তৃণমূলকর্মীর হাত থেকে রাইফেল নিচ্ছেন হাওড়ার বাঁকড়া এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আখতার হোসেন। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।
মঞ্চে উঠে আস্ত একটি বন্দুক গ্রামপ্রধানের হাতে তুলে দিলেন স্থানীয় তৃণমূলকর্মী। ভরা সভায় সকলে তা দেখলেন। কেউ ভয় পেলেন, কেউ মজার ছলে উড়িয়ে দিলেন, কেউ দিলেন হাততালি! প্রথমে হাসিমুখে উপহার গ্রহণ করলেও বিতর্কের মাঝে ঢোঁক গিললেন গ্রামপ্রধান। ‘খেলনা বন্দুক’ বলে দাবি করে দায় এড়াতে চাইলেন। বিষয়টি অস্বস্তিতে ফেলেছে শাসকদলকে।
হাওড়ার বাঁকড়া এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আখতার হোসেন। বুধবার এই পঞ্চায়েতের বার্ষিক সভা ছিল। সেই উপলক্ষে প্রধানের সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছিল। অনেকে অনুষ্ঠান দেখতে জড়ো হয়েছিলেন। এই সময়েই একটি লম্বা রাইফেল নিয়ে মঞ্চে উঠে পড়েন স্থানীয় তৃণমূলকর্মী। প্রধানের হাতে বন্দুকটি তুলে দেন। উপহার গ্রহণও করেন আখতার। তবে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে তিনি বলেছেন, ‘‘ওটা খেলনা বন্দুক। তবে এই উপহার দেওয়া উচিত হয়নি। ঘটনাটি হঠাৎ করে ঘটেছে। আমি জানতাম না যে, আমাকে এই ধরনের উপহার দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’’ বিষয়টি দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন বলেও দাবি করেন আখতার।
বাঁকড়ার গ্রামসভার ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডোমজুড়ের বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ এবং সভাপতি তাপস মাইতি। কিন্তু দু’জনেই দাবি করেছেন, তাঁদের চোখের সামনে এই ঘটনা ঘটেনি। গ্রামপ্রধানকে যখন বন্দুক উপহার দেওয়া হচ্ছিল, তখন তাঁরা মঞ্চে ছিলেন না। তবে এ বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। জেলা নেতৃত্বের তরফে উচ্চ স্তরে বিষয়টি জানানো হয়েছে বলেও দাবি করেছেন কল্যাণ এবং তাপস। উপরমহল থেকে যেমন নির্দেশ আসবে, সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।
গ্রামপ্রধানের জন্য নিয়ে আসা তৃণমূলকর্মীর উপহারকে ঘিরে সমালোচনার সুযোগ ছাড়েনি বিজেপি। তাদের দাবি, ভোটের আগে এলাকায় ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে চায় তৃণমূল। তাই প্রকাশ্য মঞ্চে এই ধরনের উপহার প্রধানের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক উমেশ রাইয়ের কথায়, ‘‘বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, তৃণমূল তত ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করছে।’’