সেজে উঠেছে রানাঘাট বেগোপাড়া ক্যাথলিক গির্জা।বুধবার। ছবি: সুদেব দাস।
বছরের শেষ প্রহরে ফিরে আসার আনন্দ। দূরদেশ থেকে বাড়ির পথে ফেরা। আলো, প্রার্থনা আর মিলনের আবেশে নতুন দিনের শুরু। বড়দিন মানেই শুধু উৎসব নয়—এ যেন ঘরে ফেরার দিন। আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর। খ্রিস্টান অধ্যুষিত রানাঘাট ও কল্যাণীর গির্জায়া আগের দিন থেকেই ছড়িয়ে পড়েছে উৎসবের উষ্ণতা।
রানাঘাটের বেগোপাড়া, মণ্ডল পুকুর, এন্টনি পাড়া—এলাকাজুড়ে বড়দিনের সাজ। আট মাস, কেউ আবার বছর দু'য়েক পর কর্মসূত্রে বিদেশ থেকে ফিরেছেন বাড়িতে। তাঁদের ঘিরেই যেন এই উৎসবের বাড়তি রঙ। রানাঘাট শহরের জাতীয় সড়কের পাশে থাকা সেন্ট লুক ও ক্যাথলিক গির্জা—দু’টিতেই এ দিন সকাল থেকে ভিড় জমে। এ বছর রেকর্ড ভিড়ের সম্ভাবনা থাকায় গির্জা চত্বরে ও জাতীয় সড়কে বাড়ানো হয়েছে পুলিশি নিরাপত্তা।
রানাঘাট-২ ব্লকের বৈদ্যপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গির্জার পাশে বসছে বড়দিনের মেলা। স্থানীয়দের পাশাপাশি রানাঘাট শহর ও কুপার্স সংলগ্ন এলাকা থেকেও মানুষ ভিড় জমান এই মেলায়। জানা গিয়েছে, মূলত জাতীয় সড়কের সার্ভিস রোড ব্যবহার করা হচ্ছে। গির্জার সীমানার মধ্যে বসানো হয়েছে নজর ক্যামেরাও। বুধবার বিকেলের দিকে গোশালা দেখতে ভিড় জমায় শিশুরা। কেউ রঙিন ফুলের সাজে, কেউ আবার বন্ধুদের সঙ্গে ছবি তুলতে ব্যস্ত—ফ্রেমে বন্দি হচ্ছে বড়দিনের মুহূর্ত।
রানাঘাটের বেগোপাড়া এলাকার অধিকাংশ পরিবারে বাড়ির কর্তারাই কর্মসূত্রে ভিন্ দেশে থাকেন। বড়দিনেই তাঁরা ছুটিতে বাড়ি ফেরেন। তাই এই উৎসব তাঁদের কাছে আবেগের সঙ্গে জড়ানো। সুজয় বিশ্বাস বলেন, “প্রায় এক বছর পরে বাড়ি ফিরেছি। বড়দিন আমাদের কাছে আলাদা তাৎপর্যপূর্ণ। দেশের বাইরে থাকলেও এই দিনের জন্যই গোটা বছর অপেক্ষা করি।”
রানাঘাটের পাশাপাশি কল্যাণীতেও একই ছবি। কল্যাণীর সগুনা পঞ্চায়েতের রঘুনাথপুর ক্যাথলিক গির্জায় বুধবার রাত সাড়ে দশটায় শুরু হয় বড়দিনের উপাসনা। বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে বেলা তিনটে থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত গির্জা সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে। গির্জার ফাদার উজ্জ্বল মণ্ডল বলেন, “বড়দিন শান্তি, ভালবাসা ও মানবতার বার্তা দেয়। আজকের দিনে আমরা প্রার্থনা করি—সমাজে যেন হিংসা নয়, ভালবাসাই জয়ী হয়।”