—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বহুতল আবাসনগুলিতে পৃথক ভাবে ভোটকেন্দ্র তৈরির যে পরিকল্পনা নিয়েছিল কমিশন, তা থেকে পিছিয়ে গেল তারা। আবাসনের জন্য আলাদা করে কোনও বুথ হচ্ছে না।
আবাসনে বুথ তৈরির জন্য জেলার নির্বাচনী আধিকারিকদের (ডিইও) কাছে রিপোর্ট চেয়েছিল কমিশন। সোমবার পর্যন্ত সেই রিপোর্ট পাঠানোর সময়সীমা ছিল। কমিশন সূত্রে খবর, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বুথ করা নিয়ে মাত্র দু’টি রিপোর্ট এসেছে। রাজনৈতিক দল এবং আবাসনগুলির তরফে এ ব্যাপারে তেমন কোনও আগ্রহ দেখা যায়নি। সেই কারণেই আবাসনে বুথ তৈরির পরিকল্পনা থেকে পিছিয়ে গেল কমিশন।
এসআইআর চলাকালীন গত মাসে কয়েক দিনের ব্যবধানে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে জোড়া চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে অন্যতম বিষয় ছিল আবাসনে বুথ তৈরিতে আপত্তি। কমিশন-শাসক পক্ষ সংঘাতে বেসরকারি আবাসনে বুথ তৈরির নির্দেশ নিয়ে চিঠিতে মমতা প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘‘এটা সমস্যাজনক। বুথ সব সময়েই সরকারি বা আধা-সরকারি জায়গায় হয়ে থাকে। আবাসনে বুথ তৈরি হয় কী ভাবে?’’ মমতার চিঠির পরে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল বলেছিলেন, ‘‘জাতীয় নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিইও এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।’’ কিন্তু কমিশনই সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে গেল।
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে শহরাঞ্চলের ভোটের হার বৃদ্ধিতে জোর দিতে চায় নির্বাচন কমিশন। সেই লক্ষ্যেই বলা হয়, শহরের যে সমস্ত বহুতল আবাসনে ৩০০ জনের বেশি ভোটার রয়েছেন, তার ভিতরেই ভোটকেন্দ্র তৈরি হবে। আবাসনের বাসিন্দারা সেখানে ভোট দেবেন। তাঁদের আর বাইরে যেতে হবে না। বাইরে থেকে কেউ সেখানে ঢুকতেও পারবেন না।
কমিশনের এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করছে তৃণমূল। কলকাতার আবাসন কমিটিগুলিকে নিয়ে সম্প্রতি ক্ষুদিরাম অনুশীল কেন্দ্রে বৈঠক করেন মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীও ফোনে কথা বলেছিলেন। তৃণমূল যেমন আবাসনে বুথ তৈরির বিরোধিতা করেছিল, তেমন কমিশনের পদক্ষেপকে সমর্থন করেছিল রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। কিন্তু সোমবার পর্যন্ত তাতে কোনও আগ্রহই দেখা গেল না আবাসনগুলির তরফে। ফলে সিদ্ধান্ত নিয়েও পিছিয়ে যেতে হল কমিশনকে।