Election Commission

মন্ত্রীর ভ্রান্তিবিলাস! কলকাতার সিইও দফতরে পৌঁছে বিজেপির শান্তনু ঠাকুর শুনলেন, মিটিংটা আসলে দিল্লিতে

কলকাতায় সিইওর দফতরের কর্মীদের কাছ থেকে বিষয়টি স্পষ্ট ভাবে জানতে পারেন শান্তনু। তার পরে তিনি জানান, একটা ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হয়ে গিয়েছে। যদিও এই ঘটনার পরে বিজেপির অন্দরে সমন্বয় নিয়ে আবার প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:২৪
দিল্লিতে নির্বাচন সদনে বৈঠকে শমীক ভট্টাচার্য-সহ বিজেপির প্রতিনিধিদল। (ইনসেটে) শান্তনু ঠাকুর।

দিল্লিতে নির্বাচন সদনে বৈঠকে শমীক ভট্টাচার্য-সহ বিজেপির প্রতিনিধিদল। (ইনসেটে) শান্তনু ঠাকুর। — নিজস্ব চিত্র।

দিল্লি থেকে ফিরে এসেছেন রবিবার। কথামতো সোমবার বিকেলে কলকাতায় মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতরে পৌঁছে যান বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। সেখানে গিয়ে শোনেন, বৈঠক আসলে দিল্লিতে, নির্বাচন কমিশনের সদর দফতরে। সেখানে তত ক্ষণে পৌঁছে বৈঠক শুরু করে দিয়েছে রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল। কলকাতায় সিইওর দফতরের কর্মীদের কাছ থেকে বিষয়টি স্পষ্ট ভাবে জানতে পারেন শান্তনু। তার পরে তিনি জানান, একটা ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হয়ে গিয়েছে। যদিও এই ঘটনার পরে বিজেপির অন্দরে সমন্বয় নিয়ে আবার প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। দিল্লির বৈঠকে শান্তনু অনুপস্থিত থাকায় মতুয়াদের প্রসঙ্গ কমিশনের কাছে কতটা পৌঁছোল, সেই নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন।

Advertisement

রাজ্যের ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) শুরু হয়েছে। কথা ছিল, সোমবার দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দফতরে যাবে বিজেপির প্রতিনিধিদল। সেখানে গিয়ে কমিশনের সঙ্গে কথা বলবে। সেই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে রয়েছেন শমীক। কমিশনের দফতরে যাওয়ার কথা ছিল শান্তনুরও। কিন্তু রবিবার দিল্লি থেকে ফিরে এসে সোমবার বিকেল ৪টে নাগাদ তিনি পৌঁছে যান কলকাতায় সিইও-র দফতরে।

কমিশনের দফতর সূত্রে খবর, সেখানে গিয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা রক্ষীদের বিজেপি সাংসদ জানান, আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করতে চান। তাঁর ‘অ্যাপয়েন্টমেন্ট’ রয়েছে কি না, জানতে চান রক্ষীরা। শান্তনুর সহকারীরা ‘অ্যাপয়েন্টমেন্ট’ দেখালে রক্ষীরা জানান, এই বৈঠক আসলে দিল্লিতে কমিশনের সদর দফতরে নির্ধারিত রয়েছে। এর পরেই শান্তনু সহযোগীরা প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। তখন পুরো বিষয়টি জানতে পারেন।

এর পরেই বিজেপির প্রতিনিধিদলের সমন্বয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, শমীক-সহ দলের বাকি সদস্যেরা দিল্লি চলে গেলেন, অথচ তা কেন জানতেই পারলেন না শান্তনু! উল্টে দিল্লি থেকে ফিরে এলেন বৈঠকের এক দিন আগেই। প্রতিনিধিদলে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে বলে শান্তনু যদিও মানতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমি কলকাতায় চলে এসেছি। ওঁরা দিল্লিতে চলে গেছেন।’’

বিজেপির প্রতিনিধিদলে যখন শান্তনু ছিলেন, তখন মনে করা হয়, কমিশনের কাছে মতুয়াদের প্রসঙ্গও উঠে আসবে। ২০০২ সালের এসআইআরের তালিকায় যে মতুয়াদের নাম নেই, তাঁদের অনেকের মধ্যেই উদ্বেগ রয়েছে। ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়িতে মতুয়া সমাজের জন্য সহযোগিতা শিবির চালু করে দেওয়া হয়। শান্তনুর উদ্যোগে ঠাকুরবাড়ির নাটমন্দিরে শিবিরটি চালু হয়। সেখানে মতুয়া সমাজের যাঁরা উদ্বাস্তু হয়ে ও পার বাংলা থেকে চলে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন, তাঁদের সিএএ আবেদন জমা দিতে সহায়তা করা হচ্ছে। সিএএ-র আওতায় আবেদন জমা দিতে হলে ধর্মীয় পরিচিতি সংক্রান্ত শংসাপত্র জরুরি। ঠাকুরবাড়ির নাটমন্দির থেকে সেই শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শান্তনু কমিশনের কাছে এই বিষয়গুলি তুলে ধরতে পারতেন বলে মনে করা হয়। এ বার সেই সাক্ষাৎ না হওয়ায় মতুয়াদের প্রসঙ্গ কমিশনের কাছে কতটা পৌঁছেছে, সে-ই নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।

Advertisement
আরও পড়ুন