হুমায়ুন কবীরের বাবরি মসজিদের জন্য অনুদানের টাকা গোনা চলছে যন্ত্রের সাহায্যে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় হুমায়ুন কবীরের প্রস্তাবিত বাবরি মসজিদের জন্য অনুদানের বাক্স প্রায় ভরে গিয়েছে। মোট ১১টি দানবাক্স বসিয়েছিলেন হুমায়ুন। সেগুলিতে বহু মানুষ নগদ টাকা দিয়েছেন। এ ছাড়া অনলাইন মাধ্যমেও মসজিদ নির্মাণের জন্য অনেকে টাকা দিয়েছেন। দানবাক্সের টাকা গোনার জন্য রবিবার রাতে নিয়ে আসা হয়েছে বিশেষ যন্ত্র। এখনও পর্যন্ত চারটি বাক্সের টাকা গোনা হয়েছে বলে খবর।
ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুনকে সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল। গত ৬ ডিসেম্বর বেলডাঙায় তিনি বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করেন। সেই সভাস্থলে বহু মানুষের সমাগম হয়েছিল। হুমায়ুন প্রায় ৪০ হাজার জনকে শাহি বিরিয়ানি খাওয়ানোর এলাহি আয়োজন করেছিলেন। সে দিনই স্টেনলেস স্টিলের তৈরি ১১টি বড় দানবাক্স রাখা হয় সভাস্থলে। মসজিদ নির্মাণের জন্য ভক্তদের কাছে অর্থ সাহায্যের আবেদন করেন হুমায়ুন। তার পর থেকে অনুদান এসেই চলেছে। হুমায়ুনের দাবি, মুক্তহস্তে ভক্তেরা দান করছেন। অনুদানের পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
রবিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে দানবাক্সের নগদ গণনার কাজ শুরু হয়েছিল। চলেছে রাত ১২টা পর্যন্ত। চারটি বাক্স এবং একটি বস্তা থেকে শুধু নগদে মিলেছে ৩৭ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা। এ ছাড়া, অনলাইন মাধ্যমে কিউআর কোড স্ক্যান করে অনেকে অনুদান দিয়েছেন। সেখানে এখনও পর্যন্ত এসেছে ৯৩ লক্ষ টাকা। বাকি সাতটি দানবাক্সের গণনা শুরু হবে সোমবার বিকেল ৫টা থেকে। রবিবার যে ৩০ জন গণনার কাজ করছিলেন, তাঁরাই সোমবারও এই কাজ করবেন। স্বচ্ছতা বজায় রাখতে টাকা গোনার প্রক্রিয়ার সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থাও করা হয়েছিল।
হুমায়ুনের ঘনিষ্ঠমহলের দাবি, অনুদানের অঙ্ক প্রত্যাশা ছাপিয়ে গিয়েছে। এমনকি, বিদেশ থেকেও অনুদান এসেছে। এই অর্থ সংরক্ষণের জন্য একটি পৃথক ঘরের ব্যবস্থা করতে হবে। তাতে সিসি ক্যামেরা এবং নিরাপত্তার অন্যান্য ব্যবস্থা থাকবে। প্রয়োজনে আরও কয়েক জনকে টাকা গোনার কাজে নিযুক্ত করা হতে পারে। এ বিষয়ে ব্যাঙ্কের সঙ্গেও আলোচনা চলছে।
৬ ডিসেম্বর অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের ধ্বংসের দিনই মুর্শিদাবাদে মসজিদ নির্মাণের শিলান্যাস করবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন হুমায়ুন। এই ঘোষণার পর থেকে তৃণমূল তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখছিল। কিছু দিন আগে পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) বিরুদ্ধে সভা করতে মুর্শিদাবাদে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বহরমপুরের সেই সভাস্থলে হাজির হন হুমায়ুনও। কিন্তু সে দিনই জানিয়ে দেওয়া হয়, হুমায়ুনকে দল সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ক্ষুব্ধ হুমায়ুন সভাস্থল থেকে বেরিয়ে যান এবং ২২ ডিসেম্বর নতুন দল গড়ার হুঁশিয়ারি দেন। জানিয়ে দেন, বেলডাঙায় মসজিদ তিনি তৈরি করবেনই। তাঁর নতুন দল রাজ্যের ১৩৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করবে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে।