প্রশাসনিক ভবনের সামনে স্বারকলিপি হাতে গাড়িচালক সংগঠনের সদস্যেরা। —নিজস্ব ছবি।
বড়দিনের আগে পাহাড়ে ভ্রমণে এলে সমস্যায় পড়তে পারেন পর্যটকেরা! কারণ? এ বার পাহাড় থেকে আসা কোনও ভাড়াগাড়িকে সমতলের রাস্তা পার করতে দেবেন না বলে হুঙ্কার দিলেন সমতলের গাড়িচালকেরা। সোমবার এই মর্মে প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে সমাধানের রাস্তা খুঁজছে প্রশাসন।
পাহাড় এবং সমতলের ভাড়়াগাড়ির চালকদের মধ্যে সমস্যা লেগেই থাকে। পাহাড়ে গিয়ে সমতলের গাড়িচালকেরা পর্যটকদের ‘সাইট সিন’ করাতে পারেন না। অথচ পাহাড় বেড়াতে গিয়ে সেখানকার গাড়ি ভাড়া করে সমতলে আসেন পর্যটকেরা। দীর্ঘ দিন ধরে এই অভিযোগ জানিয়ে আসছেন সমগ্র তরাই এবং ডুয়ার্সের গাড়িচালকেরা। সোমবার প্রশাসনকে সমতলের সাত-আটটি গাড়ি সংগঠন জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই সমস্যার সমাধান না হলে তারা পাহাড় থেকে আসা প্রতিটি গাড়ি আটকে দেবে। শিলিগুড়ি থেকে এনজিপি এবং বাগডোগরা বিমানবন্দর এলাকার চারচাকার গাড়ি ভাড়া খাটান, এমন সমস্ত চালক রয়েছেন অভিযোগকারীদের তালিকায়। দার্জিলিঙের জেলাশাসক থেকে শিলিগুড়ির মহকুমা শাসক, পুলিশ সুপার থেকে জিটিএ প্রধানকে স্মারকলিপি দিয়েছেন তাঁরা।
সমীর পাণ্ডে নামে সমতলের এক গাড়িচালকের কথায়, ‘‘আমরা তো এ বার না খেয়ে মরব! ওদের জ্বালাতনে গাড়ি চালানোই দায় হয়ে উঠেছে। প্রশাসন সব জেনেও চুপ করে রয়েছে। এ বার আমরাও ওদের পাল্টা দেব।’’ এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। দেবাশিস মিত্র নামে এক পর্যটন ব্যবসায়ীর অভিযোগ, প্রশাসন আগে থেকেই এই সমস্যার কথা জানত। কিন্তু পদক্ষেপ করতে বিলম্ব করায় জটিলতা বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এই যে পাহাড়ের গাড়ি টাইগার হিল যাচ্ছে না, তা নিয়েও প্রশাসনের ভ্রুক্ষেপ নেই। পাহাড়-সমতল দুটোই পশ্চিমবাংলায়। তার পরেও পাহাড়ের গাড়িচালকেরা সমতলের গাড়ি দেখলেই তেড়ে যান। এ বার একই পন্থা নিচ্ছেন সমতলের গাড়িচালকেরা।’’ তিনিও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘আমাদের (সমতলের) গাড়িচালকদের হেনস্থা করলে ধর্মঘটের রাস্তায় যাব।’’
পাহাড় থেকে প্রতিদিন গড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ গাড়ি সমতলে আসে যাত্রী নিতে। যাত্রীদের অধিকাংশই পর্যটক। ফলে বেড়াতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে চলেছেন তাঁরাই। এখন দেখার প্রশাসনের পদক্ষেপ কী হয়।