IPL

আইপিএলে সুযোগ পেতে ধোনিদের বাসের পিছু নিয়েছিলেন বরুণ! শুরুর কথা জানালেন কেকেআর স্পিনার

একসময় বরুণ চক্রবর্তী ছিলেন চেন্নাই সুপার কিংসের নেট বোলার। মূল দলে সুযোগ পাননি। পঞ্জাব কিংস সই করালেও বেশি খেলার সুযোগ পাননি। তাঁর ক্রিকেটজীবন বদলে দিয়েছে কেকেআর।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৫ ১৮:৪৪
Picture of Varun Chakaravarthy

বরুণ চক্রবর্তী। —ফাইল চিত্র।

আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে সাফল্য ক্রিকেটমহলে পরিচিতি দিয়েছে বরুণ চক্রবর্তীকে। সুযোগ পেয়েছেন জাতীয় দলে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ী দলের অন্যতম সদস্য তামিলনাড়ুর স্পিনার। তবে স্পিনার বরুণের পরিণত হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে ভূমিকা রয়েছে আইপিএলের আর এক দল চেন্নাই সুপার কিংসেরও। স্কুটারে সিএসকের বাসের পিছু নিয়ে বদলে ফেলেছিলেন নিজের ক্রিকেটজীবন।

Advertisement

রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের বেড়ে ওঠার কথা বলেছেন বরুণ। কেকেআর নেওয়ার আগে বরুণ ছিলেন চেন্নাই শিবিরে। যদিও মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দলের হয়ে আইপিএলের ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি তাঁর। তিনি ছিলেন চেন্নাইয়ের নেট বোলার। মূল দলের অংশ হতে পারেননি কখনও।

সাক্ষাৎকারে বরুণ বলেছেন, ‘‘আমি নেটে দীনেশ কার্তিককে বল করেছিলাম। আমার বোলিং ওর পছন্দ হয়েছিল। বলেছিল, পরে আমাকে ডাকবে। দু’বছর নির্বাসিত থাকার পর চেন্নাই যে বার আইপিএল খেলল, সেই বছরের কথা বলছি। একটা মজার ঘটনা ঘটেছিল। এক জনের কাছে শুনেছিলাম, চেন্নাইয়ের নেট অনুশীলনের দায়িত্বে থাকেন টিএস মোহন। তিনিই নেট বোলারদের ঠিক করেন। আমি স্কুটার নিয়ে চেন্নাইয়ের বাসের পিছনে যাচ্ছিলাম। দল স্টেডিয়ামে ঢোকার সময় ওঁর নাম ধরে চেঁচিয়ে ডাকি।’’ কী হল তার পর? বরুণ বলেছেন, ‘‘মোহন আমার দিকে এগিয়ে আসেন। তখন বলেছিলাম, রহস্য স্পিন করতে পারি। শুনে উনি বলেছিলেন, চেন্নাইয়ের মূল দলে সুযোগ দেওয়া সম্ভব নয়। তবে নেট বোলার হিসাবে সুযোগ দিতে পারবেন। জানতে চেয়েছিলেন কোন ডিভিশনে খেলি। বলেছিলাম পঞ্চম ডিভিশনে। শুনে তিনি বলেছিলেন, নেট বোলার হিসাবে শুধু প্রথম ডিভিশনের বোলারদের নেওয়া হয়। অন্যদের সুযোগ নেই। এটুকু বলে আমাকে ফিরিয়ে দিতে পারতেন। তবু কিছু একটা ভেবে পরের দিন দেখা করতে বলেছিলেন।’’

কথা রেখেছিলেন মোহন। পরের দিন সময়মতো স্টেডিয়ামে পৌঁছে যান বরুণ। শুধু তা-ই নয়, নেটে বল করার সুযোগও দেওয়া হয় তাঁকে। কেকেআর স্পিনার বলেছেন, ‘‘পরের দিন চেন্নাইয়ের অনুশীলনে গিয়ে দেখি, নেট বোলারেরা সকলে প্রথম ডিভিশনে খেলে। ব্যতিক্রম একমাত্র আমি। তবু আমাকেই প্রথম বল করতে ডাকা হয়। প্রথম ডিভিশনে খেলা অন্য বোলারদের আমার পিছনে দাঁড়াতে বলা হয়। ব্যাট করছিলেন ডোয়েন ব্র্যাভো। প্রথম দুটো বল বিমার হয়ে যায়। বেশ ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। কয়েকটা বল করার পর আর সমস্যা হয়নি। ব্র্যাভোকে কয়েকটা বলে বিট করি। পরে ধোনি, সুরেশ রায়নারাও আমার কয়েকটা বল খেলতে সমস্যা পড়ে। ওরা সকলে আমার বোলিংয়ে খুব খুশি হয়। মাহি ভাই জানতে চেয়েছিলেন, আইপিএলে নাম নথিভুক্ত করানো রয়েছে কি না। না বলেছিলাম। আসলে প্রথম ডিভিশনের ক্রিকেটার না হলে নাম নথিভুক্ত করানো যেত না। তাই আমাকে নেট বোলার হিসাবেই নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন চেন্নাই কর্তৃপক্ষ।’’

চেন্নাই কর্তৃপক্ষের আস্থা অর্জনের পরও বাদ পড়তে হয়েছিল বরুণকে। তিনি বলেছেন, ‘‘চেন্নাই ছেড়ে এক বছর পুণেতে শিবির করেছিল সিএসকে। সে বার বাছাই করে নেট বোলার নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আমি বাদ পড়েছিলাম। সুযোগ পাইনি জানতে পেরে কার্তিকভাই আমাকে ডেকেছিলেন কেকেআর শিবিরে। নেট বোলার হিসাবেই প্রথম যোগ দিয়েছিলাম দলে। অভিষেক নায়ারের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর ক্রমশ বদলাতে শুরু করে আমার ক্রিকেট।’’

বরুণ অবশ্য প্রথম আইপিএল খেলেন পঞ্জাব কিংসের হয়ে। ২০১৯ সালে তাঁকে সই করান পঞ্জাব কর্তৃপক্ষ। তবে খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি তিনি। ২০২০ সালে বরুণকে দলে নেয় কেকেআর। আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। উল্লেখ্য, সেই ব্র্যাভোই এখন কেকেআরের মেন্টর। কলকাতার স্পিনার মূলত সাদা বলের ক্রিকেট খেলেন। তামিলনাড়ুর হয়েও লাল বলের ক্রিকেট খেলেন না।

Advertisement
আরও পড়ুন