IPL 2025

জল্পনাই সত‍্যি হল! আইপিএল ফাইনাল দিদির রাজ‍্য থেকে মোদীর রাজ‍্যে, ৩ জুন কলকাতার বদলে ট্রফির লড়াই অহমদাবাদে

আশঙ্কাই সত্যি হল। ইডেন গার্ডেন্সে হবে না আইপিএলের ফাইনাল। হবে না প্লে-অফ পর্বের কোনও ম্যাচ। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড মঙ্গলবার এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২৫ ১৭:১৫
picture of IPL trophy

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আশঙ্কাই সত্যি হল। কলকাতা থেকে সরে গেল আইপিএল ফাইনাল। ৩ জুন ফাইনাল হবে অহমদাবাদে। ১ জুন দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারও হবে অহমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে। প্রথম কোয়ালিফায়ার এবং এলিমিনেটর হবে পঞ্জাবের মুল্লানপুরের নতুন স্টেডিয়াম। এই ম্যাচ দু’টি হবে যথাক্রমে ২৯ এবং ৩০ মে। মঙ্গলবার আইপিএল কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। সমাজমাধ্যমে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।

Advertisement

প্লে-অফ পর্বের দু’টি ম্যাচ সরে যাওয়ায় এ বছর আইপিএলের আর কোনও ম্যাচ হবে না কলকাতায়। বেঙ্গালুরু থেকেও একটি ম্যাচ সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। লিগ পর্বে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ম্যাচ হবে ২৩ মে লখনউয়ে। বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় এই ম্যাচটিও সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এ বার আইপিএল শুরুর সময়ে যে সূচি তৈরি হয়েছিল, তাতে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার এবং ফাইনাল দেওয়া হয়েছিল ইডেনে। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের তারিখ ছিল ২৩ মে। ফাইনাল ২৫ মে। কেকেআর গত বারের চ্যাম্পিয়ন। প্রথা অনুযায়ী উদ্বোধনী ম্যাচ এবং ফাইনাল আগের বারের চ্যাম্পিয়ন দলের ঘরের মাঠে হয়। দ্বিতীয়ত, ফাইনাল এবং দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের মধ্যে দিনের ব্যবধান প্রায় না-থাকায় দু’টি ম্যাচ একই মাঠে হয়। সেই হিসেবে ফাইনাল এবং দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ইডেনে হওয়ার কথা ছিল।

ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ পরিস্থিতিতে এক সপ্তাহ আইপিএল বন্ধ থাকার পর পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। আইপিএলের নতুন সূচি অনুযায়ী ফাইনাল ৩ জুন। সে দিন কলকাতায় ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। সে দিন কলকাতায় বৃষ্টির সম্ভাবনা ৬৫ শতাংশ। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এই ‘খবর’-এর উৎস আমেরিকার একটি বেসরকারি অ্যাপ। যদিও আলিপুর আবহাওয়া দফতর বা দিল্লির মৌসম ভবনের তরফে এমন কোনও পূর্ভাভাস দেওয়া হয়নি। কারণ, এক সপ্তাহ আগেই সঠিক পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব।

ভারত-পাকিস্তান সংঘর্য পরিস্থিতির পর বদলে যায় সমীকরণ। নতুন করে আইপিএলের যে সূচি বিসিসিআই প্রকাশ করেছিল, তাতে প্লে-অফের ম্যাচগুলি কোথায় হবে জানানো হয়নি। শুধু ম্যাচের তারিখ জানানো হয়েছিল। বলা হয়েছিল, পরে জানানো হবে কোথায় খেলা হবে। মনে করা হচ্ছে, আইপিএল ফাইনাল স্থানান্তরণের নেপথ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ রাজনীতির লড়াইও বড় ভূমিকা নিয়েছে। ভারত-পাক সংঘাতে কেন্দ্রীয় সরকারের পাশে দাঁড়ালেও মোদী-দিদির রাজনৈতিক সম্পর্ক সুবিদিত। সেই কারণেই সুযোগ পাওয়া মাত্রই আইপিএল ফাইনালের মতো ‘ইভেন্ট’ কলকাতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অনেকের বক্তব্য। এর মধ্যে ‘অনুঘটক’ হিসেবে অনেকে অমিত-তনয় জয় শাহকেও দেখতে পাচ্ছেন। প্রাক্তন বোর্ড সচিব জয় এখন আইসিসি-র চেয়ারম্যান। ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনে তাঁর ক্ষমতা প্রশ্নাতীত। আইপিএলের প্লে-অফ পর্বের দু’টি ম্যাচ ইডেন গার্ডেন্স থেকে সরে অহমদাবাদে চলে যাওয়ার যা প্রধান কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময় আইপিএলের মতো প্রতিযোগিতার ফাইনাল নরেন্দ্র মোদী নামাঙ্কিত স্টেডিয়ামে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নেপথ্যে আন্তর্জাতিক রাজনীতির সমীকরণও থাকতে পারে। অহমদাবাদ মোদী-শাহর শহর। বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়ামও বটে। তা ছাড়া অহমদাবাদ পাকিস্তান সীমান্তের কাছাকাছিও। তাই বিসিসিআইয়ের এই সিদ্ধান্তের পিছনে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতির ভূমিকা থাকা অসম্ভব নয়।

আইপিএল ফাইনাল কলকাতা থেকে সরে যাওয়ার আঁচ পাওয়ার পর তৎপর হয়ে ওঠেন সিএবি কর্তারা। বিসিসিআইকে চিঠি দিয়ে ফাইনাল এবং দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার কলকাতাতেই করার অনুরোধ করা হয়। বিসিসিআই কর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেন সিএবি কর্তারা। বিসিসিআইয়ের প্রাক্তন সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও কয়েক দিন আগে আশা প্রকাশ করেছিলেন, কলকাতা থেকে ম্যাচ সরবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরেই গেল ম্যাচ।

Advertisement
আরও পড়ুন