Swimming Controversy In National Games

জাতীয় গেমসে সাঁতার-বিতর্কে বাংলা, রাজ্য সংস্থার কাছে রিপোর্ট তলব ক্রীড়া দফতরের

জাতীয় প্রতিযোগিতায় সাঁতারে বিতর্ক বেধেছে। দলগত ইভেন্ট থেকে বাতিল করা হয়েছে বাংলা দলকে। সেই ঘটনায় বাংলার অলিম্পিক্স সংস্থার কাছে রিপোর্ট চেয়েছে রাজ্যের ক্রীড়া দফতর।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:৪৭
sports

সাঁতারে বাতিল হয়েছে বাংলার দল। তা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

কী কারণে বাতিল হল বাংলার সাঁতারের দল? জবাব চায় রাজ্য ক্রীড়া দফতর। উত্তরাখণ্ডে আয়োজিত জাতীয় প্রতিযোগিতায় সাঁতারের দলগত ইভেন্ট থেকে বাতিল করা হয়েছে বাংলা দলকে। সেই ঘটনায় বাংলার অলিম্পিক্স সংস্থার কাছে রিপোর্ট চেয়েছে রাজ্যের ক্রীড়া দফতর। এই কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বাংলার অলিম্পিক্স সংস্থার সভাপতি চন্দন রায়চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন, তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেবেন ক্রীড়া দফতরের কাছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইনকে চন্দন বললেন, “মঙ্গলবার রাতেই রাজ্য ক্রীড়া দফতরের চিঠি পেয়েছি। আমি তো ওখানে ছিলাম না। ওখানে যারা আছে তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। পুরোটা খতিয়ে দেখব। তার পরে রিপোর্ট জমা দেব। আশা করছি দু’-এক দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিয়ে দেব।”

ঠিক কী সমস্যা হয়েছিল জাতীয় গেমসে? জানা গিয়েছে, রিলেতে নামার আগে যখন কলরুমে প্রতিযোগীরা হাজির হয়েছিলেন, তখন সেখানে সৌবৃতি মণ্ডলের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন স্বস্তিকা দাস। এ বারের প্রতিযোগিতায় সৌবৃতি বাংলাকে দু’টি সোনা এনে দিয়েছেন। সেই সৌবৃতিই সতীর্থের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। আনন্দবাজার অনলাইনে সৌবৃতি বলেন, ‘‘রিলে দলে আমার নাম প্রথমে রাখা হয়েছিল। আমি দলকে আগেই বলেছিলাম, আমি সকলের শেষে নামব। কিন্তু দল তৈরির সময় সেটা শোনা হয়নি।’’ স্বস্তিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘‘রিলে শুরু হওয়ার আগে আমি, মৌবনী, স্নিগ্ধা এবং স্বস্তিকা কল রুমে দাঁড়িয়েছিলাম। তখনই স্বস্তিকা আমার সঙ্গে খারাপ ভাষায় কথা বলেছে। আমি দিল্লিতে থেকে অনুশীলন করি, দুটো পদক পেয়েছি বলে অহংকারী হয়ে গিয়েছি, এমন সব কথা বলে আমাকে। একজন ১৪ বছরের মেয়ে, যার থেকে আমি ন’বছরের বড়, সে আমাকে যে ভাবে অপমান করেছে, তাতে আমার চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে যায়।’’ তাঁর অভিযোগ, সেখানে বাংলার যাঁরা ছিলেন, তাঁরা কেউ প্রতিবাদ করেননি। তিনি বলেন, ‘‘আমার মায়ের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেছে স্বস্তিকা। মায়ের দিকে আঙুল তুলে কথা বলেছে।’’

কল রুমে ঝামেলার সময় আয়োজকেরা পুরো ব্যাপারটাই খেয়াল করেছিলেন। তাঁরা বাংলার প্রতিযোগীদের কল রুম ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বলেন। বাংলার নামও ইভেন্ট থেকে বাদ দেন। রিলে ইভেন্টে বাংলার পদক পাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকলেও স্রেফ প্রতিযোগীদের ঝগড়ার কারণে বাতিল করে দেওয়ার ঘটনা সাম্প্রতিক কালে ঘটেনি।

যদিও ঘটনার কথা মানতে চাননি সাঁতার সংস্থার কর্তা রামানুজ মুখোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, “এটা তিন দিন আগের কথা। এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। যে হেতু ওই ইভেন্টে পদক পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল না, তাই খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দিতে আমরাই নাম তুলে নিয়েছিলাম। তাই জন্যই সৌবৃতি দুটো পদক জিতেছে। আসলে গত বার বাংলা সাঁতারে কোনও পদক জেতেনি। এ বার দুটো পদক পেয়েছে বলেই বিভিন্ন কথা ছড়ানো হচ্ছে।”

বাংলার শেফ দ্য মিশন বিশ্বরূপ দে-র মুখেও একই কথা শোনা গিয়েছে। তিনি বলেন, “আমি এখন দেহরাদূনে রয়েছি। সাঁতারের ইভেন্ট হচ্ছে হলদোয়ানিতে, যা প্রায় ছ’ঘণ্টার পথ। ঘটনার কথা আমি শুনেছি। রিপোর্টও পেয়েছি। দল বাতিল করার খবর সঠিক নয়। জাতীয় গেমসে বাংলা দলকে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে, এটা তো অনেক বড় খবর। সে রকম কিছুই হয়নি। কৌশলগত সিদ্ধান্তের কারণেই দল নামানো হয়নি। এটা নিয়ে বিতর্কের কিছু আছে বলে মনে হয় না।” বাংলা দলের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, দলের সঙ্গে থাকছেন না সৌবৃতি। তিনি মায়ের সঙ্গে হোটেলে আলাদা ভাবে রয়েছেন। ফলে দলের কারও সঙ্গে তাঁর তেমন যোগাযোগ নেই। বিষয়টি ভাল ভাবে নিচ্ছে না রাজ্য ক্রীড়া দফতর। তাই রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে তারা।

Advertisement
আরও পড়ুন