SIR in West Bengal

এসআইআরের ‘চাপে’ শিক্ষকহীন স্কুল, পড়ুয়াদের ক্লাস নিচ্ছেন মিড ডে মিলের রাঁধুনি!

শিক্ষকের সংখ্যা তিন। সেই তিন জনই এখন বুথ স্তরের আধিকারিক বা বিএলওর দায়িত্ব পালন করছেন। তাই তিন জনই স্কুলে অনুপস্থিত। এমতাবস্থায় গত কয়েক দিন ছেলেমেয়েরা স্কুলে আসছিল। বসে বসে বাড়ি চলে যাচ্ছিল।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৫ ১৪:০৫
Primary School

হাতা-খুন্তি ছেড়ে শিক্ষিকার ভূমিকায় রাঁধুনি।— নিজস্ব চিত্র।

ছেলেমেয়ে যাচ্ছে। বসে বসে চলে আসছে। রাঁধুনি যা পারছেন, পড়াচ্ছেন। কিন্তু শিক্ষকেরা আসবেন না কেন?

Advertisement

শিক্ষকেরা ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআরে ব্যস্ত। কিন্তু স্কুলে ছুটি দেওয়া যাবে না। চালাতেই হবে। তাই হাতা-খুন্তি ছেড়ে হাতে চক-ডাস্টার তুলে নিলেন মিড ডে মিলের রাঁধুনি। কিন্তু এ ভাবে কত দিন? চিন্তায় অভিভাবকেরা।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ব্লকের মৌসুনী দ্বীপের কুসুমতলা পশ্চিম অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত কয়েক দিনে পড়াশোনা মাথায় উঠেছে। পড়ুয়া সংখ্যা কম হলেও গ্রামের ভরসা ওই স্কুল। শিক্ষকের সংখ্যা তিন। সেই তিন জনই এখন বুথ স্তরের আধিকারিক বা বিএলওর দায়িত্ব পালন করছেন। তাই তিন জনই স্কুলে অনুপস্থিত। এমতাবস্থায় গত কয়েক দিন ছেলেমেয়েরা স্কুলে আসছিল। বসে বসে বাড়ি চলে যাচ্ছিল। ছাত্রছাত্রীর অনুপস্থিতির হার বাড়ছে। কয়েক দিন মিড ডে মিলও বন্ধ সে জন্য। এই অবস্থায় ছেলেমেয়েদের পড়াচ্ছেন রাঁধুনি অনুমতি মণ্ডল। প্রৌঢ়ার কথায়, ‘‘প্রধানশিক্ষক যা বলেছেন, আমি সেই অনুযায়ী কাজ করছি। উনি বলেছেন, ছুটি দেওয়া যাবে না। অন্য দিকে, কোনও দিন রান্না হচ্ছে, কোনও দিন হচ্ছে না। বাচ্চারা স্কুলে এসে শুধু দুষ্টুমি করছে। তাই যে টুকু জানি, তাই দিয়ে ওদের পড়াচ্ছি।’’

কিন্তু এ ভাবে কত দিন? তাঁরা প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দা বলে ছেলেমেয়েরা কি ঠিকঠাক পড়াশোনা করার সুযোগ পাবে না? প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকেরা। প্রতিমা মণ্ডল নামে এক অভিভাবিকার কথায়, “বাচ্চারা স্কুলে গেলেও পড়াশোনা হচ্ছে না। রাঁধুনি ক্লাস করছেন। এ ভাবে চললে ওদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।” করুণা মণ্ডলের ক্ষোভ, “সামনেই ছেলেমেয়েদের ফাইনাল পরীক্ষা। শিক্ষক গিয়েছেন এসআইআরের কাজ করতে। তা হলে বাচ্চাদের লেখাপড়ার কী হবে?”

বস্তুত, এসআইআরের দায়িত্ব পেয়ে রাজ্যের অনেক প্রাথমিক স্কুলের পরিস্থিতি এমনই। একই স্কুলের সমস্ত শিক্ষককে বিএলও করা হয়েছে। সেই কাজ করতে গিয়ে তাঁরা স্কুল কামাই করছেন। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরি বলে জানাচ্ছেন মৌসুনী দ্বীপের বাসিন্দারা।

Advertisement
আরও পড়ুন