গঙ্গাসাগর মেলার সময় বেসরকারি বাসের চাহিদা বাড়ে প্রশাসনে। —ফাইল চিত্র।
আসন্ন গঙ্গাসাগর মেলাকে সামনে রেখে বাসভাড়া এবং পুলিশ কর্তৃক বাস অধিগ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়ে ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী ও পরিবহণসচিব সৌমিত্র মোহনকে চিঠি দিল বেসরকারি বাসমালিকদের সংগঠন। মঙ্গলবার জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় এই জোড়া চিঠি পাঠিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, দেশের কুম্ভমেলার পর বৃহত্তম মেলাটি বসে গঙ্গাসাগরে। প্রতি বছর লাখ লাখ ভক্ত যান। হাওড়া ও শিয়ালদহে নেমে সাগরের উদ্দেশে যাত্রার ক্ষেত্রে বেসরকারি বাসই বহু বছর ধরে প্রধান ভরসা।
সংগঠনের অভিযোগ, ৪ জানুয়ারি থেকে প্রায় ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ এবং নামখানাগামী রুটের বহু বাস পুলিশ তাদের বাহিনীর পরিবহণ নিশ্চিত করতে অধিগ্রহণ করে। এই সময় বাসের মালিকদের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। কারণ, বিভিন্ন রুটের যাত্রী পরিষেবা বন্ধ রেখেই প্রশাসনকে বাস ভাড়ায় দেন বাসমালিকেরা। উপরন্তু, অধিগ্রহণ হওয়া বাসগুলির জন্য পুলিশের দেওয়া পারিশ্রমিক বর্তমান বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে অভিযোগ তাঁদের। বর্তমানে ডিজ়েলের দাম লিটারে ৯৪ টাকা হওয়ার পরও খরচ অনুযায়ী ভাড়া বা ক্ষতিপূরণ বৃদ্ধি করা হয়নি বলেই অভিযোগ সংগঠনের।
বর্তমানে হাওড়া থেকে হারউড পয়েন্ট যেতে বাসের ভাড়া ৬০ টাকা, কচুবেড়িয়া থেকে সাগর মেলাপ্রাঙ্গণে যেতে ৩০ টাকা খরচ হয়। চেমাগুড়ি থেকে সাগরে যেতে ২০ টাকা ভাড়া দিতে হয় পুণ্যার্থীদের। নির্ধারিত এই বাসের ভাড়ার হার অন্তত ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়েছে বাস সিন্ডিকেট। পাশাপাশি পুলিশ কর্তৃক অধিগ্রহণ করা বাসগুলির জন্য প্রতিদিন ডিজ়েল বাদে ২,৫০০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ এবং প্রতিটি কর্মরত বাসশ্রমিককে দৈনিক ৩০০ টাকা খোরাকি দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।
তপন বলেন, “গঙ্গাসাগর মেলা আমাদের কাছে অন্য রকম অনুভূতি। বহু বছর আমরা নিষ্ঠার সঙ্গে পরিষেবা দিয়ে এসেছি, এ বারও দিতে প্রস্তুত। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে ভাড়া ও ক্ষতিপূরণ পুনর্বিবেচনা অত্যন্ত জরুরি।” সংগঠন আশা প্রকাশ করেছে যে, পরিবহণ দফতর দ্রুত পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবে। উল্লেখ্য, গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে আগামী ১৫ ডিসেম্বর নবান্নে এক জরুরি বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।