Offbeat Sea Beaches

ঠান্ডা অপছন্দ অথচ বেড়াতে ভালবাসেন, শীতের গন্তব্য হোক এ দেশের নানা প্রান্তের ৫ সৈকত

ঠান্ডার বাড়াবাড়ি সহ্য হয় না? তা হলে শীতে চলুন সাগরপারে। পাহাড়-সাগর গা ঘেঁষাঘষি করে দাঁড়িয়ে রয়েছে এমন সৈকতও এ দেশে আছে। কোথাও চোখে পড়বে ম্যানগ্রোভ, কোথাও ঝাউয়ের সারি। এমন ৫ সৈকতের হদিস জেনে নিন।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:২৭
গোকর্ণের সৈকতটিও শীতের দিনে বেশ মনোরম  আবহাওয়ায় ঘোরা যায়।

গোকর্ণের সৈকতটিও শীতের দিনে বেশ মনোরম আবহাওয়ায় ঘোরা যায়। ছবি: সংগৃহীত।

শীত এলেই অনেকের মন ভাল হয়ে যায় হিমেল হাওয়ার স্পর্শে। শীতের আমেজটুকু বড্ড ভাল লাগে। অনেকের মন নেচে ওঠে বরফে হুটোপাটি খাওয়ার জন্য। কারও কারও আবার এই মরসুমেই যত বিরক্তি। তবে শীত যাঁদের এক্কেবারে ভাল লাগে না, ঘরে জবুথবু হয়ে না বসে তাঁরাও বেরিয়ে পড়তে পারেন। ভারতের নানা প্রান্তে শুধু পাহাড় নয়, রয়েছে সৈকতও। শীতে সেই সৈকতশহরগুলির আবহাওয়া হয়ে ওঠে মনোরম। গরমের দাপট, শীতের ঝাপটা কোনওটাই থাকে না। চেনা-অচেনা এমন কোন কোন সুন্দর সৈকত বেছে নিতে পারেন ঘোরার জন্য?

Advertisement

গোকর্ণ

পাহাড় এবং সমুদ্রের অপূর্ব মেলবন্ধন চোখে পড়ে গোকর্ণের সৈকতে। কর্নাটকের ছোট্ট শহর গোকর্ণ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই এই স্থানের জনপ্রিয়তার কারণ। পাহাড়-সমুদ্র গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে। গোকর্ণ সৈকত ছাড়াও একাধিক ছোট ছোট সৈকত রয়েছে এখানে। অন্যতম জনপ্রিয় ওম সৈকত। এ ছাড়াও কুদলে, প্যারাডাইস, হাফ মুন সৈকত পর্যটকদের প্রিয়। ওম সৈকতের একটি বৈশিষ্ট্য হল এর আকৃতি কিছুটা ‘ও’ অক্ষরটির মতো। কায়াকিং-সহ একাধিক অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের সুযোগ রয়েছে এখানে। এখানকার পুরনো গুহা-মন্দিরের আকর্ষণও যথেষ্ট। পাহাড়ের মধ্যে ছোট্ট গুহামুখ। সেখান দিয়ে প্রবেশ করলে পৌঁছোনো যায় শিবমন্দিরে। একে অনেকে গো-গর্ভ শিবমন্দিরও বলেন। শোনা যায়, বিশেষ তিথিতে চাঁদের আলো সরাসরি এখানে পড়ে।

কী ভাবে যাবেন?

বেঙ্গালুরু থেকে গোকর্ণের দূরত্ব প্রায় ৪৮৬ কিলোমিটার। সড়কপথে যেতে ঘণ্টা দশেক সময় লাগবে। গোয়া বিমানবন্দর থেকে দূরত্ব ১৫০ কিলোমিটার। ট্রেনে বেঙ্গালুরু থেকে পঞ্চগঙ্গা, বা কারওয়ার এক্সপ্রেস ধরে যেতে পারেন আঙ্কোলা। সেখান থেকে গোকর্ণের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। বেঙ্গালুরু থেকে গোকর্ণের মধ্যে বাস পরিষেবাও রয়েছে।

ভারকালা

কেরলে রয়েছে ভারকালা সৈকত।

কেরলে রয়েছে ভারকালা সৈকত। ছবি:সংগৃহীত।

হেলে পড়া নারকেল গাছের সারি, খাড়া পাহাড়, অতল সাগর— ভারকালা মন করিয়ে দেয় গোয়াকে। কেরালার তিরুঅনন্তপুরমে ভারকালা শহরটি গত কয়েক বছরে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র হয়ে উঠেছে। এখানে রয়েছে ভারকালা সৈকত। সঙ্গী বা প্রিয় মানুষটির সঙ্গে একলা হওয়ার জন্য এমন স্থান বোধ হয় আদর্শ। সৈকতের রূপ বাড়িয়েছে নারকেল গাছের সারি। সবুজ-নীল আর সৈকতের বালির হলদেটে রং এক অপূর্ব রঙ বৈচিত্র্য তৈরি করেছে এখানে।সমুদ্রের পাশেই ক্লিফ বা খাড়া পাহাড় এই স্থানের আকর্ষণ বাড়িয়েছে। শহর, সৈকতকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে ঝাঁ চকচকে ক্যাফে। রয়েছে জলক্রীড়ার ব্যবস্থা। পুরনো মন্দির, রোপওয়ে এখানকার অন্যতম আকর্ষণ।

কী ভাবে যাবেন?

শালিমার থেকে ভারকালার সরাসরি ট্রেন আছে গুরুদেব এক্সপ্রেস। এছাড়াও আরও একটি ট্রেন মিলবে। বিমানে তিরুঅনন্তপুরম গিয়ে গাড়িতে ভারকালা পৌঁছতে পারেন।

রাধানগর বিচ

হ্যাভলকের রাধানগর সৈকতটি ছবির মতো সুন্দর।

হ্যাভলকের রাধানগর সৈকতটি ছবির মতো সুন্দর। ছবি: সংগৃহীত।

পাহাড়, ম্যানগ্রোভ, শুভ্র বালুতট। সামনে অতল সাগর। রাধানগর সৈকতের সৌন্দর্য মনে করায় ক্যানভাসে আঁকা ছবির কথা। ভারতের অন্যতম সুন্দর সমুদ্রসৈকত আন্দামানের হ্যাভলক দ্বীপের রাধানগর বিচ। সেখানেই পড়ন্ত বিকেলের রূপসৌন্দর্য উপভোগে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন পর্যটকেরা। সমুদ্রসৈকতে দৃশ্যমান ঢেউখেলানো পাহাড় সারি। আকাশে হরেক রং ছড়িয়ে সেই পাহাড়ের আড়ালে ডুবে যায় সূর্য। হ্যাভলকে থেকে ঘুরে নেওয়া যায় কালাপাথর বিচ, এলিফ্যান্টা বিচ। এখানে স্কুবা ডাইভিংয়ের মতো জলক্রীড়ার ব্যবস্থা রয়েছে।

কী ভাবে যাবেন?

বিমানে পোর্টব্লেয়ার বিমানবন্দর। সেখান থেকে জলপথে আসতে হয় হ্যাভলকে।

মার্কণ্ডী সৈকত

ওড়িশার গঞ্জাম জেলায় ব্রহ্মপুর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরেই রয়েছে মার্কণ্ডী গ্রাম। এখানেই রয়েছে মার্কণ্ডী সৈকত। রূপ-সৌন্দর্য আর পাঁচটা বালুকাবেলার মতো ঠিক নয়। সমুদ্রের আগে এখানে চোখে পড়বে নদী। স্থানীয়রা কেউ কেউ বলেন মার্কণ্ডী নদী। নদীর জলধারা পেরিয়ে আবার বালুতট। সেখানে আছড়ে পড়ছে ফেনিল জলরাশি। স্থানীয়রা জায়গাটিকে মোহনা হিসাবেই অভিহিত করেন। চারপাশ ভীষণ পরিচ্ছন্ন। হয়তো এই সৈকত পর্যটন মানচিত্রে এখনও সেভাবে জনপ্রিয় হয়নি বলেই, এখানে অকৃত্রিম প্রকৃতির সান্নিধ্য মেলে।

কী ভাবে যাবেন?

কলকাতা থেকে ব্রহ্মপুরের দূরত্ব ৬১৩ কিলোমিটার। হাওড়া থেকে ট্রেনে ব্রহ্মপুর। সেখান থেকে গাড়িতে মার্কণ্ডী সৈকত।

লাল কাঁকড়া বিচ

মন্দারমণি অতি পরিচিত একটি জায়গা। তবে তার অদূরেই দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর গ্রামের লাল কাঁকড়া সৈকতে এখনও তেমন ভাবে পর্যটকদের পা পড়ে না। ইদানীং অবশ্য পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে সেখানে, কিন্তু ভিড় তেমন হয় না। প্রচুর লাল কাঁকড়ার দেখা মেলে এখানে।

সমুদ্রের ধারে রয়েছে গ্রামবাসীদের চাষজমিও। পড়ন্ত বিকেলে সাগরের নোনা হাওয়া কিংবা রিমঝিম বৃষ্টিতে বিস্তীর্ণ সাগর পাড়ে দীর্ঘ ক্ষণ হাঁটতে পারেন আপন খেয়ালে। ঢেউ এসে ধুইয়ে দেবে পা। সূর্যাস্তও বড় মনোরম এখানে।

কীভাবে যাবেন?

হাওড়া বা কলকাতা থেকে দিঘা যাওয়ার পথে পড়ে চাউলখোলা। সেখান থেকে দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুরের লালকাঁকড়া সৈকত। থাকার জন্য রামকৃষ্ণ মিশনের অতিথি নিবাস আছে। আগাম বুকিং করে যেতে হয়।

Advertisement
আরও পড়ুন