বিষ্ণুপুর মেলায় অভিনেতা সাহেব ভট্টাচার্য এবং সুস্মিতা দে-র মাঝে পাঞ্চি পরিহিতা রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি। —নিজস্ব ছবি।
বিষ্ণুপুরের বিখ্যাত বালুচরি এবং স্বর্ণচরি শাড়িকে বিশ্বের বাজারে তুলে ধরতে গত কয়েক বছর ধরে সরকারি ভাবে প্রচেষ্টা চলছে। সে জন্য এ বারেও বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর মেলায় ফ্যাশন শোয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। এ বার ‘অভিজাত’ বালুচরি এবং স্বর্ণচরির সঙ্গে ফ্যাশন শোয়ে ঢুকে পড়ল আদিবাসী পাঞ্চি শাড়িও। বিষ্ণুপুরে আলো ঝলমলে আধুনিক মঞ্চে রেড কার্পেটে সেই শাড়ি গায়ে ক্যাটওয়াক করলেন একের পর এক মডেল। ঐতিহ্যবাহী ওই শাড়ি গায়ে র্যাম্পে হাঁটলেন খোদ মন্ত্রী।
আদিবাসীদের মধ্যে জনপ্রিয় পোশাকগুলির মধ্যে অন্যতম পাঞ্চি। সুতি এবং ক্ষেত্রবিশেষে তসরের তৈরি এই শাড়ি উৎসব এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে পরে থাকেন আদিবাসী মহিলারা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গণ্ডি ছাড়িয়ে অন্যত্রও জনপ্রিয় হয়েছে পরিধান।
পাঞ্চির বিশেষত্ব এবং পরার বিশেষ ধরনই এর কারণ। পাঞ্চি মেলে ই-কমার্স সংস্থাতেও। বিশ্বের দরবারে ‘আদিবাসী শাড়ি’কে আরও জনপ্রিয় করে তুলতেই বিষ্ণুপুর মেলায় আয়োজিত হয়েছিল পাঞ্চি শাড়ির ফ্যাশন শো। শুক্রবার সেই শাড়ি গায়ে দক্ষ পায়ে ক্যাটওয়াক করেন মডেলরা। তবে তার আগে প্রতিযোগিতা হয়েছিল। মডেল বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পান আদিবাসী তরুণ-তরুণীরা। একের পর এক ধাপ পেরিয়ে নির্বাচিত তরুণ-তরুণীদের ‘গ্রুমিং’ করে নামানো হয়েছিল ফ্যশান শোয়ের র্যম্পে।
পাঞ্চি শাড়ি গায়ে র্যাম্পে ক্যাটওয়াকে দেখা যায় রাজ্যের খাদ্য সরবরাহ দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডিকেও। তিনি বলেন, ‘‘রাজনীতিক হিসাবে সরকারি পরিষেবা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার কাজ। সেই কাজের পাশাপাশি আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতির নাচ ও গান আমার ভালবাসার জায়গা। নিজেদের ঐতিহ্যবাহী শাড়ি পরে র্যাম্পে হাঁটা নিঃসন্দেহে আমার কাছে দারুণ অভিজ্ঞতা। খুব ভাল লাগছে।’’
ফ্যাশন শোয়ে অংশ নেওয়া মালতী হেমব্রম নামে এক তন্বীর কথায়, ‘‘আমরা আদিবাসী তরুণীরা কখনও ভাবিনিই যে আমাদের ঐতিহ্যের সজ্জায় সেজে, প্রিয় শাড়ি পরে বিষ্ণুপুর মেলার এত বড় মঞ্চের র্যাম্পে হাঁটতে পারব।’’
ফ্যাশন শোয়ে আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা সাহেব ভট্টাচার্য এবং সুস্মিতা দে। এমন একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে খুশি দুই শিল্পী জানিয়েছেন, দারুণ অভিজ্ঞতা হল তাঁদের।