Mamata Banerjee SIR

‘মুখ্যমন্ত্রী’ মমতার এনুমারেশন ফর্ম না-ভরলেও চলবে, বলছে নির্বাচন কমিশনের নিয়ম! আর কার কার জন্য এই বিশেষ বিধি

গত বুধবার ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনে গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম দিয়ে এসেছেন বিএলও। কিন্তু মমতা জানান, বাংলার প্রতিটি মানুষ যত ক্ষণ না ফর্ম পূরণ করছেন, তত ক্ষণ তিনিও করবেন না।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৫ ১৭:৫৬
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবর এসআইআর-এর বিরুদ্ধে সরব।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবর এসআইআর-এর বিরুদ্ধে সরব। —ফাইল চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) এনুমারেশন ফর্ম যদি পূরণ না-ও করেন, সমস্যা নেই। তাঁর ওই ফর্ম পূরণের কোনও প্রয়োজনীতাই নেই! অন্তত নির্বাচন কমিশনের নিয়ম তা-ই বলছে।

Advertisement

গত বুধবার ভবানীপুরে ৩০বি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে এনুমারেশন ফর্ম নিয়ে গিয়েছিলেন বুথ স্তরের আধিকারিক (বিএলও)। সঙ্গে ছিলেন বিএলও সুপারভাইজ়ারও। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নিজে জানান, তিনি কোনও ফর্ম পূরণ করেননি। বাংলার প্রতিটি মানুষ যত ক্ষণ না এসআইআর-এর এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করছেন, তত ক্ষণ তিনিও করবেন না। বাস্তবে মমতার ক্ষেত্রে এই ফর্ম পূরণের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। তিনি যদি মনে করেন, ফর্মটি জমা না-ও দিতে পারেন। তাতে কোনও সমস্যা হবে না।

কী বলছে কমিশনের নিয়ম

নির্বাচন কমিশনের বিধি অনুযায়ী, মমতা ‘চিহ্নিত ভোটার’ বা ‘মার্কড ইলেক্টর’। ফলে আগে থেকেই তাঁর নাম ভোটার তালিকায় নথিভুক্ত হয়ে রয়েছে। শুধু মমতা নন, দেশের প্রধানমন্ত্রী, সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং ওজনদার নেতা-মন্ত্রীরা এই তালিকায় থাকেন। তাঁদের সম্পর্কে আলাদা করে তথ্য রেখে দেওয়া হয়। কমিশনের এক আধিকারিক জানান, স্বয়ংক্রিয় ভাবেই প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীদের নাম কমিশনের ভোটার তালিকায় নথিভুক্ত হয়। তার জন্য আলাদা করে এনুমারেশন ফর্ম পূরণের দরকার পড়ে না। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীও এই সুবিধা পাবেন।

কমিশন সূত্রে খবর, বুধবার মোট ৪০টি ফর্ম মমতার বাড়িতে দেওয়া হয়েছে। তাঁর পরিবারের সদস্যসংখ্যা, কত জন ভোটার ওই বাড়িতে থাকেন, তা জেনে নিয়ে ফর্ম দিয়েছেন বিএলও। ওই সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন জয়দীপ জানা নামের এক আধিকারিক। স্বাক্ষর করে এনুমারেশন ফর্মগুলি তিনিই গ্রহণ করেন। এ ছাড়া, সে সময়ে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাই অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়। কী ভাবে এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করতে হবে, সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধির কাছ থেকে তা অমিত নিজে বুঝে নিয়েছেন বলে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী নিজে ভবানীপুর বিধানসভার কেন্দ্রের ভোটার এবং ওই কেন্দ্রের বিধায়ক। ৭৭ নম্বর বুথে তাঁর নাম থাকার কথা। যে বুথের ভোটকেন্দ্র হরিশ পার্কের পাশে মিত্র ইনস্টিটিউশন স্কুলে। মমতা বরাবরই ওই বুথে ভোট দিতে যান। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে যে এসআইআর প্রক্রিয়া চালু হয়েছে, মমতা প্রথম থেকে তার বিরুদ্ধে। দাবি, এটা আসলে রাজ্যে ‘এনআরসি চালু করার কৌশল’। গত মঙ্গলবার মমতার নেতৃত্বে ‘এসআইআর আতঙ্কের’ প্রতিবাদে রেড রোড থেকে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত ‘মহামিছিল’ করেছে তৃণমূল। বিজেপির অবশ্য দাবি, কোনও বৈধ ভোটারের নাম এসআইআর প্রক্রিয়ায় বাদ যাবে না। কেবল অনুপ্রবেশকারী এবং মৃত ভোটারদের নাম বাতিল করা হবে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অযথা এ নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করার অভিযোগ তুলেছে তারা।

Advertisement
আরও পড়ুন