Pakistan Nuclear Weapon

মুনিরের পরমাণু-হুমকির পরেই নজরে পাক অস্ত্রভান্ডার! কত পরমাণু অস্ত্র সে দেশে? সেনা না সরকার, প্রয়োগ কার সিদ্ধান্তে?

বিভিন্ন দেশের হাতে কত পরমাণু অস্ত্র রয়েছে, তা নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রকাশ্যে আনে সুইডেনের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত নজরদার সংস্থা স্টকহম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট বা ‘সিপ্রি’।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২৫ ১৩:২৭
পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের পরমাণু-হুমকির পরেই নজরে পাক অস্ত্রভান্ডার।

পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের পরমাণু-হুমকির পরেই নজরে পাক অস্ত্রভান্ডার। —প্রতীকী চিত্র।

আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে পরমাণু-হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির। মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, পাকিস্তান পরমাণু শক্তিধর দেশ। তার পরেই মুনিরের দাবির সত্যাসত্য নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। তবে পাকিস্তান যে পরমাণু শক্তিধর দেশ, তা নিয়ে বিশ্বের কোনও মহলেই কোনও সংশয় নেই। কিন্তু সে দেশে পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগের ক্ষেত্রে শেষ কথা বলে কে, পাকিস্তানের নির্বাচিত সরকার, না কি সামরিক বাহিনী, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

Advertisement

বিভিন্ন দেশের হাতে কত পরমাণু অস্ত্র রয়েছে, তা নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রকাশ্যে আনে সুইডেনের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত নজরদার সংস্থা স্টকহলম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট বা ‘সিপ্রি’। ‘সিপ্রি’-র সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের ঝুলিতে রয়েছে ১৮০টি পরমাণু অস্ত্র আর পাকিস্তানের কাছে রয়েছে ১৭০টি পরমাণু অস্ত্র। আমেরিকা সামরিক বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টোফার ক্ল্যারির মতে, পাকিস্তানের অধিকাংশ পরমাণু অস্ত্রই ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে বহনযোগ্য। অর্থাৎ, এখনও পর্যন্ত জল, স্থল এবং আকাশ— এই তিন মাধ্যমে পরমাণু অস্ত্র নিক্ষেপের কৌশল আয়ত্তে আনতে পারেনি রাওয়ালপিন্ডি। তবে তিন বাহিনীই যাতে বিশেষ প্রয়োজনে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে, তার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসলামাবাদ।

রিপোর্ট অনুযায়ী, পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগের বিষয়ে পাকিস্তানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে সে দেশের ‘নিউক্লিয়ার কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম’ (এনসিসিএস)। কোথায়, কখন পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগ করা হবে বা হবে না, তা নিয়ে সর্বশেষ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী। তা ছাড়া পাকিস্তানের ‘ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটি’ (এনসিএ)-র চেয়ারম্যানও সে দেশের প্রধানমন্ত্রী। সে ক্ষেত্রে পরমাণু কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োগের ক্ষেত্রে ‘শেষ কথা’ বলার অধিকারী পাকিস্তানের নির্বাচিত সরকার। সেনাপ্রধান নন। যদিও ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাজিজ়-এর রিপোর্ট বলছে, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি বা আপৎকালীন সঙ্কটে যাবতীয় সামরিক সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীই। সেই অঙ্ক মাথায় রেখেই মুনির একক সিদ্ধান্তে ওই হুমকি দিয়েছিলেন কি না, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।

রবিবার ফ্লরিডার টাম্পায় শিল্পপতি আদনান আসাদ আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দিয়েছিলেন পাক সেনাপ্রধান। পাকিস্তানের শক্তি প্রদর্শন করতে গিয়ে সেখান থেকে মুনির বলেছিলেন, ‘‘আমরা একটি পরমাণু শক্তিধর দেশ। যদি মনে হয় আমরা ধ্বংসের পথে এগোচ্ছি, তবে অর্ধেক বিশ্বকে সঙ্গে নিয়ে আমরা ধ্বংস হব।’’ গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে দিয়েছে ভারত। সিন্ধু এবং তার পাঁচ উপনদীর জল কী ভাবে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে বণ্টিত হবে, এই চুক্তির শর্ত তা স্থির করে। সিন্ধু, বিতস্তা এবং চন্দ্রভাগা— এই তিন নদী পাকিস্তানের উপর দিয়ে প্রবাহিত। ভারত চুক্তির শর্ত না-মানলে পাকিস্তানে জলের সঙ্কট তৈরি হতে পারে। মুনির সে প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘‘ভারত বাঁধ তৈরি করুক, আমরা অপেক্ষা করব। যখন বাঁধ তৈরি করা হয়ে যাবে, আমরা ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে সেই বাঁধ ধ্বংস করে দেব।’’ মুনিরের ওই মন্তব্যের পরেই ভারত অবশ্য স্পষ্ট করে দেয় যে, পরমাণু-হুমকির সামনে মাথা নত করবে না নয়াদিল্লি।

Advertisement
আরও পড়ুন