— প্রতীকী চিত্র।
সহমতে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেছিলেন দম্পতি। শুনানি শুরু হতে ঘটনা মোড় নিল অন্য দিকে। জানা গেল, বিয়েই বেআইনি। কারণ, বিয়ের সময়ে পাত্রী ছিলেন নাবালিকা। শেষে ওই স্বামী, তাঁর পরিজন এবং স্ত্রীর পরিবারের বিরুদ্ধে বাল্যবিবাহ আইন এবং ‘পকসো’ আইনে মামলা রুজুর নির্দেশ দিয়েছেন কাঁথি মহকুমা আদালতের অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট অ্যান্ড সেশন জজ অজয়েন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য।
গত ২৪ জানুয়ারি ওই বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা নথিভুক্ত হয়। মঙ্গলবার ছিল শুনানি। নথিপত্র যাচাইয়ের সময় বিচারক খেয়াল করেন, বিয়ের সময় কনের বয়স ছিল ১৬। বুধবার ওই মহিলার স্বামী, বাপের বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে বাল্যবিবাহ এবং ‘পকসো’ আইনে মামলা রুজুর নির্দেশ দেন তিনি।
সূত্রের খবর, স্বামী-স্ত্রী—দু’জনের পরিবারই পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা। মেয়েটির জন্ম ১৯৯৭ সালের ১০ জুলাই। প্রতিবেশী গ্রামের যুবকের সঙ্গে সম্বন্ধ করে ২০১৩ সালের ১ মে বিয়ে হয় তাঁর। দম্পতির ন’বছরের ছেলে রয়েছে। সম্পর্কে টানাপড়েনের জেরে ২০২১-এর সেপ্টেম্বর থেকে আলাদা থাকছিলেন দু’জনে। শেষে সহমতের ভিত্তিতে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেন তাঁরা।
অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ ওই মহিলার দাবি, ‘‘বাল্যবিবাহ আইন সম্পর্কে জানা ছিল না। বাড়ির আর্থিক অবস্থাও ভাল ছিল না। তাই বিয়ে হয়ে যায়।’’ তাঁর স্বামীও বলছেন, ‘‘ওই আইন সম্পর্কে জানতাম না। জেনেশুনে কি কেউ ভুল করে!’’
জেলা শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান প্রাণকৃষ্ণ দাস মানছেন, ‘‘১৮ বছরের নীচেঅনেক মেয়েরই বিয়ে হচ্ছে। প্রত্যন্ত এলাকায় সচেতনতার অভাব এবং আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির কারণেই এই ঘটনা ঘটছে।’’ কাঁথি মহকুমা আদালতের ফৌজদারি বার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সম্পাদক আনন্দ দাসের কথায়, ‘‘বাল্যবিবাহের অভিশাপ মুক্তির ক্ষেত্রে আদালতের এই নির্দেশ নজির হয়ে থাকবে।’’