SIR in Bengal

শনিবার শুরু হচ্ছে ভোটার-শুনানি পর্ব! প্রথম দফায় ডাক পেলেন কারা? কী কী নথি লাগবে, কী ভাবে হবে যাচাই

শনিবার থেকে রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে শুরু হচ্ছে শুনানি-পর্ব। ২০০২ সালের তালিকার সঙ্গে যে ভোটারদের কোনও ‘ম্যাপিং’ করা যায়নি, সেই ৩১ লক্ষ ৬৮ হাজার ৪২৪ জন শুনানির প্রথম পর্বে ডাক পাবেন।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ২১:১৯

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

রাজ্যে শুরু হচ্ছে ভোটার-শুনানি! শনিবার থেকেই ‘ম্যাপিং’-এ বাদ পড়া ভোটারদের শুনানি শুরু করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। ২০০২ সালের তালিকার সঙ্গে যে ভোটারদের কোনও ‘ম্যাপিং’ করা যায়নি, সেই ৩১ লক্ষ ৬৮ হাজার ৪২৪ জন শুনানির প্রথম পর্বে ডাক পাবেন। ইতিমধ্যে শুনানির নোটিসও হাতে পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

শনিবার থেকে রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে শুরু হচ্ছে শুনানি-পর্ব। প্রতিটি কেন্দ্রে দুই বা তার বেশি শুনানিকেন্দ্র থাকবে। থাকবে ১১টি করে শুনানির টেবিল। কমিশন সূত্রে খবর, প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে একজন নির্বাচনী আধিকারিক (ইআরও) এবং ১০ জন সহকারী নির্বাচনী আধিকারিক (এইআরও) থাকবেন। এই ইআরও এবং এইআরও-দের হাতেই রয়েছে ভোটারদের শুনানির মূল দায়িত্ব। এ ছাড়াও, ১১ জন মাইক্রো অবজ়ার্ভার গোটা প্রক্রিয়ার নজরদারির দায়িত্বে থাকবেন। এনুমারেশন ফর্ম কী ভাবে যাচাই করতে হবে, শুনানির জন্য ভোটারেরা যে নথিগুলি জমা দিচ্ছেন, তা কী ভাবে খতিয়ে দেখতে হবে— সে সব বিষয় বুধবারই চার হাজারেরও বেশি মাইক্রো অবজ়ার্ভারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এঁরা ছাড়াও বুথ স্তরের আধিকারিক (বিএলও) এবং অনুমতি সাপেক্ষে বিএলও সুপারভাইজ়ার শুনানিতে থাকতে পারবেন। এ ছাড়া বাইরের কেউ শুনানিতে থাকতে পারবেন না। প্রতিটি টেবিলে ১০০ থেকে ১৫০ জন ভোটারের শুনানির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কমিশন। প্রক্রিয়া চলাকালীন সব ভোটারের ছবি তোলা হবে। সেই ছবি পাঠানো হবে কমিশনকে।

শুনানি পর্বে প্রামাণ্য নথি হিসাবে কমিশন ১৩টি নথির কথা আগেই উল্লেখ করেছে। গ্রহণযোগ্য নথির তালিকায় রয়েছে কেন্দ্রীয় অথবা রাজ্য সরকারের কর্মী হিসাবে কাজ করেছেন অথবা পেনশন পান এমন পরিচয়পত্র, ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, এলআইসি, স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া যে কোনও নথি, জন্ম শংসাপত্র, পাসপোর্ট, মাধ্যমিক বা তার অধিক কোনও শিক্ষাগত শংসাপত্র, রাজ্য সরকারের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের দেওয়া বাসস্থানের শংসাপত্র, ফরেস্ট রাইট সার্টিফিকেট, জাতিগত শংসাপত্র, কোনও নাগরিকের ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার, স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া পারিবারিক রেজিস্ট্রার এবং জমি অথবা বাড়ির দলিল। এর মধ্যে যে কোনও একটি নথি দিতে হবে। তবে প্রয়োজনে একাধিক নথিও দেখাতে হতে পারে ‘নো-ম্যাপিং’ বা ‘সন্দেহজনক’ তালিকায় থাকা ভোটারকে। এ ছাড়াও, কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, সিএএ শংসাপত্র দেখালে ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করা যাবে। ফর্ম-৬ পূরণ করে আবেদন করতে হবে।

ভোটার তালিকার বিশেষ ও নিবিড় সংশোধন (এসআইআর)-এর প্রথম পর্বে এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করেছিলেন ভোটারেরা। খসড়া তালিকাও প্রকাশিত হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয় পর্বে এ বার শুরু হয়েছে আসল ঝাড়াইবাছাইয়ের প্রক্রিয়া। যে ভোটারদের তথ্য নিয়ে কমিশন পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয়, শুনানির মাধ্যমে তাঁদের তথ্য যাচাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। এর মধ্যে ৩১,৬৮,৪২৪ জন ভোটার রয়েছেন, যাঁরা ২০০২ সালের তালিকার সঙ্গে কোনও যোগসূত্র দেখাতে পারেননি। প্রথম পর্বের শুনানিতে ডাক পেয়েছেন তাঁরাই। এ ছাড়াও, কমিশনের দাবি, রাজ্যে প্রায় ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ভোটার রয়েছেন, যাঁদের এনুমারেশন ফর্মের তথ্যে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। তাঁদেরও তথ্য যাচাই করা হবে। তবে তাঁদের প্রথমেই শুনানির জন্য ডাকা হয়নি। আগে সংশ্লিষ্ট এলাকার বিএলও-রা ওই ভোটারদের তথ্য যাচাই করবেন। তথ্য মনোমত হলে বিএলও নিজেই সুপারিশ করবেন চূড়ান্ত তালিকায় ওই ভোটারের নাম তোলার জন্য। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট ভোটারের শুনানির জন্য কমিশনের কাছে সুপারিশ করবেন তিনি।

Advertisement
আরও পড়ুন