হাই কোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন হুমায়ুন কবীর। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে সংঘাত এবং ছেলের গ্রেফতারির পর রাজ্য পুলিশকে নিশানা করলেন হুমায়ুন কবীর। ভরতপুরের বিধায়ক তথা জনতা উন্নয়ন পার্টির প্রতিষ্ঠাতা জানিয়েছেন, আর রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তার ভরসায় থাকবেন না। কিছু দিন আগে হায়দরাবাদের রক্ষী আনতে গিয়ে ঠকে যাওয়া বিধায়ক এ বার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে আবেদনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
রবিবার অফিসঘরে নিজেরই নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে অশান্তিতে জড়ান হুমায়ুন এবং তাঁর পুত্র। তার পর ওই নিরাপত্তারক্ষীর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার হন হুমায়ুনের ছেলে গোলাম নবি আজাদ। প্রায় সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর রবিবার রাতে শক্তিপুর থানা থেকে বার হন বেলডাঙা-২ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ গোলাম। সোমবার নতুন অভিযোগ করেছেন হুমায়ুন। তিনি জানান, নতুন দল তৈরির পর শাসকদলের নির্দেশে তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে ‘টার্গেট’ করেছে পুলিশ। এমনকি, তাঁর একমাত্র মেয়ের শ্বশুরবাড়ির সামনে ইতস্তত ভাবে ঘুরছে পুলিশ। ভরতপুরের বিধায়কের কথায়, ‘‘আমার মেয়ের শ্বশুরবাড়ি লালগোলায়। জামাই ব্যবসায়ী। ওদের একাধিক বাড়ি। খেয়েদেয়ে পুলিশের কাজ নেই। ওরা মেয়ের বাড়ির সামনে গিয়ে ঘুরছে! ছবি তুলছে!’’ পর ক্ষণেই হুমায়ুন-হুঁশিয়ারি, ‘‘আমার জামাইয়ের গায়ে যদি পুলিশ হাত দেয়, ওই পুলিশ তো বটেই, থানার ইট খুলে নেব।’’ পাশাপাশি, নিরাপত্তাকর্মীর সঙ্গে তাঁর গন্ডগোল প্রসঙ্গে বিধায়কের মন্তব্য, ‘‘পুলিশ মারলে আমি কি রসগোল্লা খাওয়াব!’’
তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পরে হুমায়ুন আশঙ্কা করেছিলেন তাঁর নিরাপত্তা প্রত্যাহার করতে পারে পুলিশ। কিন্তু তিনি নতুন দল গড়ার পরেও বিধায়ক হিসাবে তিন জন কনস্টেবলকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য পান। তাঁদের মধ্যে একজনের সঙ্গে অশান্তিতে জড়ান রবিবার। হুমায়ুন দাবি করছেন, পুলিশ দিয়ে তাঁর এবং তাঁর পরিবারের উপর নজরদারি করছে শাসকদল। এ সব ভেবেচিন্তে তিনি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা চেয়ে আদালতে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘‘ওই তিন নিরাপত্তারক্ষীর একজন, যাঁকে নিয়ে এত কথা, তিনি প্রায়শই ছুটিতে থাকেন। বাকি দু’জনের যতটুকু কাজ, তাঁরা তা না করে মোবাইল ঘাঁটেন, ভিড়ের মধ্যে পড়ে গেলে ২ মিটার দূরে থাকেন।’’ বিধায়ক জানাচ্ছেন, এই সব ভেবে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন নিরাপত্তার স্বার্থে হাই কোর্টে যাবেন।
হুমায়ুনের ছেলে গোলাম জানিয়েছেন, বাবার সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীর গোলমালে তিনি নাক গলাতে চাননি। কিন্তু রবিবার সকালে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে কী হয়েছে জানতে তিনি হুমায়ুনের অফিসঘরে ছুটে গিয়েছিলেন। তিনি মিটমাটের চেষ্টা করলে ওই পুলিশকর্মী তাঁর উপর চড়াও হয়েছিলেন। তিনি পুলিশের গায়ে হাত তোলেননি। গোলামের কথায়, ‘‘মারধরের কোনও প্রশ্নই নেই। গোটা বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ দেওয়া হয়েছে। সমস্ত কিছু দেখেশুনে পুলিশ জামিন দিয়েছে।’’