মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনের জেরে এক সময় সিঙ্গুর ছেড়ে গিয়েছিল টাটা গোষ্ঠী। সেই সিঙ্গুরেই এ বার ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিল তাঁর নেতৃত্বাধীন রাজ্য মন্ত্রিসভা। বুধবার নবান্নে আয়োজিত বৈঠকে সিঙ্গুরে ওয়্যারহাউস প্রকল্পে সম্মতি দিয়েছে রাজ্য সরকার। অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, নাহার ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেড এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে। সংস্থাকে ৯৯ বছরের জন্য লিজে ১১.৩৫ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। এই প্রকল্প চালু হলে অ্যামাজন ও ফ্লিপকার্টের মতো ই-কমার্স সংস্থার পরিষেবা আরও মসৃণ হবে বলে মনে করছে রাজ্য। ২০০৮ সালের অক্টোবর মাসে যেদিন সিঙ্গুর থেকে টাটা গোষ্ঠী বিদায় নিয়েছিল, সেদিন রাজ্যের বামফ্রন্ট সরকার মমতাকে শিল্পবিরোধী তকমা দিয়ে অভিযুক্ত করেছিল। আর রাজ্যে ক্ষমতায় আসার সাড়ে ১৪ বছর পর ৫০০ কোটির বিনিয়োগ এনে দিয়েছেন সেই মমতাই।
বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ১৬০০ মেগাওয়াট উৎপাদনের সিদ্ধান্ত
রাজ্যে বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মাথায় রেখে নিলামের মাধ্যমে নতুন বিদ্যুৎ প্রকল্পের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নিলামে জেএসডাব্লিউ এনার্জি লিমিটেড প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টায় ৫.৮১ টাকা দরে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রস্তাব দেয়। পিপিপি মডেলে ১৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার নিউ সুপার ক্রিটিক্যাল থার্মাল পাওয়ার প্লান্ট গড়া হবে। ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট তৈরি হবে। কোথায় জমি নেওয়া হবে তা সংশ্লিষ্ট সংস্থাই ঠিক করবে এবং জমি অধিগ্রহণের দায়িত্বও তাদেরই থাকবে।
মাদার ডেয়ারি ও বাংলা ডেয়ারি একীভূত
মন্ত্রিসভার বৈঠকে মাদার ডেয়ারি ক্যালকাটা ও বাংলা ডেয়ারিকে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর এখন থেকে এই সংস্থা ‘বাংলা ডেয়ারি’ নামে পরিচিত হবে। মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, মাদার ডেয়ারির দুধ ও দই দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যে জনপ্রিয়।
জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি পার্ক ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
হাওড়ার অঙ্কুরহাটিতে ০.৫ একর জমি জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি পার্কের দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। সেখানে প্রশিক্ষণের কাজ করবে কারিগরি শিক্ষা দফতর।
বিভিন্ন শিল্প পার্কে জমি বরাদ্দ
পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগমের আওতায় একাধিক শিল্প পার্কে জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। বিদ্যাসাগর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ৩০.৪২ একর, পানাগড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ১.৩৭ একর, হরিণঘাটা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ২.৭৭ একর এবং জঙ্গল সুন্দরী কর্মনগরীতে ১৫৫ একর জমি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ডোমজুড়ের জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি পার্কে অফিস স্পেসের জন্য ২০,২৬০ বর্গফুট জমি বরাদ্দ হয়েছে। একাধিক সিদ্ধান্তে শিল্প, বিদ্যুৎ ও পরিকাঠামো উন্নয়নে নতুন গতি পাবে রাজ্য—এমনটাই মনে করছে প্রশাসনিক মহল।