আগামী ৯ ডিসেম্বর কোচবিহার সফর রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। —ফাইল চিত্র।
পুত্রের খুনের বিচার চাইতে মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে চান তৃণমূলেরই এক নেত্রী। তাঁর এবং স্বামীর অভিযোগ, দলেরই একাংশ তাঁদের পুত্রের খুনে অভিযুক্ত। কিন্তু পুলিশ পদক্ষেপ করছে না। মুখ্যমন্ত্রীর কোচবিহার সফরের আগে এই অভিযোগ ঘিরে শোরগোল শাসকদলের জেলা নেতৃত্বের মধ্যে।
গত ৯ অগস্ট কোচবিহারের ডোডেয়ারহাটে ভরা বাজারে দুষ্কৃতীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হন সঞ্জীব রায় ওরফে অমর রায়। পুন্ডিবাড়ি থানার ডোডেয়ার হাটে কোচবিহার ১-ব্লকের যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি ছিলেন তিনি। তাঁর মা কুন্তলা রায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যা। বাবা মহিম রায় পেশায় ব্যবসায়ী। দুষ্কৃতীদের গুলিতে জখম হন অমরের গাড়ির চালক। খুনের তদন্তে নেমে দফায় দফায় মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কিন্তু তৃণমূল নেত্রী এবং তাঁর স্বামীর দাবি, অমরের খুনে জড়িত শাসকদলেরই কয়েক জন নেতা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ স্বয়ং! ওই দম্পতি গত ২১ নভেম্বর পুন্ডিবাড়ি থানায় এবং জেলা পুলিশ সুপারের কাছে রবীন্দ্রনাথ-সহ আইএনটিটিইউসি-র প্রাক্তন জেলা সভাপতি পরিমল বর্মণ, আজিজুল হকের মতো দলীয় নেতাদের নামে অভিযোগ করেন। অভিযোগপত্রে লেখা হয়, ‘‘আমার ছেলে অমর রায়কে বিভিন্ন সময় প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, পরিমল বর্মণ এবং আজিজুল হকেরা।’’ শুধু তা-ই নয়, পুলিশ সুপারকে পাঠানো অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয় পুন্ডিবাড়ি থানার বর্তমান ওসি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের পুত্রবধূ। তাই তাঁরা তদন্ত প্রভাবিত করছেন। সংশ্লিষ্ট মামলাটি অন্য থানায় স্থানান্তরের আবেদন করা হয়।
আগামী ৯ ডিসেম্বর কোচবিহারের রাসমেলা ময়দানে জনসভা করবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা। শুক্রবার মৃত অমরের বাবা মহিম বলেন, ‘‘আমি অথবা আমার স্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই। তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের কাছে আবেদন করছি, আমাদের যাতে কিছু ক্ষণের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়। ওঁকে আমরা সমস্ত বিষয় জানাতে চাই।’’
এমন অভিযোগ এবং আবেদন নিয়ে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব এখনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘এটা একটা সাজানো ঘটনা। আমাকে হেনস্থা করার নানা রকম চক্রান্ত চলছে। এ-ও তারই অংশ। সুতরাং বিষয়টিতে আমি কোন গুরুত্ব দিতেই চাইছি না।’’
অন্য দিকে, শুক্রবারই তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষে উত্তপ্ত মাথাভাঙা-১ নম্বর ব্লকের বৈরাগীর হাট গ্রামপঞ্চায়েত এলাকা। ঘটনায় বেশ কয়েক জন তৃণমূল কর্মী আহত হয়েছেন বলে খবর। তৃণমূলের অভিযোগ, আগামী ৯ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর সভা সফল করার জন্য মিছিল বার করেছিল তারা। সেখানে অতর্কিত হামলা করেছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে পদ্মশিবির।