শেফালিতে বিশ্বাস

শেফালি দলে আসার পরেই ওকে নিয়ে আমরা কথা বলছিলাম। ওকে খেলানো উচিত কি না, সেটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। ওকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম বিশ্বকাপের খেলা দেখেছে কি না। বলেছিল, সে ভাবে দেখতে পায়নি। আসলে ঘরোয়া ক্রিকেটে ব্যস্ত ছিল বলে সময় হয়নি। ও অনেক বিশ্বকাপ খেলেছে। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছে। ও জানত যে এই ধরনের মঞ্চে চাপটা কেমন হয়। সেমিফাইনালের পরে ঠিক করে রেখেছিলাম ওকে পরের ম্যাচেও খেলাব। আমরা জানতাম ওকে আমাদের কতটা দরকার। যেটা আমরা ২০-২২ ওভারে করব, ও সেটা ১০ ওভারে করে দেবে। বোলিং নিয়েও কথা হয়েছে। আগের ম্যাচগুলোয় প্রতিকা (রাওয়াল) কয়েক ওভার বল করেছে। শেফালিও বল করার জন্য তৈরি ছিল। বলেই দিয়েছিল, যদি দলের দরকার লাগে ও ১০ ওভার বল করতেও রাজি। দক্ষিণ আফ্রিকা জুটি গড়ার সময়েই শেফালিকে বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। পর পর দুটো উইকেট নিয়ে শেফালি প্রমাণ করে দিয়েছে, দলের জন্য ও কী করতে পারে।

সচিনের ফোন

ম্যাচের আগের দিন সচিন ফোন করেছিলেন। উনি নিজের অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ভারসাম্য ধরে রাখতে। ম্যাচ খুব তাড়াতাড়ি এগিয়ে গেলে সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দ্রুত গতিতে গেলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। সিনিয়রদের এই সমস্ত কথা আমার মাথায় ছিল। ম্যাচের সময়ও পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ধৈর্য ধরে রেখেছিলাম।

Advertisement
আরও পড়ুন