—প্রতীকী চিত্র।
বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা রোজ় ভ্যালির কর্তা, জেল হেফাজতে থাকা গৌতম কুণ্ডুর অভিযোগের ভিত্তিতে সিবিআইয়ের দায়ের করা আর্থিক প্রতারণার মামলায় সিকিয়োরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি)-র প্রাক্তন কর্তা আর পি সিংহকে দোষী সাব্যস্ত করল আলিপুরের সিবিআই বিশেষ আদালত। সোমবার ওই মামলায় বিচারক অভিযুক্ত সেবি-কর্তাকে দোষী সাব্যস্ত করেন বলে জানিয়েছেন গৌতমের আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী।
আদালত সূত্রের খবর, ২০১০ সালে রোজ় ভ্যালির অর্থলগ্নি ব্যবসার নানা নথির আইনি জটিলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে থাকেন ওই সেবি-কর্তা। অভিযোগ, গৌতমের থেকে সে সময়ে এক কোটি টাকা দাবি করেন তিনি। এর পরেই ওই সেবি-কর্তার বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন গৌতম। সিবিআই তদন্তকারীরা ফাঁদ পাতেন। গৌতম এক কোটি টাকার পরিবর্তে ২৫ লক্ষ টাকা অগ্রিম দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এবং শহরের একটি পাঁচতারা হোটেলে ওই টাকা দেওয়া হবে বলে জানান। অভিযোগ, সেই টাকা নেওয়ার সময়েই হাতেনাতে সিবিআইয়ের কাছে ধরা পড়েন আর পি সিংহ।
আদালতে সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারের দাবি, ১০০ টাকার নোটের পঁচিশটি বান্ডিলে ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। প্রতিটি বান্ডিলে বিশেষ রাসায়নিক মাখানো ছিল। এবং প্রতিটি বান্ডিলের গায়ে ‘ডেল’ বলে ছোট্ট কাগজের চিরকুট লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ওই টাকার বান্ডিল হাতে নিলেই রাসায়নিক আঙুলে লেগে যাবে। এবং ‘ডেল’ লেখা থাকলে ওই টাকা গৌতমের কাছ থেকে দেওয়া হয়েছে বলে প্রমাণিত হবে। ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারি ওই টাকা একটি কালো ব্যাগে করে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ওই সেবি-কর্তাকে দেওয়া হয়। তখনই তিনি হাতেনাতে ধরা পড়েন। তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়। পরে তিনি জামিন পান।
তবে, বর্তমানে সিবিআই ও ইডি-র বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার প্রতারণা সংক্রান্ত একাধিক মামলায় জেল হেফাজতে রয়েছেন গৌতম। তাঁর আইনজীবী বিপ্লব বলেন, ‘‘সিবিআই ও ইডি-র অধিকাংশ মামলায় গৌতমের জামিন মঞ্জুর হয়েছে। এখন মাত্র দু’টি মামলায় জেল হেফাজতে রয়েছেন আমার মক্কেল। তবে, সেবি-কর্তার বিরুদ্ধে ২০১০ সালের গৌতমের অভিযোগ আদালতে মান্যতা পেয়েছে। বিচারক সেবি-কর্তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন।’’ আজ, মঙ্গলবার দোষী সাব্যস্ত সেবি-কর্তার সাজা ঘোষণা হতে পারে।