RG Kar Rape and Murder Case

‘পরিকল্পিত হামলা, মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারত’! স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ করে থানায় ইমেল আরজি করে নির্যাতিতার বাবার

অভিযোগপত্রে নির্যাতিতার বাবা দাবি করেছেন, গত ৯ অগস্ট নবান্ন অভিযানের দিন দুপুর ২টো নাগাদ কিড স্ট্রিট-জওহরলাল নেহরু রোড ক্রসিংয়ের কাছে কয়েক জন পুলিশকর্মী তাঁর স্ত্রীর ডান হাত টেনে ধরেন। এর ফলে তাঁর স্ত্রীর ওই হাতে থাকা শাঁখা ভেঙে যায় বলে জানিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২৫ ১২:৫৮
শনিবার নবান্ন অভিযানের সময় পুলিশের মারধরে নির্যাতিতার মা আহত হন বলে অভিযোগ। তাঁর কপালের ডান দিক ফুলে যায়।

শনিবার নবান্ন অভিযানের সময় পুলিশের মারধরে নির্যাতিতার মা আহত হন বলে অভিযোগ। তাঁর কপালের ডান দিক ফুলে যায়। —ফাইল চিত্র।

পুলিশের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে মারধর করার অভিযোগ তুলে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন আরজি কর-কাণ্ডে নির্যাতিতার বাবা। মঙ্গলবার প্রথমে শেক্সপিয়র সরণি থানায় ইমেল মারফত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। পরে ওই থানার তরফে জানানো হয়, বিষয়টি তাদের এক্তিয়ার-বহির্ভূত। তখন নিউ মার্কেট থানায় জ়িরো এফআইআর দায়ের করেন নির্যাতিতার বাবা। জ়িরো এফআইআর হল এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে একটি অপরাধ যে থানা এলাকায় ঘটেছে, সেই থানার এক্তিয়ারের বাইরে হলেও যে কোনও থানায় অভিযোগ দায়ের করা যায়।

Advertisement

অভিযোগপত্রে নির্যাতিতার বাবা দাবি করেছেন, গত ৯ অগস্ট নবান্ন অভিযানের দিন দুপুর ২টো নাগাদ কিড স্ট্রিট-জওহরলাল নেহরু রোড ক্রসিংয়ের কাছে কয়েক জন পুলিশকর্মী তাঁর স্ত্রীর ডান হাত টেনে ধরেন। এর ফলে তাঁর স্ত্রীর ওই হাতে থাকা শাঁখা ভেঙে যায় বলে জানিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা। তার পরেই পুলিশ লাঠি দিয়ে নির্যাতিতার মায়ের মাথায় এবং পিঠে আঘাত করে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। নির্যাতিতার বাবার দাবি, এই হামলা পূর্বপরিকল্পিত। এই হামলার কারণে তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারত বলেও দাবি করেছেন নির্যাতিতার বাবা। আনন্দবাজার ডট কম-কে নির্যাতিতার বাবা বলেন, “আমরা প্রথমে শেক্সপিয়র সরণি থানায় মেল করেছিলাম। সেখান থেকে বলা হল পার্ক স্ট্রিট থানায় করতে। সেখান থেকে নিউ মার্কেট থানায় অভিযোগ দায়ের করতে বলা হল। এ বার আমরা সব থানাকে ট্যাগ করে লালবাজারকে মেল করতে চলেছি।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “এক দিকে এই ঘটনায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার স্বতঃপ্রণোদিত মামলার কথা বলছেন, অন্য দিকে, অভিযোগ দায়ের করাতে গেলে থানাগুলি সেটি গ্রহণ করতে গড়িমসি করছে।”

শনিবার আরজি কর কাণ্ডের এক বছরের মাথায় মেয়ের ধর্ষণ এবং হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে পথে নেমেছিলেন নিহত চিকিৎসকের মা-বাবা। নবান্ন অভিযানে বিজেপি নেতা এবং কর্মীদের সঙ্গে পুলিশ নির্যাতিতার মায়ের গায়েও হাত তোলে বলে অভিযোগ। মহিলা জানান, তাঁর কপাল এবং পিঠে আঘাত লেগেছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, পুলিশ ওই মহিলাকে মারধর করেছে। ধাক্কাধাক্কি করেছে নির্যাতিতার বাবাকেও। শনিবার দুপুরেই নিহত চিকিৎসকের মাকে নিয়ে যাওয়া হয় বাইপাসের ধারের একটি হাসপাতালে। রবিবার দুপুর ৩টে নাগাদ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি। অ্যাম্বুল্যান্সে রওনা দেন বাড়ির পথে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল। কপালের চোট লাগা জায়গায় ফোলা ভাব কমেছে। অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে তাঁকে। তবে নির্যাতিতার মাকে পরে স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে বলা হয় বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।

রবিবার সকালে নবান্ন অভিযানে জখম পুলিশকর্মীদের এসএসকেএমে দেখতে গিয়েছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি জানান, নির্যাতিতার মা জখম হয়েছেন বলে যে অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে, তার তদন্ত হবে। যদি মহিলার গায়ে হাত তোলা হয়ে থাকে, তবে সেই কাজ কারা করেছেন, তা খতিয়ে দেখা হবে। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁকে মারধর করা হয়েছে, এই অভিযোগ সত্যি না মিথ্যা, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’ সে ক্ষেত্রে নির্যাতিতার মা যদি অভিযোগ করতে চান, পুলিশ কি হাসপাতালে যাবে তাঁর অভিযোগ নিতে? এই প্রশ্নের জবাবে কলকাতার নগরপাল বলেন, ‘‘অভিযোগ যদি আসে, অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে। অভিযোগ যদি না-ও পাই, আমরা (কলকাতা পুলিশ) স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত করব। ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন