Uttar Pradesh

‘তাড়া করছে রাতদিন’, ৪০ দিনে ১৩ বার ছোবল মেরেছে কালো রঙের একই সাপ! কিশোরীর দাবিতে হইচই

বস্তি ভাইসা গ্রামে প্রায় ৩০০ মানুষের বাস। সেই গ্রামেরই বাসিন্দা এক কিশোরী সম্প্রতি দাবি করেছে, একটি কালো সাপ বার বার তাঁকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:৪১
Girls from Uttar Pradesh claims a snake bites her 13th times in 40 days

—প্রতীকী ছবি।

৪০ দিনের ব্যবধানে তাঁকে ১৩ বার কামড়েছে একটি কালো সাপ। তাঁকে ধাওয়া করে নাকি কামড়েই যাচ্ছে সাপটি! ১৫ বছর বয়সি কিশোরীর দাবিতে হইচই পড়েছে উত্তরপ্রদেশের কৌশাম্বী জেলার ছোট্ট গ্রাম বস্তি ভাইসায়। কিশোরীর অস্বাভাবিক সেই দাবির পর আতঙ্কও ছড়িয়েছে ওই গ্রাম জুড়ে।

Advertisement

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বস্তি ভাইসা গ্রামে প্রায় ৩০০ মানুষের বাস। সেই গ্রামেরই বাসিন্দা এক কিশোরী সম্প্রতি দাবি করেছে, একটি কালো সাপ বার বার তাঁকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। তার আবেদন, ‘‘একটি কালো সাপ আমাকে রাতদিন তাড়া করছে। দয়া করে আমাকে বাঁচান।’’ সে আরও বলেছে, “সাপটি প্রতি বার আমার শরীরে কামড় বসালে আমার বৈদ্যুতিক শকের মতো অনুভূতি হয়। আমার শরীরে সাপটির কামড়ের চিহ্ন থেকে যায়।”

কিশোরীর পরিবারের সদস্যদেরও দাবি, রাতে দরজা বন্ধ রাখা সত্ত্বেও সাপটি কোনও ভাবে তাঁদের বাড়িতে প্রবেশ করে। ঘরের ভিতরে এবং বাইরে— সর্বত্রই কন্যাকে আক্রমণ করছে সাপটি। কিশোরীর দাবি, প্রতি বারই কামড় বসানোর সময় সাপটি জানান দেয় তাকে। উপস্থিতির প্রমাণস্বরূপ শরীরে কামড়ের চিহ্ন রেখে যায় সে।

পেশায় দিনমজুর কিশোরীর বাবা রাজেন্দ্র জানিয়েছেন, সাপটি প্রথম তাঁর কন্যাকে কামড়ায় ২২ জুলাই। তার পর থেকে এখনও পর্যন্ত আরও ১২ বার কামড়েছে সাপটি। চিকিৎসা বাবদ ৪ লক্ষ টাকারও বেশি খরচ হয়ে গিয়েছে। রাজেন্দ্র কথায়, ‘‘আমরা সাপ ধরার জন্য আবেদন করেছি বার বার। কিন্তু কেউ আসেনি। কখনও কখনও সাপ মাঠে লুকিয়ে থাকে, কখনও বাড়িতে। আমরা জানি না এটি কত দিন চলবে।’’ তিনি এ-ও জানিয়েছেন, ভয়ে তাঁর সন্তানদের আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে এসেছেন। একজন ওঝারও দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।

পুরো বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে গ্রাম জুড়ে। যদিও কিশোরী এবং তার পরিবারের বার বার দাবি সত্ত্বেও, গ্রামের আর কেউ সাপটিকে দেখেনি। এক জন গ্রামবাসী স্বীকার করেছেন, ‘‘আমরা কেবল কিশোরীর পরিবারের কাছ থেকে সাপের কথা শুনেছি। দেখিনি কখনও। সত্যি বলতে আমরা এটি সম্পর্কে কথা বলতেও ভয় পাই। যদি সাপটি পরে আমাদের ধরে!’’

মেয়ের এক পিসি অবশ্য দাবি করেছেন যে তিনি এক বার সাপটি দেখেছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘‘এটি মোটা, কালো এবং এক হাত সমান লম্বা। এটিকে ভিতরেও দেখেছি, আবার বাইরেও দেখেছি। সাপটি অবশ্যই একাধিক বার কামড়েছে আমাদের বাড়ির মেয়েকে।’’ ইতিমধ্যেই গ্রামের একটি সাপকে ধরা হয়েছে। গ্রামের মধ্যে ও রকম আরও একটি সাপ রয়েছে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তবে পুরো বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞেরা। কৌশাম্বীর প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার জানিয়েছেন যে, ২২ জুলাই এবং ১৩ আগস্ট সাপের কামড়ের জন্য মেয়েটির চিকিৎসা করা হয়েছিল। তবে ১৩ বার ছোবল বসানোর দাবির সমর্থনে কোনও প্রমাণ নেই। মানসিক কারণেও কিশোরী ওই দাবি করছেন বলে মনে করছেন অনেকে।

পুরো বিষয়টি হইচই ফেলেছে নেটপাড়াতেও। নেটাগরিকদের অনেকেই ওই ঘটনার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অনেকে আবার মনে করছেন, কিশোরীর দাবি সত্যি হলেও হতে পারে। তাঁদের দাবি, বর্ষাকালে ইঁদুর এবং ব্যাঙ শিকার করতে অনেক সাপই গ্রামের বাড়িগুলিতে ঢুকে পড়ে। তবে ৪০ দিনে একই সাপ ১৩ বার কামড়েছে কিশোরীকে— তেমনটা বিশ্বাস করতে নারাজ নেটাগরিকদের অধিকাংশই।

Advertisement
আরও পড়ুন