লিয়োনেল মেসিকে দেখতে না-পাওয়ার ক্ষোভে যুবভারতী স্টেডিয়ামে তাণ্ডব চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। — ফাইল চিত্র।
যুবভারতীর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি খারিজ করল কলকাতা হাই কোর্ট। রাজ্য সরকার এই ঘটনার তদন্তের জন্য যে তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করে দিয়েছে, তাদের কাজে এখনই হস্তক্ষেপ করল না আদালত। হাই কোর্ট স্পষ্ট জানায়, আইন মেনেই সিট গঠন হয়েছে। তদন্তের এই অবস্থায় সিট যে পক্ষপাতদুষ্ট, তা বলা যায় না।
যুবভারতীর ঘটনা নিয়ে দায়ের হওয়া একাধিক জনস্বার্থ মামলার শুনানি সোমবার শেষ হয় কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি পার্থসারথি সেনের ডিভিশন বেঞ্চে। শুনানিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং অন্য দুই মামলাকারীর তরফে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করানোর দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে তাঁরা জানান, রাজ্যের গঠন করা সিট (বিশেষ তদন্তকারী দল)-এর তদন্তে তাঁদের ভরসা নেই। তবে আদালত সেই আবেদনে সাড়া দিল না।
সোমবার বিকেলেই যুবভারতী নিয়ে শুনানি শেষ হয়েছিল আদালতে। রায়দান স্থগিত রাখে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। রাতে সেই মামলার রায় দিতে গিয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ, কোনও ঘটনার তদন্ত করা পুলিশের সাংবিধানিক অধিকার। তদন্তের এই অবস্থায় কখনই সেটাকে পক্ষপাতদুষ্ট বলা চলে না।
আদালত আরও জানায়, আইন মেনেই রাজ্যের তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। গেজেট নোটিফিকেশনও রয়েছে। আইন অনুযায়ী, এমন কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করা বাধ্যতামূলক নয়। তার পরেই হাই কোর্ট সিবিআই তদন্তের আর্জি খারিজ করে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, শুধুমাত্র অভিযোগের ভিত্তিতে সিবিআই তদন্ত দেওয়া যায় না। বিরল এবং ব্যতিক্রমী ঘটনার ক্ষেত্রে পুলিশের থেকে তদন্তভার নিয়ে সিবিআইকে দেওয়া হয়।
হাই কোর্ট জানায়, রাজ্যের গঠিত সিট তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যাবে। মামলাকারীদের আবেদন মেনে এখনই কোনও অন্তর্বর্তী নির্দেশ নয়। যুবভারতীকাণ্ডে সিবিআই তদন্ত না-দিলেও রাজ্য এবং আয়োজক সংস্থাকে চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে বলেছে হাই কোর্ট। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
যুবভারতীকাণ্ডের তদন্তের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করে। তাকে চ্যালেঞ্জ করে গত ১৫ ডিসেম্বর জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাই কোর্টে। কমিটির ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু এবং অন্যেরা। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্যের গঠিত কমিটির ক্ষমতা নেই। তারা সঠিক তদন্ত করতে পারবে না। তাই পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করুক আদালত। শুভেন্দু আদালতের নজরদারিতে তদন্ত চান। একই সঙ্গে ওঠে সিবিআই তদন্তের দাবিও। তবে আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়।