Human Trafficking Racket

কাজের আশায় গিয়ে যৌন ব্যবসার কবলে, হদিস চক্রের

গত ২৩ নভেম্বর পুলিশ আশুতোষ দে এবং আনিসা দে নামেঅভিযুক্ত ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করে।

ঋষি চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:৪৬
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

উত্তর ২৪ পরগনায় বড়সড় পাচার-চক্রের হদিস পেল বারাসত পুলিশ জেলা।

আয়া সেন্টারে কাজ দেওয়ার নাম করে এক নাবালিকা ও এক তরুণীকে যৌন ব্যবসায় নামানোহয়েছিল। মধ্যমগ্রাম এলাকার বিভিন্ন হোটেল ও স্পা-এ তাঁদের দেহ ব্যবসার জন্য পাঠানো হত বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় পুলিশ এক দম্পতি ও দুই দালালকে গ্রেফতার করেছে। অভিযোগ, কাজ দেওয়ারপ্রলোভন দেখিয়ে দত্তপুকুর, অশোকনগর, আমডাঙা ও দেগঙ্গা থেকে অল্পবয়সি মেয়েদের নিয়ে এসে বিভিন্ন হোটেল এবং স্পা-এ দেহ ব্যবসার কাজে নামানোহচ্ছিল। পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝারখরিয়া জানান, বেশ কয়েক জন দালালকে পুলিশ চিহ্নিত করেছে। তাদের গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। পুলিশ জানায়, গত ১৫ সেপ্টেম্বর অশোকনগর থেকে একনাবালিকা এবং এক তরুণী নিখোঁজ হয়ে যান। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মামলা রুজু করে। ইতিমধ্যে ওই তরুণী ফিরে আসেন।তাঁর সঙ্গে কথা বলে পুলিশ দেহ ব্যবসার চক্রের বিষয়টি জানতে পারে। তদন্তে নেমে জানা যায়, আয়া সেন্টারের ওই দম্পতিমেয়েদের মধ্যমগ্রামের একটি গোপন ডেরায় রেখে বিভিন্ন হোটেল এবং স্পা-এ পাঠিয়ে দেহব্যবসা চালাত।

গত ২৩ নভেম্বর পুলিশ আশুতোষ দে এবং আনিসা দে নামেঅভিযুক্ত ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের জেরা করে এবং উদ্ধার হওয়া তরুণীর বয়ানের উপরে ভিত্তি করে গতরবিবার বারাসতের কাজিপাড়ার একটি স্পা থেকে অশোকনগরের এক নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়। স্পা-রম্যানেজার ইসলাম দর্জি এবং দুই দালাল, বাপি কর্মকার ওরফে রাহুল ও নিতু সিংহকে গ্রেফতারকরার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

উল্লেখ্য, দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে পাচারের ঘটনা অনেক ঘটেছে। এ বার উত্তর ২৪ পরগনাতেওপাচার-চক্রের খোঁজ মিলল। পুলিশ জানিয়েছে, নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়েদের কাজ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে যৌন ব্যবসায় নামানোর একাধিক অভিযোগ পেয়েছে তারা। উদ্ধার হওয়া এক নাবালিকার কথায়, ‘‘কাজের প্রয়োজন ছিল। একবান্ধবীর মাধ্যমে নিতুর সঙ্গে যোগাযোগ হয়। নিতু আমাকে ওর বাড়িতে রেখে দেহ ব্যবসা চালাত। এর পরে আমাকে পাচার করে দেওয়া হয় কলকাতার যাদবপুরেরবাপি কর্মকারের কাছে। সেখান থেকে কোনও ভাবে পালিয়ে রহড়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতেচলে আসি। পরে পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে।’’

উদ্ধার হওয়া তরুণীর অভিযোগ, ‘‘গত সেপ্টেম্বরে কাজের জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম। একপরিচিতের মাধ্যমে মধ্যমগ্রামের আয়া সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। আনিসা কাজের প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে দেহ ব্যবসায় নামিয়েছিল। আমাকে একটি হোটেলে আটকে রাখা হয়। সেখান থেকে বেরোনোর কোনও উপায় ছিল না।তিন মাস কাজ করেছি। কিন্তু কোনও টাকা দেয়নি।’’ তদন্তকারীরা জানান, বারাসত ও মধ্যমগ্রামের বিভিন্ন হোটেল এবং স্পা-এনজরদারি চলছে। দালালেরা মূলত নিশানা করত পঞ্চায়েত এলাকার নিম্নবিত্ত পরিবারের নাবালিকা এবং তরুণীদের।তাঁদের মোটা টাকা উপার্জনের প্রলোভন দেখিয়ে দেহ ব্যবসার কাজে নামাত।

পুলিশ সুপার জানান, দালালেরা সিন্ডিকেটের মতো করে হোটেল এবং স্পা-এ নাবালিকা এবংতরুণীদের পাচার করত। ওই সব এলাকায় দেহ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অন্য নাবালিকাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন