— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
দিনদুয়েক আগের ঘটনা। উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুর থানার অন্তর্গত ডিসপেনসারি লেনে এক মহিলার দেহ উদ্ধার হয়। সঙ্গে মেলে ‘সুইসাইড নোট’। সেই ঘটনার পর থেকেই খোঁজ মিলছিল না মহিলার স্বামীর। শেষমেশ রবিবার রাতে নিজেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করলেন তিনি।
নিহত মহিলার নাম পূজা পুরকাইত। রবিবার রাতে তাঁর স্বামী সুমিত পুরকাইত থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন। সুমিত পুলিশকে জানিয়েছেন, স্ত্রীর ‘আত্মহত্যা’র পর তাঁরও আত্মহত্যা করার পরিকল্পনা ছিল। তাই তিনিই সুইসাইড নোটটি লিখেছিলেন। কিন্তু পরে আত্মহত্যার পরিকল্পনা বাতিল করে থানায় আত্মসমর্পণ করেন তিনি।
শনিবার শ্যামপুকুরের বাড়িতে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার হয় পূজার দেহ। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছিল, আত্মহত্যা করেছেন ওই যুবতী। তবে মেয়ের আত্মহত্যার তত্ত্ব মানতে নারাজ ছিলেন পূজার মা। তিনি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। শুরু হয় তদন্ত।
তদন্তে নেমে একটি সুইসাইড নোটেরও খোঁজ পায় পুলিশ। তাতে লেখা ছিল, ‘‘আমাদের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।’’ নোটে বহুবচনে ‘আমাদের’ কেন লেখা হল, তা নিয়েও ঘনাতে শুরু করে রহস্য। তা ছাড়া, ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন পূজার স্বামী সুমিত। ফলে তিনিও আত্মহত্যা করেছেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। এর মাঝে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এলে জানা যায়, আত্মহত্যা নয়, বরং শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে পূজাকে! ফলে সুইসাই়ড নোটটি যে তিনি লেখেননি, তা-ও স্পষ্ট হয়ে যায়। সেই আবহেই এ বার থানায় আত্মসমর্পণ করলেন সুমিত। পুলিশের অনুমান, প্রথমে স্ত্রীকে খুন করে আত্মহত্যার পরিকল্পনা করে থাকতে পারেন সুমিত। কিন্তু সে ক্ষেত্রে তিনি কেন সুইসাইড নোটটি ঘরে ফেলে গেলেন, কেন নিজের সঙ্গে নিয়ে গেলেন না, তা নিয়েও ধন্দ থাকছে। অথবা গোটা ঘটনাটিই সাজানো কি না, খুনের অপরাধ চাপা দিতেই আত্মহত্যার কাহিনিটি বানানো হয়েছে কি না, সে সবও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।