প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।
মোদী বলেন, ‘‘বিজেপিকে একটা সুযোগ দিন। ডবল ইঞ্জিন সরকার গড়তে দিন, দেখুন কত দ্রুত উন্নয়ন হয়। গো ব্যাক অনুপ্রবেশকারী বলা উচিত। কিন্তু গো ব্যাক মোদী বলে ওরা। অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে ওরা কিছু বলে না। চুপ করে থাকে। যে অনুপ্রবেশকারীরা বাংলা কব্জা করবে বলে স্থির করেছে, তাদেরই পছন্দ তৃণমূলের। এটাই তৃণমূলের আসল চেহারা। অনুপ্রবেশকারীদের বাঁচাতে বাংলায় এসআইআরের বিরোধ করছে। ত্রিপুরা দেখুন। সেখানে কমিউনিস্ট, বামপন্থীরা ৩০ বছর বরবাদ করেছিল। ত্রিপুরাবাসী আমাদের সুযোগ দিয়েছে। আমরা উন্নয়ন করেছি। বাংলাতেও হয়েছে লাল ঝন্ডাধারীদের থেকে মুক্তি। আশা ছিল, ভাল কিছু হবে। তৃণমূল বামপন্থীদের খারাপ গুণ, খারাপ লোকেদের গ্রহণ করে নিয়েছে। তাই আরও খারাপ হয়েছে।’’
মোদীর কথায়, ‘‘বাংলার এমন সরকার দরকার, যারা দ্রুত গতিতে উন্নয়ন করবে। যখন ওখানে নিজে যাব, আরও কথা বলব। আজ আবহাওয়া বাদ সেধেছে। আমি ওই নেতাদের মতো নই, যারা আবহাওয়াতেও রাজনীতির রং চড়িয়ে দেন। আমি বার বার আসব। আপনাদের স্বপ্ন পূরণ করতে, আপনাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে আসব।’’
‘বন্দে মাতরম’ বলে সভা শেষ করেন মোদী।
মোদী বলেন, ‘‘নিজের দুঃখ প্রকাশ করতে চাই বাংলার মানুষের কাছে। মন থেকে বলছি, আপনাদের কথা ভেবে বলছি, তৃণমূল মোদীর বিরোধ করতে চাইলে, করুক। হাজার বার করুক। বিজেপির বিরোধ করতে চাইলে করুক। বার বার করুক। কিন্তু বুঝতে পারি না, রাজ্যের উন্নয়ন কেন আটাকানো হচ্ছে? মোদীর বিরোধ করুন, কিন্তু বাংলার মানুষকে নিজেদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবেন না। তাঁর স্বপ্ন ভেঙে দেবেন না। এ রাজ্যের মানুষকে দুঃখ দিয়ে পাপ করবেন না। ’’
মোদী বলেন, ‘‘বিহারে জঙ্গলরাজ উপড়ে দিয়েছে বিজেপি। ২০ বছর পরেও বিজেপিকে আগের থেকে বেশি সিট দিয়েছে। এখন পশ্চিমবঙ্গেও মহাজঙ্গলরাজ চলছে। এর থেকে মুক্তি দরকার। এখানকার পশ্চিমবঙ্গ, এখানকার বাচ্চারাও বলছে। সব গ্রাম, শহর, পাড়া বলছে, বাঁচতে চাই, বিজেপি তাই।’’ তিনি আরও জানান, এই রাজ্যের জন্য আরও কাজ করতে চান। তাঁর কথায়, ‘‘মোদী আপনাদের জন্য আরও ্নেক কিছু করতে চায়। নিজেকে সমর্পিত করে কাজ করতে চায়। টাকা, যোজনা, ইচ্ছা কিছুরই কমতি নেই। কিন্তু এখানে এমন সরকার, যারা সারা ক্ষণ কমিশন চায়। এখনও পশ্চিমবঙ্গে বিকাশের হাজার কোটি টাকার প্রকল্প আটকে রয়েছে।’’
মোদী বলেন, ‘‘কিছু দিন আগে জিএসটি বাঁচানোর পদক্ষেপ করা হয়েছে। দেশবাসী যাতে সঠিক দামে জিনিস কিনতে পারেন, তা সুনিশ্চিত করেছে বিজেপি সরকার। দুর্গাপুজোর সময়ে রাজ্যবাসী খুব কেনাকাটা করেছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজ্যে দু’টি বড় সড়ক প্রকল্প হয়েছে। তাতে কলকাতা এবং শিলিগুড়ির সংযোগ বেড়েছে। দেশ এখন বিকাশ চায় গত মাসে বিকাশের জন্যই বিহারে এনডিএ সরকার জনাদেশ পেয়ে জয়ী হয়েছে। তার পরে বলেছিলাম, গঙ্গাজি বিহার থেকে প্রবাহিত হয়ে পশ্চিমবঙ্গে পৌঁছোয়। গঙ্গা বাংলাতেও বিজেপির জয়ের রাস্তা তৈরি করেছে।’’
মোদী বলেন, ‘‘বাংলাভাষা ভারতের ইতিহাস, সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে। বন্দে মাতরম সে রকমই এক। তার সার্ধ শতবর্ষের উৎসব গোটা দেশে পালন করা হচ্ছে। সম্প্রতি সংসদে বন্দে মাতরমের গৌরবগান হয়েছে। এই বাংলাতেই জন্মেছেন মহান ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। যখন দেশ পরাধীন, তখন ঋষি বঙ্কিমবাবু বন্দে মাতরমের মাধ্যমে স্বাধীনতার মন্ত্র দিয়েছিলেন। নতুন চেতনা তৈরি করেছিলেন। এখন বিকশিত ভারতের প্রেরণা বন্দে মাতরম। সে জন্য বিজেপি সরকার নতুন নীতি নিচ্ছে।’’
নদিয়ায় নতুন সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থা উন্নত করবে বলে জানান মোদী। তিনি বলেন, ‘‘এখানকার মানুষ অনেক দিন বঞ্চিত ছিলেন। এই সড়ক তৈরি হওয়ায় নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনার মানুষজনের লাভ হবে। কলকাতা থেকে শিলিগুড়িতে পৌঁছোতে আগের থেকে দু’ঘণ্টা কম সময় লাগবে। এতে অর্থনীতির উন্নয়ন হবে।’’ তার পরেই তিনি বলেন, ‘‘নদিয়া সেই ভূমি, যেখানে প্রেম, করুণা, ভক্তির রূপ হিসাবে চৈতন্যদেবের জন্ম হয়েছে। নদিয়ার গ্রামে গ্রামে কীর্তনের সুর উঠত, ঐক্যের সুর বাজত।’’ এর পরে বাংলায় তিনি বলেন, ‘‘হরিনাম দিয়ে জগৎ মাতায় আমার একলা নিতাই।’’ তিনি জানান, সেই ভাবনা এখনও রয়েছে এই ভূমিতে। চৈতন্যের বাণী এখানে জীবিত রয়েছে আজও। তাঁর কথায়, ‘‘ সমাজকল্যাণের এই নৌকাকে মতুয়ারা আগে নিয়ে গিয়েছেন। হরিচাঁদ ঠাকুর কর্মের মর্ম বুঝিয়েছেন। গুরুচাঁদ ঠাকুর কলম ধরিয়েছেন। বড়মা মাতৃত্ব বর্ষণ করেছেন। সকলকে প্রণাম। ’’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘জয় নিতাই, বড়রা প্রণাম নেবেন। সকলকে শুভেচ্ছা। ক্ষমাপ্রার্থী, আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে আপনাদের কাছে পৌঁছোতে পারিনি। কুয়াশার কারণে সেখানে কপ্টার নামার পরিস্থিতি ছিল না। তাই টেলিফোনে আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি।’’ তিনি আরও জানান, খারাপ আবহাওয়ার কারণে দুর্ঘটনা হয়েছে। ট্রেনে কাটা পড়ে বিজেপি কর্মীদের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেন তিনি। তিনি আরও জানান, মৃতদের পরিবারের পাশে রয়েছেন তিনি।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য জানালেন, কুয়াশার কারণে প্রধানমন্ত্রীর চপার তাহেরপুরে অবতরণ করতে পারেনি। এখন তিনি ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা করবেন।
রিমোটের মাধ্যমে সড়ক উদ্বোধন করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের কৃষ্ণনগর থেকে বড়জাগুলি পর্যন্ত প্রায় ৬৮ কিলোমিটার অংশকে চার লেন করে তোলার কাজ শেষ হয়েছে। সেই সড়কের উদ্বোধন করা হল।
ভিআইপি গেট টপকে সভাস্থলে প্রবেশের চেষ্টা।
ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুরু মোদীর বক্তৃতা। কিন্তু কয়েক মিনিট পরেই থামানো হল বক্তৃতা। মাঝে বেজে উঠল বিজ্ঞাপন।
শমীক ভট্টাচার্য ভাষণ দিচ্ছেন। তাঁর ভাষণ শেষ হলেই প্রধানমন্ত্রী বলা শুরু করবেন। মঙ্গল পাণ্ডে কয়েক মিনিট আগে শমীকের কানে কানে বলে গেলেন আর কিছুক্ষণ ভাষণ চালিয়ে যেতে। বিমানবন্দরে মোদীর ভার্চুয়াল সভার জন্য ব্যবস্থাপনা তৈরি হচ্ছে।
দমদম বিমানবন্দরের লাউঞ্জে বসে ভার্চুয়াল মাধ্যমে তাহেরপুরে সভা করবেন মোদী। কলকাতা বিমানবন্দরের ভিআইপি গেট দিয়ে পোডিয়াম এবং ডায়াস নিয়ে যাওয়া হয়েছে ভিতরে।
চাকদহে জাতীয় সড়কে ‘গো ব্যাক মোদী’ প্ল্যাকার্ড দেখা গেল। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের তরফে এই পোস্টার দেওয়া হয়েছে। যদিও এর সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই বলে দাবি তৃণমূলের।
জাতীয় সড়কে সেই প্ল্যাকার্ড। — নিজস্ব চিত্র।
ঘন কুয়াশার কারণে তাহেরপুরে নামতে পারল না মোদীর কপ্টার। পিটিআই জানিয়েছে, তাঁর কপ্টার ফিরে এসেছে দমদম বিমানবন্দরে। মনে করা হচ্ছে, সড়কপথে তাহেরপুরে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
মোদী সভাস্থলে পৌঁছোনোর আগেই বিশৃঙ্খলা দেখা দিল। চেয়ার ছোড়াছুড়ি করতে দেখা গেল কর্মী-সমর্থকদের একাংশকে। মঞ্চ থেকে সকলকে বসতে অনুরোধ করা হয়।
তাহেরপুরের সভাস্থলে বিশৃঙ্খলা। — নিজস্ব চিত্র।
সূত্রের খবর, তাহেরপুরের আকাশে দেখা গিয়েছে মোদীর কপ্টার।
সুকান্তের কটাক্ষ, চাকরি চুরি হয়েছে রাজ্যে। নেতাদের জেলে যেতে হবে। ব্যবস্থা করবেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘মোদী সরকার বিকশিত ভারত করার দিকে অগ্রসর হচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গ বিকশিত না হলে ভারত বিকশিত হবে না। ২০২৬ সালে সেই পশ্চিমবঙ্গ তৈরির চেষ্টা করছি। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করব।’’
সভায় বক্তৃতা করছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ২ কোটি লোককে চাকরি দিয়েছেন। আপনাদের পরিচিত কেউ চাকরি পেয়েছে? চাকরি পেয়েছে তৃণমূলের লোকজন। চুরি করে চাকরি পেয়েছে।’’
কলকাতা থেকে হেলিকপ্টারে চেপে তাহেরপুরের উদ্দেশে রওনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী।