Super Cup 2025

সুপার কাপে নতুনদের পরীক্ষায় বসাচ্ছে ইস্টবেঙ্গল, গোটা দলের পরীক্ষা নেবে মোহনবাগান

শনিবার সুপার কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান। লাল-হলুদের প্রতিপক্ষ ডেম্পো। সবুজ-মেরুন খেলবে চেন্নাইয়িন এফসির বিরুদ্ধে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:৫৭
picture of football

(বাঁ দিকে) অস্কার ব্রুজ়ো এবং হোসে মোলিনা (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানের নজর এ বার সুপার কাপে। শনিবার থেকে গোয়ায় শুরু হবে এই প্রতিযোগিতা। প্রথম দিনই মাঠে নামবে কলকাতার দুই প্রধান। ইস্টবেঙ্গলের প্রতিপক্ষ ডেম্পো। মোহনবাগান মাঠে নামবে চেন্নাইয়িন এফসির বিরুদ্ধে। সুপার কাপ জিতলে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টু খেলার সুযোগ পাওয়া যায়। তা মাথায় রেখেই পরিকল্পনা তৈরি করছেন লাল-হলুদ কোচ অস্কার ব্রুজ়ো এবং সবুজ-মেরুন কোচ হোসে মোলিনা।

Advertisement

সুপার কাপের প্রথম ম্যাচের আগের দিন ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে মুখোমুখি হয়েছিলেন দুই প্রধানের কোচ। ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের সৌভিক চক্রবর্তী এবং মোহনবাগানের অনিরুদ্ধ থাপা। গোটা দলকে দেখে নিতে চান মোলিনা। নতুনরা কতটা মানিয়ে নিতে পারছেন, সেটা দেখে নিতে চান ব্রুজ়ো।

আইএফএ শিল্ড জয়ের পর আত্মবিশ্বাসী মোহনবাগান কোচ। মোলিনা অবশ্য বলেছেন উন্নতির দরকার। তিনি বলেছেন, ‘‘ডুরান্ডে আমরা পারিনি। তবে শিল্ড জয় দলের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। আমাদের কয়েক জায়গায় আরও উন্নতি প্রয়োজন।’’ দলের কোন জায়গায় উন্নতি দরকার? মোলিনা বলেছেন, ‘‘কোচ হিসাবে ডিফেন্স-ফরোয়ার্ড, ডান দিক-বাঁ দিক— এ ভাবে দেখি না। আমার লক্ষ্য গোটা দলের খেলার উন্নতি। আমরা ক্রমশ উন্নতি করছি। আশা করছি, এই প্রতিযোগিতায় আরও ভাল খেলব আমরা। দলের সার্বিক উন্নতি এবং সব বিভাগের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখাই লক্ষ্য আমার।’’

দলে চোট আঘাতের সমস্যা নেই। তাই সেরা ফুটবল উপহার দিতে চান মোলিনা। মোহনবাগান এখনও পর্যন্ত সুপার কাপ জিততে পারেনি। এ নিয়ে মোলিনা বলেছেন, ‘‘জানি। এ বার আমরা তৈরি। সুপার কাপ গুরুত্বপূর্ণ। তাই সামনের কয়েকটা সপ্তাহ গুরুত্বপূর্ণ।’’ অনিরুদ্ধও বললেন, ‘‘চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়েই আমরা খেলি। একই মানসিকতা নিয়ে যে কোনও ম্যাচ বা প্রতিযোগিতায় খেলি। ভাল খেলা এবং দলকে ট্রফি দেওয়া ছাড়া অন্য কিছু ভাবনায় থাকে না।’’

প্রতিপক্ষ শিবিরের বেঞ্চে থাকবেন ক্লিফোর্ড মিরান্ডা। যিনি মোহনবাগানের প্রাক্তন সহকারী কোচ। বর্তমান দলের অনেক ফুটবলারই তাঁর চেনা। চেন্নাইয়িন কি বাড়তি সুবিধা পাবে? মানতে চাননি মোলিনা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি বলতে পারব না, ওরা বাড়তি সুবিধা পাবে কিনা। কাল ম্যাচেই দেখা যাবে। আমি এ সব নিয়ে ভাবি না। নিজের দল, প্রস্তুতি, পরিকল্পনা এ সব নিয়ে থাকি। অন্য দলের সুবিধা-অসুবিধা ভাবা আমার কাজ নয়।

আত্মবিশ্বাসের অভাব নেই ইস্টবেঙ্গল শিবিরেও। ব্রুজ়ো পরিষ্কার বলে দিলেন, ‘‘সুপার কাপ জিতলে সরাসরি এএফসির প্রতিযোগিতায় খেলা যায়। গুরুত্বপূর্ণ তো বটেই। আইএসএলের দলগুলো ছাড়া আরও কিছু দল খেলে সুপার কাপে। বড় প্রতিযোগিতা। কঠিনও। কোনও ম্যাচই হালকা ভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই।’’ ইস্টবেঙ্গলে বেশ কয়েক জন ফুটবলার যোগ দিয়েছেন। তাঁরা কি দলের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছেন? ব্রুজ়ো বলেছেন, ‘‘আমরা ভাল খেলছি। যারা নতুন এসেছে, তারাও দলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে শুরু করেছে। সম্পূর্ণ মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগে। আমরা আত্মবিশ্বাসী। ভাল কিছুই আশা করছি।’’

ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম ভরসা সৌভিকও দলের বোঝাপড়া নিয়ে চিন্তিত নন। তিনি বললেন, ‘‘যারা নতুন এসেছে, তারা অভিজ্ঞ, পরিণত ফুটবলার। দেশ এবং বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আমরা নিজেদের সেরাটাই দেব।’’

ছয় বিদেশি-সহ সুপার কাপে পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে নামবে ইস্টবেঙ্গল। গোয়া ব্রুজ়োর চেনা জায়গা। ভারতে প্রথম গোয়াতেই এসেছিলেন কোচিং করাতে। ২০১২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়ার কোচ ছিলেন। বাড়তি সুবিধা হবে কি? ব্রুজ়োর বক্তব্য, ‘‘পেশাদার ফুটবলে আবেগের কোনও জায়গা নেই। ২০১৪ সালে শেষ এখানে কোচিং করিয়েছি। অনেক দিন আগের কথা। এখনকার সঙ্গে কোনও মিল নেই। আমার ব্যক্তিগত আবেগ বা স্মৃতির সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের পারফরম্যান্সের কোনও যোগও নেই। আমি এখন সম্পূর্ণ ইস্টবেঙ্গলের। শুধু ইস্টবেঙ্গল নিয়েই ভাবছি।’’

সুপার কাপ গুরুত্ব পাচ্ছে কলকাতার দুই প্রধানের কাছেই। দু’দলই নিজেদের প্রস্তুতি ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে ভাবতে চাইছে না। সুপার কাপ জিতে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টু-এ জায়গা করে নেওয়াই লক্ষ্য দুই শিবিরের।

Advertisement
আরও পড়ুন