পুরীতে বন্ধুর বাড়িতে ‘আত্মগোপন’ করে ছিলেন বিএলও অমিতকুমার মণ্ডল। দাবি পুলিশের। —নিজস্ব ছবি।
এসআইআর শুনানি শুরু ঠিক আগেই রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার এক বিএলও। অবশেষে তাঁর খোঁজ মিলেছে। ওড়িশার পুরী থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত শনিবার থেকে শুরু হয় বিশেষ নিবিড় সংশোধনী (এসআইআর) সংক্রান্ত শুনানি প্রক্রিয়া। তার আগে হঠাৎ শোরগোল পড়ে যায় কাটোয়ায়। কারণ, অমিতকুমার মণ্ডল নামে এক বিএলও-র খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। ওই খবর ছড়িয়ে পড়তে রাজ্য প্রশাসনের অন্দরেও চাঞ্চল্য শুরু হয়ে যায়। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে দ্রুত তদন্তে নামে কাটোয়া থানার পুলিশ। পুলিশি তৎপরতায় অবশেষে পুরীর সমুদ্রসৈকত এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিএলওকে। পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার অমিতকে কাটোয়া মহকুমা আদালতে বিচারকের সামনে হাজির করানো হবে। তাঁর গোপন জবানবন্দি নেবে আদালত।
অমিতের পরিবার সূত্রে খবর, গত ২৩ ডিসেম্বর বাড়িতে এসআইআর সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে কাজে বসেছিলেন ওই বিএলও। কিছু ক্ষণ পরে সেই সমস্ত কাগজপত্র টেবিলে রেখে উঠে যান তিনি। তার পর আর খোঁজ মিলছিল না কাটোয়া-১ ব্লকের খাজুরডিহি পঞ্চায়েতের বিকিহাট এলাকার বাসিন্দা তথা কাটোয়ার ২৩ নম্বর বুথের বিএলও-র। তাঁর ভাই অভিজিৎ মণ্ডল কাটোয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অমিত পেশায় শিক্ষক। কেতুগ্রামের উদ্ধারণপুর প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। পুলিশি তদন্তে উঠে আসে শেয়ার বাজারে প্রচুর টাকা বিনিয়োগ করতেন তিনি। সম্প্রতি শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে বড় আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তাঁর। বাজারে লক্ষাধিক টাকার দেনা হয়ে গিয়েছে। তদন্তকারীদের অনুমান, দেনার চাপেই পালিয়ে গিয়েছিলেন অমিত। কাজের চাপে নয়। প্রথমে কলকাতা, সেখান থেকে পুরীতে গিয়ে এক বন্ধুর বাড়িতে উঠেছিলেন।
ছ’দিন পর অমিতের খোঁজ মেলার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে কাটোয়া মহকুমা প্রশাসন। কারণ, এসআইআর শুনানির জন্য ২৩ নম্বর বুথের ৩০ জন ভোটারের কাছে নোটিস বিলি করা হয়েছিল। সেই শুনানি প্রক্রিয়ায় বিএলও হিসাবে অমিতের উপস্থিতি জরুরি। কাটায়ো ফিরে প্রকাশ্যে একটি কথা বলতেও নারাজ ওই বিএলও। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে।