Dilip at Modi’s Rally

দুর্গাপুরে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দিচ্ছেন দিলীপ! আমন্ত্রণ জানায়নি দল, ‘কর্মীদের ডাকে শ্রোতা হয়েই’ হাজির হবেন

গত দু’মাসে রাজ্য বিজেপির প্রায় কোনও কর্মসূচিতেই দিলীপ ডাক পাননি। সাংগঠনিক নির্বাচনপর্ব ঘিরে একাধিক বড় বৈঠক হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আলিপুরদুয়ারে জনসভা করেছেন। নেতাজি ইনডোরে অমিত শাহ সমাবেশ করেছেন। কোথাও দিলীপ ডাক পাননি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৫ ১৯:৪৩
Dilip Ghosh to attend PM Modi’s public meeting at Durgapur, Party didn’t invite, Workers did, says former state BJP chief

দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

কবে, কোন মঞ্চে তাঁকে দেখা যেতে পারে, তা নিয়ে জল্পনার অন্ত নেই। দিলীপ ঘোষ নিজেও নানা মন্তব্য এমন রহস্যের মোড়কে করছেন যে, জল্পনা অক্সিজেন পাচ্ছে। আগামী ২১ জুলাই তাঁকে তৃণমূলের শহিদ স্মরণ মঞ্চে দেখা যাবে কি না, রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতিকে একাধিক বার সরাসরি সে প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছে। দিলীপ সে সবের জবাবে বলছিলেন, ‘‘২১ জুলাইতেই সব স্পষ্ট হয়ে যাবে, আর জল্পনা থাকবে না।’’ কিন্তু তার আগে আলোচনায় উঠে এল ১৮ জুলাই। ১৮ তারিখ অর্থাৎ আগামী শুক্রবার দুর্গাপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জনসভা করবেন। আর দিলীপ সে সভায় উপস্থিত থাকবেন। নেতৃত্বের তরফ থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ তিনি পাননি। কিন্তু দিলীপ বলছেন, ‘‘সাধারণ শ্রোতা হিসেবে জনসভায় হাজির থাকতে তো বাধা নেই’’।

Advertisement

গত দু’মাসে রাজ্য বিজেপির প্রায় কোনও কর্মসূচিতেই দিলীপ ডাক পাননি। সাংগঠনিক নির্বাচনপর্ব ঘিরে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের পৌরোহিত্যে একাধিক বড় বৈঠক হয়েছে। দলের রাজ্য সভাপতি বাছাইয়ের জন্য মনোনয়ন পর্ব হয়েছে। পরের দিন নতুন রাজ্য সভাপতির নাম ঘোষণা এবং অভিনন্দনপর্ব হয়েছে। কোনওটিতেই প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপকে ডাকা হয়নি। গত ২৯ মে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আলিপুরদুয়ারে জনসভা করেন। তার পরে ৩১ মে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে অমিত শাহ সাংগঠনিক সমাবেশ করেন। সে সব কর্মসূচিতেও দিলীপ আমন্ত্রণ পাননি। যানওনি। কিন্তু শুক্রবার দুর্গাপুরে মোদী যে সভা করতে আসছেন, সেখানে দিলীপ উপস্থিত থাকবেন বলে তিনি নিজেই জানাচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকার জন্য দলের তরফ থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্তও দিলীপের কাছে পৌঁছোয়নি। দিলীপের কথায়, ‘‘আমি কোনও আমন্ত্রণ পাইনি। তবে দলের সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের ফোন পাচ্ছি। তাঁরা আন্তরিক ভাবে দুর্গাপুরে ডাকছেন। তাই আমি যাব। সাধারণ শ্রোতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শুনব। কোনও অসুবিধা নেই।’’

বছরখানেক আগের লোকসভা নির্বাচনে দিলীপ যে বর্ধমান-দুর্গাপুর আসন থেকে লড়েছেন, সেই এলাকাতেই মোদীর সভা। প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষিত হওয়ার পর থেকে কয়েক মাস দিলীপ বাড়ি ভাড়া নিয়ে বর্ধমানেই থাকছিলেন। এলাকার বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে তখন দিলীপের যোগসূত্রও নিবিড় হয়েছিল। তাঁদের অনেকে আশা করেছিলেন যে, গত লোকসভা নির্বাচনে এলাকার বিজেপি প্রার্থী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশে দিলীপ আমন্ত্রণ পাবেন। কিন্তু সে আমন্ত্রণ পৌঁছোয়নি। দিলীপের দাবি, স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের একাংশই সভায় উপস্থিত থাকার অনুরোধ করতে শুরু করেছেন। অনুরোধে সাড়া দিয়ে দিলীপ সভাস্থলে হাজির হওয়ার পর ছবিটা কেমন হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা প্রাক্তন সর্বভারতীয় সহ-সভাপতিকে দর্শকাসনে বসে থাকতে দেখে বর্তমান রাজ্য নেতৃত্ব স্বস্তি বোধ করবেন কি না, দিলীপ সভাস্থলে হাজির হওয়ার পরে তাঁকে মঞ্চে ডেকে নেওয়া হবে কি না, এমন নানা প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে। তবে বিজেপি সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর সভায় সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা থাকে। মঞ্চে কে কে থাকবেন, মঞ্চের পিছনে কারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন, সে সব বিষয়েও প্রধানমন্ত্রীর দফতর আগে থেকে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে খোঁজখবর নিয়ে রাখে। তাই প্রধানমন্ত্রীর সভায় আচমকা কাউকে দর্শকাসন থেকে মঞ্চে ডেকে নেওয়া কঠিন হবে।

Advertisement
আরও পড়ুন