সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যারের জমি ফেরাতে উদ্যোগী কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন (কেএমআরসিএল)-এর হাতে থাকা সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যারের একটি জমি ফেরাতে উদ্যোগী হল কলকাতা পুরসভা। জমিটি হাতে পাওয়া গেলে সেখানে পানীয় জলের একটি বুস্টার পাম্পিং স্টেশন এবং দ্বিতীয় পুর-স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা স্যাটেলাইট হেল্থ সেন্টার গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে পুরসভা। পুরসভা সূত্রে খবর, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই চিঠি চালাচালির প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইন্দ্রনীল কুমার এই সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পেশ করেন। ওই প্রস্তাবে তিনি মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাছে আবেদন জানান, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের জন্য কেএমআরসিএল-কে দেওয়া সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যারের জমি ফেরত আনা হোক। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, ওই এলাকায় পানীয় জলের ঘাটতি মেটাতে একটি বুস্টার পাম্পিং স্টেশন এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা জোরদার করতে দ্বিতীয় পুর-স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি করা হোক। কাউন্সিলরের প্রস্তাবের পরেই মেয়র জমি ফেরাতে উদ্যোগী হন। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই কলকাতা পুরসভা ও কেএমআরসিএল-এর মধ্যে মৌখিক আলোচনা হয়েছে। এক পুর আধিকারিকের দাবি, জমিটি ফেরত পাওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক ভাবে সবুজ সঙ্কেত মিলেছে। দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর পর সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যারের একাংশ ও সংলগ্ন এলাকা আবার পুরসভার হাতে আসতে পারে।
উল্লেখ্য, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের জন্য কলকাতা পুরসভার কাছ থেকে সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যারের একাংশ, পাশের স্পোর্টস ক্লাব ও বক্সিং রিংয়ের জমি নিয়েছিল কেএমআরসিএল। ১৯২৭ সালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর হাত ধরে ওই ক্লাবের সূচনা হয়েছিল। প্রথমে সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যারে শিয়ালদহ ও এসপ্ল্যানেডের মধ্যে মাটির নীচে একটি মেট্রো স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা থাকলেও পরে সেই সিদ্ধান্ত বদলে সেখানে একটি ভেন্টিলেশন স্যাফ্ট তৈরি করা হয়। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে যাত্রী উদ্ধারের সুবিধার কথাও ভাবা হয়েছিল। তবে পরে মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানান, সেটি শুধুমাত্র বাতাস চলাচলের কাজেই ব্যবহার করা হবে।
পুরসভা সূত্রে খবর, বর্তমানে ওই ভেন্টিলেশন স্যাফ্টও কার্যত অব্যবহৃত এবং মেট্রো রুট সম্পূর্ণ চালু হয়ে যাওয়ার পর কেএমআরসিএল ইতিমধ্যেই জায়গাটি খালি করেছে। ফলে জমিটি মেট্রোর আর কোনও কাজে না লাগায় পুরসভা সেটি ফেরত নিতে চাইছে। জমি হাতে এলে পানীয় জল ও স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা করা হবে বলে জানিয়েছেন পুরসভার এক আধিকারিক।