নরেন্দ্র মোদীর সভায় সেই ‘বিতর্কিত’ পোস্টার। — নিজস্ব চিত্র।
ফোনের ও পারে তখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাহেরপুরের জনসভার মঞ্চ থেকে তাঁর সেই বক্তৃতা শোনানো হচ্ছিল। সে সময় হঠাই দর্শকাসনে থেকে তোলা এক পোস্টারে চোখ আটকায় সকলের। লেখা, ‘উই ওয়ান্ট ইস্টবেঙ্গল’, অর্থাৎ, ‘আমরা পূর্ববঙ্গ চাই’! বাংলাদেশে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক, প্রয়াত ছাত্রনেতা ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি মধ্যেই এ পার বাংলায় মোদীর জনসভায় ‘পূর্ববঙ্গ’ পোস্টার নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশের নাগরিকদের একাংশের মধ্যে ভারতবিরোধী মনোভাব নিয়ে আলোচনা চলছে। বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাসে হামলার ঘটনার পর আরও সতর্ক নয়াদিল্লি। সেই পরিস্থিতিতে সীমান্তবর্তী জেলা নদিয়ার তাহেরপুরে মোদীর সভায় পোস্টার বিতর্ক।
তাহেরপুরের সভায় পৌঁছোতে পারেননি মোদী। তবে কলকাতা বিমানবন্দরে বসে ফোনে তাহেরপুরের জনসভা সারেন তিনি। আর তাঁর কথা শুনতে সকাল থেকে অপেক্ষা করছিলেন বিজেপির অনেক কর্মী সমর্থক। তাঁদের কয়েক জনের হাতে ওই ‘বিতর্কিত’ পোস্টার নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে রাজনৈতিক মহলে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, সভায় থাকা কোনও কোনও বিজেপি নেতা ওই পোস্টার সরাতে উদ্যোগী হননি। বরং, দলের সমাজমাধ্যমের পাতায় সেই ছবি আপলোডও করা হয়।
রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল প্রথম থেকেই বাংলাদেশের বিষয়ে অত্যন্ত সংযত অবস্থান নিয়েছে। আন্তর্জাতিক বিষয় হওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের উপর আস্থা রাখার কথা জানিয়েছে। তবে সেই আবহে মোদীর সভায় এই ধরনের পোস্টার নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তৃণমূলের অভিযোগ, বাংলাদেশের পরিস্থিতির সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের তুলনা টেনে রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করছে বিজেপি। রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশীষ গঙ্গোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বিজেপি চাইছে যে কোনও মূল্যে উস্কানি ছড়াতে। প্ররোচনা তৈরি করে অস্থিরতার ঘোলা জলে উদ্বাস্তু মানুষদের ডুবিয়ে মারতে চাইছে তারা। সেই কারণে এ সব পোস্টটার নিয়ে কর্মীদের সভায় যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে।’’