রাজনৈতিক সভাস্থলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: ভিডিয়ো।
মোদী বলেন, ‘‘অনুপ্রবেশকারীদের হয়ে সরাসরি নেমে পড়েছে তৃণমূল। কান খুলে শুনে রাখুন, অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে সংবিধান অনুযায়ীই পদক্ষেপ করা হবে। ’’
মোদীর ভাষণে আরজি কর এবং কসবাকাণ্ডের প্রসঙ্গও উঠে এল। তিনি বলেন, ‘‘বাংলার হাসপাতালও মেয়েদের জন্য সুরক্ষিত নয়। তখনও দেখা গিয়েছে, কী ভাবে অপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছে তৃণমূল। এর পর কলেজেও একটা মেয়ের উপর কী ভাবে অত্যাচার চালানো হল। সেখানে দেখা গেল তৃণমূলের লোকেরা জড়িত।’’
মোদীর মুখে মুর্শিদাবাদের অশান্তির প্রসঙ্গও উঠল। তিনি বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদের মতো ঘটনা ঘটলে পুলিশ পক্ষপাতিত্ব করে। আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে, তৃণমূলের গুন্ডাগিরির জন্যই এখানে উদ্যোগপতিরা আসেন না। তৃণমূলকে সরাতেই হবে। সিন্ডিকেটরাজ দেখেই পালিয়ে যান বিনিয়োগকারীরা। প্রাথমিক শিক্ষা, উচ্চশিক্ষা সব রসাতলে যাচ্ছে তৃণমূল জমানায়।’’
মোদী বলেন, ‘‘বিজেপি ক্ষমতায় এলেই বাংলা দেশের অন্যতম শিল্পসমৃদ্ধ রাজ্য হয়ে উঠবে। এটা আমার বিশ্বাস। কিন্তু তৃণমূল বাংলাকে শিল্পোন্নত হতে দিচ্ছে না। তাই তৃণমূল বাংলা থেকে সরাতে হবে। পশ্চিমবঙ্গকে এমন ভাবে তৈরি করতে হবে যাতে, এখানে নতুন বিনিয়োগ আসে। কর্মসংস্থান তৈরি হয়। কিন্তু যত দিন তৃণমূল থাকবে, তত দিন এ সব হবে না।’’
‘জয় মা কালী’ বলে বক্তৃতা শুরু করলেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি বিকশিত বাংলা চায়। বাংলার এই মাটি প্রেরণায় পূর্ণ। বিজেপি সমৃদ্ধ পশ্চিমবঙ্গ তৈরি করতে চায়। এক সময়ে বাংলা সমৃদ্ধই ছিল। বিকাশের কেন্দ্র ছিল। কিন্তু এখন আর তা নেই। আমরা এই অবস্থাই বদলাতে চাইছি। এখন কাজের জন্য বাইরে যেতে হয় বাংলার মানুষকে। বাংলাকে এই অবস্থা থেকে বার করতে হবে।’’ বাংলা ভাষাতেই মোদী বললেন, ‘‘বাংলা পরিবর্তন চায়। বাংলা উন্নয়ন চায়।’’
প্রশাসনিক সভা সেরে দুর্গাপুরে রাজনৈতিক সভার মঞ্চে পৌঁছোলেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে সম্মান জ্ঞাপন করলেন শমীক ভট্টাচার্য এবং শুভেন্দু অধিকারী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভারতের বিকাশে দুর্গাপুরের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। দুর্গাপুর ভারতের শ্রমশক্তির বড় কেন্দ্র। পাশাপাশি রাজ্য জুড়ে বিকাশ হচ্ছে। বহু মানুষের রোজগার নিশ্চিত হবে। কলকাতা মেট্রো দ্রুত বিস্তার হবে। রেলের বিকাশ হচ্ছে। ২৫-৩০ লাখ ঘরে পাইপলাইনে গ্যাস পৌঁছোচ্ছে। গত ১০ বছরে গ্যাস সংযোগে অভাবনীয় কাজ হচ্ছে।’’
বঙ্গ সফরে প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্প শিলান্যাস ও উদ্বোধনের তালিকা।
দুর্গাপুরের সভা থেকে বাংলার জন্য সাত প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার মধ্যে রয়েছে— বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়া জেলার জন্য ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেডের সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন (সিডিজি) প্রকল্প (১৯৫০ কোটি টাকার), দুর্গাপুর-হলদিয়া প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন-এর দুর্গাপুর থেকে কলকাতা (১৩২ কিলোমিটার)-র অংশ (প্রধানমন্ত্রী উরজা গঙ্গা প্রকল্পের অংশ)। এ ছাড়াও দুর্গাপুর ইস্পাত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের রঘুনাথপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ১৪৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিটি ক্ষেত্রেই রোজগারের সুযোগ বাড়বে বলে দাবি করেছে কেন্দ্র। রেল পরিকাঠামোর উন্নয়নে একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন মোদী। তার মধ্যে রয়েছে পুরুলিয়া-কলকাতা রেললাইন ডাবলিং (৩৬ কিলোমিটার)। এর ফলে জামশেদপুর, বোকারো, ধানবাদের কারখানাগুলির মধ্যে রেল সংযোগের সুবিধা বাড়বে বলে জানাচ্ছে কেন্দ্র। প্রকল্পটি ৩৯০ কোটি টাকার।
বিকেল ৪টের একটু পরে দুর্গাপুরে নেহরু স্টেডিয়ামে পৌঁছোলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রশাসনিক সভার মঞ্চে রয়েছেন রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার এবং রাজ্যসভার সাংসদ তথা দলের রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। এ ছাড়াও রয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং আরও দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী ও শান্তনু ঠাকুর। প্রশাসনিক সভা সেরে দুর্গাপুরেই রাজনৈতিক সভা করবেন মোদী।
অন্ডালে পৌঁছোলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দুপুর ৩টের একটু পরে প্রধামন্ত্রীর বিমান অন্ডাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এর পর বিমানবন্দর থেকে জাতীয় সড়ক হয়ে সভাস্থলে পৌঁছোবেন মোদী। তার আগে দুর্গাপুরের সভাস্থলে আগুন লেগে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। দর্শকাসনের মাঝে ডান পাশের একটা হ্যাঙারের নীচে আগুন লাগে। অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই ঘটনাটি ঘটেছে। তবে কিছু ক্ষণের মধ্যে তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
নরেন্দ্র মোদীর সভাস্থলে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।
নরেন্দ্র মোদীর অপেক্ষায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। —নিজস্ব চিত্র।
বঙ্গসফরের আগে বিহারে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে প্রশাসনিক সভা করেছেন তিনি। সেখানে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘বিহারের মাটি থেকেই অপারেশন সিঁদুরের সংকল্প নিয়েছিলাম। আজ গোটা বিশ্ব দেখল তার সফলতা।’’ বিহারে একগুচ্ছ প্রকল্প ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আক্রমণ করেছেন লালু যাদব এবং তাঁর পুত্র তেজস্বী যাদবের দল আরজেডি এবং কংগ্রেসের জোটকে।
বিজেপি সূত্রে খবর, আবহাওয়ার জন্য বাংলায় মোদীর কর্মসূচি কিছুটা পিছিয়েছে। দুপুর আড়াইটে নাগাদ তাঁর অন্ডাল বিমানবন্দরে নামার কথা। তার পর সেখান থেকে দুপুর ৩টে নাগাদ যাওয়ার কথা প্রশাসনিক সভায়। তা সেরে রাজনৈতিক জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর পৌঁছোনোর কথা দুপুর সাড়ে ৩টের একটু পরে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভার আগে নাগাড়ে বৃষ্টি দুর্গাপুরে। শহর জুড়েও যানজট। এ দিকে, সভাস্থলের অদূরে বড় গর্ত তৈরি হওয়া নিয়েও শোরগোল শহরে। কী ভাবে ওই গর্ত তৈরি হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে তৃণমূলের বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংসদ কীর্তি আজাদ অভিযোগ করেছেন, গোটা বাংলাই কেন্দ্রীয় বৈষম্যের শিকার। ১০০ দিনের কাজ থেকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা আটকে রাখার প্রসঙ্গটি মনে করিয়ে দিয়েছেন এই প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা সাংসদ। কীর্তির কথায়, প্রধানমন্ত্রীর অনেক শূন্যগর্ভ বক্তৃতা শুনেছে বাংলার মানুষ। সেখানে বন্ধ হয়ে যাওয়া কলকারখানা খোলা, চাকরির সুযোগ বাড়ানোর দাবি তুলেছেন তিনি।
ঘটনাচক্রে, শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভার মঞ্চ থেকে কীর্তি আজাদের নামও ঘোষণা হয়েছে। স্থানীয় সাংসদ হিসাবে তিনিও এই কর্মসূচিতে আমন্ত্রিত। সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী এবং শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে কীর্তির নামও ঘোষণা করছেন কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিকেরা।
পাখির চোখ ২৬-এর বিধানসভা নির্বাচন। সেই লক্ষ্যে তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচির ঠিক আগে বঙ্গ সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
দুর্গাপুরে মোদীর জনসভা। জনসভার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ৫০০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন। বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়া জেলার জন্য ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেডের সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন (সিডিজি) প্রকল্পের (১৯৫০ কোটি টাকার) শিলান্যাস ছাড়াও দুর্গাপুর হলদিয়া প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন-এর দুর্গাপুর থেকে কলকাতা (১৩২ কিলোমিটার) অংশটি দেশের জন্য উৎসর্গ করবেন। এটি প্রধানমন্ত্রী উরজা গঙ্গা প্রকল্পের অংশ। দুর্গাপুর ইস্পাত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের রঘুনাথপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ১৪৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার শিলান্যাস করবেন। প্রতিটি ক্ষেত্রেই রোজগারের সুযোগ বাড়বে বলে দাবি করছে কেন্দ্র। রেল পরিকাঠামোর উন্নয়নে একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন মোদী। তার মধ্যে রয়েছে পুরুলিয়া-কলকাতা রেললাইন ডাবলিং (৩৬ কিলোমিটার)। এর ফলে জামশেদপুর, বোকারো, ধানবাদের কারখানাগুলির মধ্যে রেল সংযোগের সুবিধা বাড়বে বলে জানাচ্ছে কেন্দ্র। প্রকল্পটি ৩৯০ কোটি টাকার।