India vs South Africa 2025

দু’দিনে পড়ল ২৬ উইকেট, সর্বোচ্চ রান ৩৯! ইডেন টেস্টে সব ছাপিয়ে আলোচনায় পিচ, রবিতেই শেষ ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ?

রবিবার তৃতীয় দিনেই শেষ হয়ে যেতে পারে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম টেস্ট। ইডেনের উইকেটে একেবারেই সুবিধা করতে পারছেন না ব্যাটারেরা। দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৩ রানে এগিয়ে। হাতে মাত্র ৩ উইকেট।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:২৮
picture of cricket

রবীন্দ্র জাডেজাকে ঘিরে উচ্ছ্বাস ভারতীয় ক্রিকেটারদের। ছবি: পিটিআই।

উদ্বেগ ১: ইডেন গার্ডেন্সের পিচ

Advertisement

উদ্বেগ ২: শুভমন গিলের ঘাড়

উদ্বেগ ৩: সিমন হারমার

উদ্বেগ ৪: কেশব মহারাজ

উদ্বেগ ৫: অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন ভারতীয় দলকে এই চারটি উদ্বেগ নিয়ে মাঠে নামতে হবে। ইডেনের ২২ গজে প্রথম দিন থেকেই বেশ সমস্যায় ব্যাটারেরা। ম্যাচের তৃতীয় দিন চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটারেরা স্বস্তিতে থাকবেন না, তা বোঝার জন্য ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই।

শুভমন শনিবার ৩ বল খেলার পর উঠে গিয়েছেন। তাঁর ঘাড় শক্ত হয়ে গিয়েছে। আর ব্যাট করতে নামতে পারেননি। ফলে প্রথম ইনিংসে ভারতকে ব্যাট করতে হয়েছে এক জন কম ব্যাটার নিয়ে। পরে সারা দিন ফিল্ডিং করতেও নামেননি। নেতৃত্ব দিয়েছেন ঋষভ পন্থ। রবিবারও তাঁর মাঠে নামা নিশ্চিত নয়। শনিবার খেলা শুরুর থেকে ঘাড়ের সমস্যায় ভোগা অধিনায়কের ফিটনেসও তৃতীয় দিন ভারতের বিপক্ষে যেতে পারে।

দক্ষিণ আফ্রিকার অফ স্পিনার হারমারকে বিপজ্জনক দেখিয়েছে শনিবারই। ৩০ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন। রবিবারও ৩৬ বছরের স্পিনার বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারেন ইডেনের ফাটল ধরা ২২ গজে।

দক্ষিণ আফ্রিকার হাতে রয়েছে মহারাজও। অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার বহু জয়ের নায়ক। প্রথম ইনিংসে বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

বাভুমা অধিনায়ক হিসাবে এখনও একটি টেস্টেও হারেননি। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে ইডেনের এই পিচে চতুর্থ ইনিংসে ১৪০-১৫০ রান তোলাও কঠিন হতে পারে।

সব মিলিয়ে সিরিজ়ের প্রথম টেস্ট ভারত জিতবেই এ কথা বলা যাচ্ছে না দ্বিতীয় দিনের শেষে। কারণ, ২০-২৫ রানের জুটিকেও ভাল বলছেন প্রাক্তন ক্রিকেটারেরা! শনিবার পর্যন্ত ইডেন টেস্টের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস লোকেশ রাহুলের ৩৯! দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের বিরুদ্ধে কঠিন লড়াই ভারতীয় ব্যাটারদের। লড়াই করতে হবে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়দের তৈরি করা ‘স্পোর্টিং উইকেট’-এর সঙ্গেও। যে উইকেটে প্রথম ২ দিনেই পড়েছে ২৬ উইকেট!

শনিবার ভারতের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয়েছে ৯ উইকেটে ১৮৯ রানে। দিনের প্রথম ঘণ্টাটা সাবধানে কাটিয়ে দেন রাহুল এবং ধ্রুব জুরেল (২৯)। প্রথম জলপানের বিরতির পর থেকে উইকেট পড়তে শুরু করে ভারতের। কেউই বড় রান করতে পারেননি। শুভমন (৪) ৩ বল খেলে উঠে যাওয়ার পর পন্থ (২৭), রবীন্দ্র জাডেজা (২৭) কিছুটা রান তোলেন। বাকিরা সেটুকুও পারেননি। ধ্রুব জুরেল (১৪), অক্ষর পটেল (১৬) চেষ্টা করলেন ঝুঁকি না নিয়ে ২২ গজে থাকার। কিন্তু পারলেন না। কুলদীপ যাদব (১), মহম্মদ সিরাজ (১), জশপ্রীত বুমরাহের কাছে এই পিচে বেশি কিছু আশা করেননি ক্রিকেটপ্রেমীরাও।

সুবিধাজনক পিচ পেয়ে নিজেকে উজাড় করে দিলেন হারমার। স্পিন খেলতে দক্ষ ভারতীয় স্পিনারদের চাপে রাখলেন গোটা ইনিংসেই। তাঁর বল বুঝতে সমস্যায় পড়লেন জাডেজা, জুরেলেরা। হারমার সাহায্য পেলেন মার্কো জানসেনের। তিনি ৩৫ রানে ৩ উইকেট নিলেন। ফলে প্রথম ইনিংসে ৩০ রান লিডেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় ভারতীয় শিবিরকে।

দ্বিতীয় ইনিংসে সুবিধা করতে পারছেন না প্রোটিয়া ব্যাটারেরাও। জাডেজা, কুলদীপ, অক্ষরেরা বল ঘোরাচ্ছেন। বাউন্সও পাচ্ছেন! বল পিচে পড়ার পর কেমন আচরণ করবে বোঝা যাচ্ছে না। বাভুমা ছাড়া কেউ লড়াই করতে পারলেন না। দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক দিনের শেষে অপরাজিত রয়েছেন ২৯ রানে। ৭৮ বলের ইনিংসে প্রমাণ করে দিলেন তাঁর রক্ষণ কতটা মজবুত। রায়ান রিকেলটন (১১), এডেন মার্করাম (৪), উইয়ান মুলডার (১১), টনি ডি জর্জি (২), ট্রিস্টান স্টাবস (৫), কাইল ভেরেনেরা (৯) দাঁড়াতে পারলেন না ইডেনের পিচে। বলা ভাল ইডেনের পিচ প্রোটিয়া ব্যাটারদের দাঁড়াতে দিল না। ২৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে তাঁদের সবচেয়ে সমস্যায় ফেললেন জাডেজা। কুলদীপের ১২ রানে ২ উইকেট। ৩০ রানে ১ উইকেট অক্ষরের। এ দিন সিরাজকে দিয়ে বলই করালেন না পন্থ! ভারতীয় শিবির ব্রাত্য করে রেখেছে স্পিনার ওয়াশিংটনকেও। এ ছাড়া ভারতের প্রাপ্তি বলতে, টেস্ট ক্রিকেটে রাহুল এবং জাডেজার চার হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ।

দ্বিতীয় দিনের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা এগিয়ে ৬৩ রানে। তাদের হাতে রয়েছে ৩ উইকেট। বাভুমারা সুবিধাজনক জায়গায় নেই ঠিকই। এই রানটা তোলাও কঠিন হতে পারে। শুভমন ব্যাট করতে না পারলে আরও কঠিন। শনিবার খেলার শেষে চেতেশ্বর পুজারার মতো ব্যাটারও বলে দিলেন, ‘‘এই পিচে চতুর্থ ইনিংসে ১২০ রান তোলাও কঠিন হতে পারে।’’ অনিল কুম্বলে মধ্যাহ্নভোজের সময় ১৪০-১৫০ রানের কথা বলেছিলেন। পুজারা আরও ৩০ রান কমিয়ে দিলেন।

শুভমনের দল রবিবার মহারাজদের সামলাতে না পারলে প্রশ্নের মুখে পড়বেন অন্য ‘মহারাজ’। বাভুমা আবার অধিনায়ক হিসাবে কোনও টেস্ট হারেননি। কুম্বলে মনে করিয়ে দিয়েছেন জাডেজাদের বোলিং উপভোগ করার ফাঁকে।

Advertisement
আরও পড়ুন